somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরিচিত হোন বাংলাদেশের মনমুগ্ধকর একটি ঝর্ণার সাথেঃ জাদিফাই

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উঁচু পাহাড় আর চার দিকে সবুজের সমারোহ। নির্মল নিস্তব্ধতা। মাঝে পাহাড়ের বুক চিরে স্বচ্ছ পানির ধারা পাথর বেয়ে নিচে নেমে আসছে। ছিটকে পড়া পানির ওপর সূর্যের কিরণ পড়তেই বর্ণিল রঙধনু। চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো দৃশ্য।
বান্দরবানের কেওক্রাডাং পাহাড়ের কাছে জাদিফাই ঝরনার দৃশ্যটি এমনই। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় ঝরনাটি সম্পর্কে লোকজন এখনো তেমন জানতে পারেননি। তবে দুই বছর ধরে ঝরনাটি দেখতে প্রচুর পর্যটক কেওক্রাডাংয়ের পাদদেশে ভিড় করছেন। লোকমুখে এর সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ায় এখন পর্যটকেরা জাদিফাই এলাকায় যাচ্ছেন। জাদিফাই শব্দটির অর্থ জমিন থেকে পড়া পানি। উঁচু পাহাড় বেয়ে জমিন থেকে স্বচ্ছ পানির ধারা নিচে নেমে আসে বলে ওই এলাকার বম সম্প্রদায় এ ঝরনাটির নাম দিয়েছেন জাদিফাই ঝরনা। কেওক্রাডাং পাহাড় থেকে ঝরনাটির দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। এ ছাড়া কেওক্রাডাং এলাকার কান্নানপাড়া থেকেও ঝরনাটিতে যাওয়া যায়।

স্থানীয়রা জানান, কেওক্রাডাং, জংছিয়া ও জাদিফাই এ তিনটি পাহাড়ি ছড়া (ঝিড়ি) একসাথে মিলিত হয়ে জাদিফাই ঝরনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ২০০ ফুট ওপর থেকে কালো পাথর বেয়ে স্বচ্ছ পানির ধারা নিচে নেমে আসছে। ঝরনাটি পরে মিলিত হয়েছে সাংঙ্গু নদীর সাথে।
কেওক্রাডাং এলাকায় গাছ, বেত, বাঁশ দিয়ে ছোট একটি রিসোর্ট তৈরি করেছেন এলাকার বাসিন্দা লালমুন থন লালা। রিসোর্টটিতে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। যারাই কেওক্রাডাং ঘুরতে গেছেন, তারা লালার আতিথেয়তার সুনাম করেন।
লালা বম জানান, পাহাড়ি ঝোপঝাড় কেটে অনেক কষ্টে জাদিফাই যাওয়ার রাস্তাটি তৈরি করা হয়েছে। গত বছর সেখানে বেশ কয়েকজন পর্যটককে নিয়ে যান তিনি। পর্যটকেরা ঝরনা দেখে মুগ্ধ হন। লালা জানান, দূর থেকে আসা পর্যটকেরা শুধু নন, স'ানীয় পাহাড়িরাও ঝরনাটি দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারেন না। তিনি মনে করেন, দেশে এ রকম সুন্দর আর একটি ঝরনাও নেই।
এলাকার পর্যটন ব্যবসায়ী সিয়াম থন বম জানান- শীত, গ্রীষ্ম সব সময়ই পানির ধারা থাকে ঝরনাটিতে। পাহাড়ের নিস-ব্ধতার মাঝে দূর থেকে শোনা যায় ঝরনার কলকল শব্দ। পানির ধারা যখন নিচে পাথরের ওপর পড়ে, সেখানেই দেখা যায় রঙধনু। পর্যটকদের সুবিধার জন্য জাদিফাই ঝরনায় একটি কাঠের ঘর বানানোর খুব ইচ্ছা লালা বমের। শিগগিরই তিনি ঝরনায় যাওয়ার জন্য প্রশস- রাস্তা ও বিশ্রামের জন্য একটি কাঠের ঘর বানাবেন। স্থানীয়রা মনে করছেন, সুযোগ সুবিধা দেয়া হলে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে। এটি হতে পারে বান্দরবানের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।
ঢাকা থেকে সরাসরি বেশ কয়েকটি বাস সার্ভিস (এস আলম, সৌদিয়া, শ্যামলী, ডলফিন, ইউনিক) রয়েছে বান্দরবানে। বান্দরবান শহর থেকে জিপ বা বাস সার্ভিসে রুমাবাজার। সেখান থেকে হেঁটে বা জিপে করে বগা লেক হয়ে কেওক্রাডাং। জাদিফাই যেতে এরপর এক ঘণ্টার হাঁটা পথ। ইচ্ছে করলে রুমাবাজার বা কেওক্রাডাং এলাকা থেকে স্থানীয় গাইডও সাথে নিতে পারেন। জাদিফাই দেখতে গেলে পথে প্রায় ২০০০ ফুট পাহাড়ের চূড়ায় প্রাকৃতিক বগা লেক, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাহাড় কেওক্রাডাং ও সর্বোচ্চ পাহাড় তাজিংডংও দেখা যায়। এর সাথে পাহাড়ি গুহা, ছড়া, ঝরনা আর বর্ণিল সংস্কৃতির পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবনধারাও অবলোকন করা যায়।

লেখকঃ মিনারুল হক, বান্দরবান
সূত্র
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৪৯
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×