একটা ট্যুর প্ল্যান করছিলাম ।বন্ধু জিয়া বিদেশ থেকে ঘুরে আসলে আমরা একটা ট্যুর মারবো। কতজন যে যাবে তার কোন ঠিক নেই। যাকেই বলি, সে-ই যাবে।ওকে কবে যেন ...ঠিক আছে আমি যাবো । শেষ পর্যন্ত মনে হচ্ছিলো পুরো একটা বাস ভর্তি মানুষ যাবো এই ট্যুরে !! কিন্তু সব ট্যুরেই যা হয় আরকি, খেলায় শেষ পর্যন্ত থাকে হাতে গোনা ক’জন ।অফিস থেকে ছুটি নিলাম । ২২ এ মে রাতে বাসে ওঠার পরিকল্পনা করলাম প্ল্যানটা হলো বান্দরবনের সব স্পট নীলগিরি আর বগা লেক ভ্রমণ।এর মাঝে প্ল্যান আছে বান্দরবন শহরে এক রাত থাকা।মাঝে কত কি যে হয় যদি থাকে সাত জন ।সমুদ্র দেখার ইচ্ছায় কে বাধা দিতে পারে তাই হুট করে প্ল্যান কক্সবাজার যাবো। কি ছিল না এই ট্যুরে ! ফান অনলিমিটেড ,প্রায় নিয়ার ডেড এক্সপিরিমিন্ট,হাওয়ার বন্দুক চালান আর কত কি।
ট্যুর প্ল্যান করার পূর্বে যা হয় মানে বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহন ।সবাই যার যার সোর্স থেকে খবর সংগ্রহ করা আরম্ভ করলো।এক বিশেষজ্ঞ মতামত দিলেন বান্দরবানশহর থেকে হেঁটে বগা লেক পর্যন্ত যেতে । শুনেই মনটা চাইছিল অই হালারে মঙ্গল গ্রহে ছেড়ে দিয়া বলি ভাইজান হাইটা হাইটা পৃথিবীতে আসেন ।ভাই আমি সেমি ফারমের মুরগি কিসিমের মানুষ ।ট্যুরে যাচ্ছি রিল্যাক্স করতে একটু কষ্ট না হয় সহ্য করা যায় তাই বলে !!!!আরেক বিশেষজ্ঞ মতামত দিলেন বগা লেক পর্যন্ত দুনিয়ার কোন গাড়ি যেতে পারবে না সাথে বান্দরবন জোক এই বর্ষায় কি ভয়ানক হতে পারে তার বর্ণনা দিল । এ তো ছিল বাইরেই বিশেষজ্ঞ ।আমাদের লোকাল বিশেষজ্ঞ মানে এক বন্ধু তার -বর্ষায় বান্দরবান ভ্রমণের সময় পাহাড়ি ঢলের মধ্য কিভাবে তার জানটা দুই হাতের মুঠোয় করে ঢাকা এসেছিল তার বর্ণনা দিতে ব্যাস্ত ।অবশ্য আমার এর আগে দুই বার বান্দরবন ভ্রমনের অভিজ্ঞতা আছে কিন্তু তা শহরেই । তাই বিকল্প পরিকল্পনা করতে থাকলাম একের পর এক ।মানে যেখানেই বন থাকবে সেখানে ভ্রমন ।মানে সুন্দরবন ,বান্দরবন, রাতারগুল বন লিস্ট টা বড় হতে থাকলো তাই সব বাদ দিয়ে আবার প্ল্যান করলাম বান্দরবন বগা লেক ভ্রমন।
ট্যুরের প্ল্যানিং করার পর টিকিট কাটার দায়িত্ব দাওয়া হল এমন একজন কে যে প্রতিবার যাবার প্ল্যানিং করার পর গায়েব হয়ে যায়।সে কাটল টিকিট -রাতে ১১.৩০এর বাস ।আলহামদুলিল্লাহ।সব ঠিকঠাক চলছিল এমন সময় ই ঘটনাটা ঘটলো । না খারাপ কিছু না মানে আরো এক বন্ধু চিটাগাং এ আছে সে আগেই বান্দরবন চলে যাবে পরে আমাদের সাথে জয়েন করবে ।
হানিফ ,ঈগল ,এস, আলম ,শ্যামলী সৌদিয়া , সেন্টমারটিন সার্ভিস (এসি)ঢাকা থেকে বান্দরবনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ভাড়া নন এসি ৬৫০ এসি ৮৫০ ।
রাতে বাসে উঠলাম ।মাঝের এক খাবার বিরতি কুমিল্লাতে তারপর আমরা যখন বান্দরবন পৌছলাম, তখন সকাল ৮.৩০।প্রথমেই আমাদের বান্দরবন প্রতিনিধিকে ফোন সে আমাদের তার হোটেলে নিয়ে গেল ।সবাই ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে প্রথমেই ম্যালেরিয়ার ঔষধ খেয়ে নিলাম।আফটার আল মশা আর ঘুসা কক্ষনো খাওয়া ঠিক না । হুড খোলা জিপ ভাড়া করলাম ৩৫০০ টাকা থেকে নামতে নামতে ২০০০তে ।রুমা বাজার পর্যন্ত ।রুমা বাজার থেকে আবার গাড়ি নিতে হবে ।যা হতে হবে ফোর হুইলার কারন খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠতে নামতে হবে।
চলবে