কাদম্বিনী রায় ও আমি, শৈশবে মোরা একসাথে খেলতাম।
রোজ বেলা ডোবার পরে বাসায় যেত সে; কখনই খানিক আগে যেতে পারত না।
এই নিয়ে কাদম্বিনী প্রায়শই মার খেত,
সৎ মায়ের কাছে; আর শুধু চুপিসারে কাদত ।
একই স্কুলে পড়তাম মোরা।
বছর ঘুরে এলে, সবাই যখন নতুন জামা পড়ে স্কুলে আসত ;
কাদম্বিনীর গায়ে থাকত সেই পুরানো সাদা জামা।
স্কুল ছুটি হলে, আমি আমার মা এর হাত ধরে বাড়ি ফিরতাম,
কিন্তু তার সেই ছোট্ট হাতখানা ধরার কেউ ছিলনা।
জানো, আমাদের স্কুলের মনিকাদি অনেক বড় ডাক্তার হয়েছে আজ।
পাশের বাড়ির নীলাপা আমাদের স্কুলের শিক্ষিকা আজ, কাদম্বিনী কোনটাই হতে চায় নি।
সে শুধু চেয়েছিল তার ছোট্ট হাতখানা দিয়ে তার মা কে ধরে, হেটে হেটে বাড়ি ফিরবে রোজ;
স্কুল ছুটির পর ঝুম বৃষ্টি হলে, একই ছাতার নীচে মা মেয়ের বাড়ি ফেরা,কিংবা প্রখর রোদে-
প্রচন্ড তেষ্টা পেলে, মায়ের কাছে একখানা আইসক্রীম কিনে দেয়ার বায়না ধরবে সে।
কাদম্বিনী রায়ের কোন বায়নাই কখনও ধরা হয় নি।
আমাদের পাড়ার গোপালদা মনিকাদির সাথে ঘর বেধেছে আজ;
কাদম্বিনীর ঘর বাধা হয় নি। সেই ছোট্ট হাতখানি আর কেউ কখনও ধরে নি;
তাই বুঝি কাদম্বিনী রায় বৃষ্টি হতে চেয়েছিল। অনেকগুলো নীল কষ্ট বুকে করে কাদম্বিনী রায়,
বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়বে সমুদ্রের বুকে। সমুদ্রের লোনা স্রোতে কাদম্বিনী রায় বিলীন হয়ে যাবে।
সেই বৃষ্টির প্রহর গুনতে গুনতে কাদম্বিনী রায় কোন একদিন মেঘ হয়ে গিয়েছিল।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩২