somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"যশোর"

১৩ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




একের পর এক কল করে যাচ্ছে অভ্র কিন্তু হামজা রিসিভ করছে না! হামজা ম্যাসেজে জানিয়ে দিল সে ক্লাসে আছে। তারপরও অভ্রের লাগাতার কল!
"এক্সকিউজ মি ম্যাম, একটু বাইরে যেতে পারবো?"
অনুমতি পেয়ে ক্লাসের বাইরে গিয়ে কল ব্যাক দিল সে। অভ্রকে কিছু বলতে না দিয়েই হামজা বলা শুরু করল, "আরে ভাই বললাম না আমি ক্লাসে আছি তাও একেরপর এক কল দিয়েই যাচ্ছেন!" অভ্র ধমক দিয়ে বলল, "একদিন ক্লাস না করলে কোন আইনস্টাইন হয়ে যাবি তুই?"
"আপনার প্রেমের চক্করে আমার এই সেমিস্টারে ৫০% অনুপস্থিতি হয়ে গেছে, আজই রেজিস্টার খাতা দেখে আসলাম, জরিমানা ভরবে কেডা? আর কি এমন হয়েছে যে এত বারবার কল করে যাচ্ছেন?"
"মীমকে দেখতে পাচ্ছি না। কল রিসিভ করতেছে না!"
হামজা বললো, "ডিপার্টমেন্ট আপনার, আপনার জুনিয়র সে, সারাক্ষণ পাশাপাশি রুমে ক্লাস করেন আর আমাকে বলছেন আমি জানি কিনা? খোঁজেন, খুঁজতে থাকেন, আমি ক্লাসে গেলাম।"
হামজার ঝাঁঝালো কথায় অভ্রের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।

কৃষ্ণচূড়ার লাল সবুজ সৌন্দর্য্যের নিচে বসে উপন্যাস পড়ছিল হামজা। পাশেই রেখেছে পেয়ারা মাখানো। এমন সময় পিছন থেকে ডাক শুনতে পেল, "হামজা স্যার, কি করছেন?"
ঘুরেই দেখে মীম! প্রথমেই জিজ্ঞেস করল, "ছিলে কোথায় তুমি? আর অভ্র ভাইয়ের কল রিসিভ কর নি কেন?"
"এটা এতটাও জরুরি না, নন ডিপার্টমেন্টের ক্লাস ছিল।" বলার সাথে সাথেই অভ্র এসে হামজার শার্টের কলার ধরে টান দিল! দুর থেকে মিল্লাত সেটা দেখলো। অভ্র রাগি মেজাজে বলল, "অনেক ভাব হইছে তোর? কোন সাহসে চিল্লাস আমার উপর?" হামজার কলারটা হালকা ছিঁড়ে গেল! মিল্লাত দৌড়ে এসে ছাড়ানোর চেষ্টা করল! মীম না পারছে চিৎকার করতে না পারছে অভ্রকে থামাতে! টানাহেঁচড়া শেষে অভ্র শুধু গালমন্দ করেই যাচ্ছিল হামজাকে। "শুধু শুধু সিনক্রিয়েট করলেন! স্বাভাবিকভাবে বললে কোন ক্ষতি হয়ে যেত না।"
"তোর মুখ দিয়ে কথা কিভাবে বের হচ্ছে? চুপ একদম চুপ...." অভ্রের জবাব।
মিল্লাত আর আতিক হামজাকে নিয়ে অন্যদিকে চলে গেল। অভ্রের সাথে মীম তখনও দারিয়ে! অভ্র বলল, "ক্লাস করতে হবে না, বাসায় যাও।"
"আমার ক্লাস আর ল্যাব আছে, আপনি যান।" মীমও হাটা ধরল অন্যদিকে।


