somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভোটের আগে ফিস করে।

০১ লা মে, ২০১৫ রাত ১১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অজপাড়া এক গাঁয়ে নির্বাচন।
ফুলানা মার্কার অমুক চেয়ারম্যানপ্রার্থীর নির্বাচনী জনসভা।
জনসভার প্রধান আকর্ষণ, সবাইকে কোকাকোলা বিলানো হবে।
গ্রামের মানুষ, এর আগে কোকাকোলা তো দুরের কথা, লেবু শরবতের কথা চিন্তা করাও তাদের জন্য স্বপ্ন। তার উপরে, এরা শুনেছে, এই কালো রংয়ের শরবতটা ফিস করে আওয়াজ করে।
জনসভা শুরু হলো। চেয়ারম্যান সাহেব বক্তৃতা করেন, আর উনার সাঙ্গপাঙ্গরা কোকের বোতল খুলেন। একটা বোতল খুলেন, গেরামের লোকজন চোখ দুইটা গোল গোল করে তাকিয়ে থাকেন।
আজব জিনিস, বোতলের ছিপি খুললেই ফিস ফিস করে উঠে। ফিসসসসসসসসসসসস............................
বোতল হাতে আসলেও অনেকে না খেয়ে হাতে রেখে দিলেন। যাইহোক, এমন আশ্চর্য জিনিস, বাড়ির সবাইকে দেখাতে হবে তো!
চেয়ারম্যান সাহেব বক্তৃতায় বলছেন, ভাইসব, আপনাদের হাতে নিশ্চয় ফিস করা পানি পৌছেছে। এই পানির বহুবিধ গুণ আছে। এটা খুললেই ফিস করে। খেলে ঢেকুর আসে। তখন বড় করে ফিস করে । আপনারা যদি আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন, তাহলে আমি আপনাদের এই ফিস করা পানি খাওয়াবো।
লোকজন তো খুব খুশি, হেভি মোটিভেটেড। এই লোককে ভোট দিতে হবে, আফটার অল , ফিস করা পানি বলে কথা।
যথারীতি নির্বাচন শুরু হলো, চেয়ারম্যান সাহেবের বাক্সে ভোটের বন্যা বয়ে গেলো।
রাতে, নির্বাচনী ফলাফলে চেয়ারম্যান সাহেব ৯৮% শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী।
পরেরদিন ,চেয়ারম্যানের কাচারী ঘরে প্রচুর মানুষের ভীড়। সবার টার্গেট একটা। আজকে ফিস করা পানি খেয়েই যাবে। গতবারে তো আসা হয় নি, শুনেছে নির্বাচনে জিতলে চেয়ারম্যান আবারো সেই ফিস করা পানি খাওয়াবে। আজকে আর মিস দেওয়া যাবে না।
চেয়ারম্যান সাহেব তার বাড়ির এতো গুলো লোকের জন্য আজকে রংচায়ের ব্যবস্থা করেছেন। সবাইকে রং চা খাওয়ানো হবে।
হাতে হাতে, চায়ের কাপ পৌছাইতে, ভীড়ের মধ্যে গুঞ্জন উঠে গেলো। চাপা গুঞ্জন।
কয়েকজন তো খুব ক্ষেপে গেলো।
হট্টগোল হবে এমন অবস্থা।
“ফিস করা পানি দেয় না”
কতবড় বেঈমানী।
চেয়ারম্যান সাহেব হট্টগোলের আওয়াজ শুনে বাড়ি থেকে বের হলেন।
হুংকার দিয়ে উঠলেন, কী হলো, সবাই এভাবে হট্টগোল করছে কেন?
চেয়ারম্যান সাহেবকে দেখে উপস্থিত জনতা ঠান্ডা হলো। চেয়ারম্যান সাহেব এসেছেন। এবার তাদের প্রাপ্য মিলবে।
চেয়ারম্যান সাহেবের আন্তরিকতা দেখে, একজন সাহস করে বললেন, “হুজুর, নির্বাচনের আগে আমাদেরকে ফিস করা পানি খাওয়াবেন কথা দিয়েছেন। কিন্তু আপনার লোকজন আমাদেরকে রংচা খাওয়াচ্ছে। এরা আপনার কথার বাইরে গিয়ে আমাদের সাথে বেঈমানী করছে, আপনার সাথে বেঈমানিী করছে।”
এবার উৎসুক জনতার ভিতর একটা স্বস্তির পরশ বয়ে গেলো। তাদের দাবী তারা চেয়ারম্যানের কাছে পৌছাতে পেরেছে। চেয়ারম্যান সাহেব এবার তাদের প্রাপ্র্য ফিরিয়ে দিবেন।
চেয়ারম্যান সাহেব, জনতার উৎসুক মুখ দেখে আশান্বিত হলেন। উনাকে তখন পায় কে? মনটা এখন উড়ো উড়ো।
চেয়ারম্যান সাহেব বলা শুরু করলেন। “ ভাই সব, আমি আপনাদের কথা দিয়েছিলাম, যদি আমি আপনাদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই তাহলে আপনাদের ফিস করা পানি খাওয়াবো। এই পানি আজ আমি আপনাদের সবা্র হাতে তুলে দিলাম।আপনারা আমাকে সমর্থন দিলে এরকম আমি খাওয়াতে থাকবো “
ভীড়ের মধ্যে একজন বলে উঠলো, “কিন্তু এই পানি তো ফিস করে না?”
চেয়ারম্যান মুচকি হেসে জবাব দিলেন, “বেটা, ভোটের আগে ফিস করে, ভোটের পরে ফিস করে না”
জনতা হাসিমুখে মেনে নিলো। আসলেই তো, ভোটের আগে ফিস করে , ভোটের পরে করে না। আমরা কত বোকা ছিলাম। আল্লাহ আমাদেরকে এরকম চেয়ারম্যান দেওয়ায় আমরা আজকে চালাক হয়ে গেলাম।
আফটার অল ফিস করা পানি বলে কথা, যেটা ভোটের আগে ফিস করে, ভোটের পরে করে না।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×