somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসার বন্ধুত্ব-০১

২২ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ৩:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১।
“কিরে নীল, প্রাইভেট পড়তে যাবি না?”
“দেখ, ছুটির আছে আর ৫ দিন, তারপর তো আবার সেই জেল খানাতেই যেতে হবে।একটু এনজয় করতে দে। এতো পড়ে কি হবে?”
“ঠিক আছে, তুই আড্ডা দে, আমি একটা চক্কর দিয়ে আসি।”
আকাশ গেলো পড়তে। ধুর আজকে পোলাপান আস্তে এতো দেরি করতেছে কেনো?কলেজে যাওয়ার আছে আর পাচ দিন। তারপর তো আবার সেই বন্দী জীবন। ইস, কবে যে এই লাইফ শেষ হবে, আর ভার্সিটি লাইফ শুরু হবে।
ওইযে আসছে হাসান, তমাল আর সোহেল।তমাল ওর সাথে একই কলেজে।আর সোহেল ওর স্কুল ফ্রেন্ড।
সোহেলঃ “ওই আসার পথে একটা কাহিনি দেখলাম”।
নীলঃ “কি এমন কাহিনি যে তুই এতো উত্তেজিত?”
সোহেলঃ “আরে তোদের পাশের বাড়ি আছে না যেটা বহুদিন ধরে খালি পড়ে আছে, ওইটাতে দেখলাম নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে।
নীলঃ কি বলিস, এতোদিন ধরে তো খালি পড়ে আছে। হটাত ?
সোহেলঃ তার উপর একটা মেয়েকেও দেখলাম। তোর তো কাহিনি হইয়া গেলো রে।
নীলঃ হ্যা। এমন ভাবে বলতেছিস, যেনো আমার সাথে ডেটিং করতে আসছে।
সোহেলঃ আরে তোরে চিনি না, ঠিকই কিছু একটা করবি।
নীলঃ আচ্ছা, দেখা যাবে পড়ে। চল, পার্কে যাই, বাতাস খেয়ে আসি।
২।
আড্ডা দিয়ে নীল বাড়িতে ফিরছে। বাসায় ঢুকার সময় হঠাত মনে পড়ল পাশের বাড়ির কথা। তাকিয়ে দেখে আসলেই সেখানে নতুন মানুষ দেখা যাচ্ছে। ওর মনে পড়ে গেলো অনেক দিন আগের এক ঘটনার কথা।
তখন ওই বাড়িতে থাকতো এক জজ সাহেব। খুবই রাগি ছিলেন তিনি। ওই বাড়িতে আবার ছিলো এক বিশাল আম গাছ। এক রাতে ওরা কয়েকজন গেলো আম চুরি করতে। মিশন প্রায় শেষ পর্যায়ে। হঠাত জজ সাহেবের হাতে ধরা পড়লো নীল আর সোহেল। সরাসরি ওর বাসায় কম্পলেইন। বাবা ওইদিন কি মারটাই না দিলেন ওকে।
বাসায় ঢুকেই নীলের চিতকার” মা, ভাত দাও।”
মা বল্লোঃ “গোছল করে আয়”
নীলঃ ধুর কলেজে তো আগে লাঞ্চ করি তারপর গোছল করি।
মাঃ এটা তোর কলেজ না। গোছল না করলে খাবার নাই।
নীলঃ ধুর, ওকে, এখনি আসতেছি।
খাবার পর নীলের বোন প্রিয়া এলো স্কুল থেকে।
প্রিয়াঃ কিরে ভাইয়া, পাশের বাসায় মনে হয় নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে।
নীলঃ মনে তো হয়। তাতে তোর এতো খুশির কি আছে?
প্রিয়াঃ খুশির কিছু নাই। কিন্তু বাসাটা অনেকদিন ধরে খালি পড়ে ছিলো তো তাই।
নীলঃ যা ভাগ। রেস্ট নিতে দে।
৩/
বিকালে নীল বাইরে যাবার আগে ছাদে গেলো। হটাত দেখলো পাশের বাসার ছাদে একটি মেয়ে হাটছে।
বাহ বেশ সুন্দর তো।
আড্ডায় যাবার পরই সোহেলের চিতকার “ কিরে তোর আস্তে এতো দেরি হলো কেন? পাশের বাসায় টাংকি মারার ট্রাই করেছিলি নাকি?”
“হ্যা। তোর মাথায় তো এইসব ছাড়া আর কিছু ঘুরে না। কে কার সাথে টাংকি মারে, কার সাথে কার সম্পর্ক ইত্যাদি।“
দোস্ত, শোন, হাসানের অবস্তা কিন্তু বেশ খারাপ।
নীলঃ কেন? কি হইছে?
সোহেলঃ আরে হাসান বহুদিন ধরে একজন কে পছন্দ করে না? কিন্তু বলার সাহস পাচ্ছেনা।
নীলঃ ওকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। একটা মেয়েকে বলতে পারে না পছন্দের কথা, তাহলে কেম্নে হবে?
তমালঃ হ্যা, নিজের যখন হবে, তখন বুঝবা চান্দু।
নীলঃ ঠিক আছে দেখা যাবে। এখন চল, চা খেয়ে আসি।
৪।
সন্ধায় নীল যখন বাড়িতে ঢুকছে, দেখলো পাশের বাড়ির সেই মেয়েটি ওদের বাড়ি থেকে বের হচ্ছে।আরে আজব। এই মেয়ে আজকে আসলো, আর আজকেই ওদের বাসায় কি করে।
কিন্তু বাসায় ঢুকে তো কাউকে তো জিজ্ঞাসাও করা যায় না। মাকে দেখেই বললোঃ “কি মা, টেবিলের উপর চা বিস্কিট রেডি করা, মেহমান এসেছিলো নাকি?”
মাঃ কেনো, মেহমান চাড়া মনে হয় কোনদিন চা পাস না বাড়িতে।
নীলঃ তা না, এমনি বললাম আর কি।
মাঃ কথা রেখে চা খা। কয়েকদিন পড়ে তো চলেই যাবি। বাসা থেকে যা পারিস খেয়ে যা।
রাতের খাবারের আগে প্রিয়া এলো ওর রুমে।
প্রিয়াঃ ভাইয়া খেতে আয়।
নীলঃ ওই, সন্ধায় যেনো কাকে বাসা থেকে বের হতে দেখলাম
প্রিয়াঃ ওর নাম অনীতা। আমাদের পাশের বাসার নতুন ভাড়াটিয়া। আমাদের ক্লাশেই ভর্তি হয়েছে।আর কোনো তথ্য লাগবে?
নীলঃ না মানে আমি তো এমনি জানতে চাইলাম।
প্রিয়াঃ আমি জানিতো, তুমি এমনি জানতে চাইছো। আমিও এমনি বললাম আর কি।
নীলঃ তুই যা আমি আস্তেছি।
৫।
রাতে খাবার পর নীল শুয়ে শুয়ে চিন্তা করছে, ইস, কলেজে যাবার আর আছে, ৪ দিন। কেনো যে ,ছুটি গুলো এতো তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। আবার তিন মাস বাসা, আড্ডা থেকে দূরে থাকতে হবে ভাবলেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। আবার কলেজে যাবার পর যখন দুই দিন ধরে সবার ছুটির বিভিন্ন কাহিনি শুনা হয়, মন এম্নিতেই ভালো হয়ে যায়।না, এখন ঘুমাই, সকাল এ আবার বিরক্তিকর একটা প্রাইভেট পড়তে যাতে হবে। রসায়ন।
(আশা করি চলবে…)
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×