somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মের সত্যতা

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উইলিয়াম জেমস্‌ প্রয়োজনবাদীর বিশিষ্ট্য প্রবক্তা, তার ধর্ম মতের সাথে ক্যাথলিক ধর্মমতের নেতা পোপ প্রয়োজনবাদী ধর্মমতকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিন্দা করেছেন। একথা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, জেমস্‌ ধর্মকে স্রেফ একটি মনস্তাত্ত্বিক ও মানবিক ব্যাপার এবং ঈশ্বরকে একটি সসীম সত্তা বলে হাজির করেছেন। তাঁর মতে, ঈশ্বরবিশ্বাসের বাস্তব পরিণতি সুখকর ও ফলপ্রসূ হলেই সেই বিশ্বাস সত্য, অন্যথায় নয়। প্রাচীন ধর্মসমর্থকদের কাছে একথা উদ্ভট বলে মনে হওয়ারই কথা। কারণ, তাদের মতে নিছক জাগতিক সুখের আশায় মানুষ ধর্মে বা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না; বরং অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, নানারকম দুঃখ-নির্যাতনের মুখেও মানুষ ধর্ম পরিহার করেনি। আসলে মানুষ ধর্মকর্ম করে এজন্য নয় যে, তাতে সে সুখী হবে, বরং এজন্য যে সে ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে এবং সন্তুষ্টিবিধান করতে চায়। অর্থৎ সুখ শান্তি পাওয়া যায় বলেই মানুষ ধার্মিক হয়নি, বরং ধর্মে বিশ্বাস করে বলেই ধার্মিক ব্যক্তি নিজেকে সুখী বলে মনে করে। ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাসই ধর্মের ভিত্তি; আর ঈশ্বরের সন্তুষ্টিবিধানই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের লক্ষ। প্রয়োজনবাদী আদর্শের তাগিদে জেমস্‌ গতানুগতিক এই ধর্মবিশ্বাসের বিরোধীতা করেছেন এবং ঈশ্বরকে প্রয়োজনসিদ্ধির সহায়ক একটি নিছক সসীম সত্তা বলে আখ্যায়িত করেছেন।

বস্তুর যেমন একটি স্থায়ী গুণ বা ধর্ম আছে, ঠিক তেমনি বস্তুসম্পর্কিত অবধারণেরো সেরকম একটি ধর্ম রয়েছে। কার্যকারিতা বা তৃপ্তিজঙ্কতা বড়জোড় সত্যের ভিত্তি সুদৃঢ় করতে পারে, কিন্তু মিথ্যাকে সত্য বা অবাস্তবকে বাস্তব করতে পারে না। ঈশ্বর বিশ্বাস টাও এমনি যে এটার তৃপ্তিজনকতা আছে এই জন্যই যে এটা অনেক মানুষই বিশ্বাস করে। কিন্তু এর বাস্তবতা যে নেই এইটাই সত্য। তাই ঈশ্বর যে নেই এটা শুধু মনের বাসনা দিয়েই এর যথার্থতা দেওয়া যায় না।


সাধারণ পাথরবাটির প্রত্যক্ষণ থেকে হঠাৎ একজন সোনার পাথরবাটির, কিংবা কাঁঠাল ও আমত্ত্বের পৃথক ধরণা থেকে অত্যন্তিক কল্পনাবশে কাঁঠালের আমসত্ত্বের ধারণা করে বসতে পারেন; আর ঐ ব্যক্তির কাছে এসব ধারনা যথেষ্ট তৃপ্তিদায়কও হতে পারে, কিন্তু এই মনস্তাত্ত্বিক আবেদন বা তৃপ্তিজনকতা কি ধরনাগুলোকে বাস্তব সত্যের রুপ দিতে পারবে? কখনো না। আর তাই যদি হয়, তাহলে জেমস যে তৃপ্তিওদায়কতাকে সত্যের মাপকাঠি বলেছেন, তা-ও যথার্থ নয়, হতে পারে না। প্রাচিন গ্রীসের বাগাড়ম্বর প্রিয় সোফিস্টদের ন্যায় জেমস্‌ও সত্যতার স্থায়ী ধর্ম অস্বীকার করেছেন এবং একে ব্যক্তিমনের নিছক ভাবাবেগের রায় বলে ধরে নিয়েছেন
৪টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×