দেশে এখন রাইড শেয়ারিং বাহনগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে "উবার" ও "পাঠাও"। "উবার" হলো কার শেয়ারিং রাইড আর "পাঠাও" হলো মোটরবাইক শেয়ারিং রাইড ।
যাই হোক, গত পরশু রাতে বেইলি রোড থেকে উবারে বাসায় ফেরার পথে চালক হিসেবে যাকে পেলাম সে American International University-Bangladesh (AIUB)-তে বিবিএ-তে ৬ষ্ঠ সেমিস্টারে অধ্যয়ন করে। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের গাড়ির মাধ্যমে নিজেই উবারে সার্ভিস দেয়।
অন্যদিকে, গতকাল দুপুরে পাঠাও-তে যার বাইকে গেলাম সে World University of Bangladesh এ ফার্মেসীতে অনার্স করছে। এর পাশাপাশি পাঠাও তে সার্ভিস দেয়।
এ দুটো ঘটনা উল্লেখ করার কারণ হলো, ইদানিংকালের তরুণরা পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে নিজেদেরকে যেভাবে নিয়োজিত করছে সেটি খুবই আশাব্যাঞ্জক। বছর খানেক আগেও পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করাই ছিল ছাত্রদের অন্যতম আয়ের উৎস। আমি নিজেও কলেজ জীবন থেকে নিয়মিত ছাত্র পড়িয়েছিলাম। "পজিট্রন" ইউনিভার্সিটি কোচিং সেন্টারে ক্যামেস্ট্রি ও বায়োলজির উপর বছর দুয়েক ক্লাসও নিয়েছিলাম। পরবর্তীতে জাবির ৩য় বর্ষে পড়া অবস্থাতেই সাংবাদিকতার চাকুরীতে ঢুকে পড়ায় টিউশনি করার ফুরসত আর পাই নি।
এতসব কথার একটাই অর্থ হলো, এখনকার তরুণদের পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার বিভিন্ন উৎস তৈরি হচ্ছে, যেটি আজ থেকে ৫ বছর আগেও হয়তো পর্যাপ্ত ছিল। উপরন্তু, এখন আর কোন কাজই ছোট না, সেটা তরুণরা শুধু মুখেই বলে না, অন্তরেও ধারণ করে। ফলে, প্রচলিত ইগো ঝেড়ে অনেকেই বাড়তি অর্থ আয়ের পথে আসছেন। সেটি যে কেবল বেসিক প্রয়োজন থেকে সেটিও না, বরং কিছুটা বাড়তি উপার্জনের আশাতেও অনেকে ডাবল পরিশ্রম করছেন।
ফলে এসব ব্যাপার নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী যে, দেশের তরুণদের মধ্যে এখন পরিশ্রম করার মানসিকতা গড়ে উঠেছে। পড়ালেখার পাশাপাশি আড্ডা দিয়ে সময় কাটানোর বদলে তারা নিজেদেরকে কাজে নিয়োজিত করছেন। এটি নিঃসন্দেহে একটি দেশ ও একটি জাতির জন্য পজিটিভ সাইন।
আর তাই মন থেকেই বলতে চাই, এ জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। কখনো না।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৪৩