"ভাই পানি আছে?" মিল্লাতকে বলল হামজা। মিল্লাত পানির বোতল এগিয়ে দিল। মুখ ধুয়ে বলল, "ভাই মেস ছেরে দিব আমি। আমি উনার গোলাম নই যে সবসময় তার কথামত কাজ করব।"
আতিক বলল, "এটুকু ঝামেলার জন্য মেস ছেড়ে দিবি?" "হুম ভাই, আর অভ্র ভাইয়ের কাছে পাঁচ হাজার টাকা পাই ওটা আমার দরকার নাই।"
"ঠিক আছে, নতুন মেস দেখছিস?"
"না, কাল থেকে শুরু করবো। আপনারা কেউ রুমে যাবেন?"
আতিক আর হামজা চলে গেল মেসের দিকে। মিল্লাতের মন খারাপ হামজার জন্য! অভ্র এমনটা না করলেও পারতো। নিজের সাথে সাথে আরও দুইজনকে কালার করে দিল।
অভ্র পাশে বসে বলল, "হামজা কোথায়? ওরে এই মাসেই মেস ছেড়ে দিতে বলবি।"
মিল্লাত বলল, "অলরেডি ছেড়ে দিছে। কাল থেকে রুম খোঁজা শুরু করবে।"
"যাক আপদ বিদায় নিল।"
মিল্লাত ওর দিকে তাকিয়ে বলল, "তোর খুব ভাল্লাগে দুর্বল মানুষকে এভাবে হেয় করতে?"
"ইক্সকিউজ মি?"
"হামজা তোর জুনিয়র, সিনিয়ির জন্য কিছু বলে নি।"
অভ্র বলল, "কি বলবে ও? কথা বলার ম্যানার যার মধ্যে নাই তার সাথে ভাল কথা কিসের!" মিল্লাত অট্টহাসি দিয়ে বললো, "ম্যানার?"
"হাসতেছিস কেন?"
"কিছু না রে ভাই, থাক তুই, আমি ক্লাসে গেলাম।"


বাসে উঠেই হামজা বলল, "এক সপ্তাহের মধ্যে মেস পাওয়া যাবে?" আতিক বলল, "কষ্টকর!"
"ভাই যতই খারাপ জায়গা হোক, আমি এডজাস্ট করে নিব।"
"আরে মনে কিছু নিস না, ক্ষমা কর, ভুলে যা যা কিছু হয়েছে আজ।" আতিকের কথায় হামজা আর কিছু বলল না।
সপ্তাহ খানেক হামজা অভ্র এবং মীমের সাথে কথা বলছে না। মীমকে দেখলে এড়িয়ে চলে আর অভ্রকে না দেখেই চলে যায়। মীম বুঝতে পেরেছে হামজা তাকে ইগ্নোর করে যাচ্ছে। লাইব্রেরীর এসির ঠাণ্ডা বাতাসে ক্লান্তি দুর করার জন্য বই নিয়ে পড়ার ভাব করে বসে আছে হামজা। একটুপর মীম এসে সামনাসামনি বসে পরল। জিজ্ঞেস করল, "এভাবে ইগ্নোর করার কারণ?" হামজা উত্তর না দিয়ে পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছে। সে আবার বলল, "এত তাড়াতাড়ি এত পেজ পড়া শেষ?" হামজা তবুও কোনো উত্তর করছে না। মীম বই বন্ধ করে দিয়ে বলল, "এমন ভাব করছো যেন আমি কোনো মহাপাপ করে ফেলেছি!"
"ফোন চালু আছে তো? না হলে অভ্র ভাই কি করে ফেলে কে জানে..." মীম বিরক্তি নিয়ে বলল, "অভ্র অভ্র অভ্র.... আরে তোমরা পাইছো কি রে ভাই? সে প্রেম ভালবাসার কথা বলছে এরমানে কি এই আমাকে তার কথা মত চলতে হবে?"
হামজা বই বন্ধ করে বলল, "এটাও ঠিক!"
"তাহলে বারবার অভ্রের নাম মুখে আসে কেন?"
"এটাও জানি না!"
মীম বলল, "অভ্র ভাই কে কখনই আমি প্রেম/ভালবাসার নজরে দেখি নাই। সুদর্শন কেউ প্রোপোজ করলেই কি সারা দিতে হবে? ডিপার্টমেন্টের অন্য মেয়েরা করতে পারে কিন্তু আমি নই, কারও ইশারায় চলার মত পাবলিক না আমি!"
"প্রমাণ করে দিন! মেনে নিব।" মীমও রাজি হল, শেষে বলল, "বেট ধরতে যেও না, হেরে গেলেই ফেঁসে যাবে। বেরুতে পারবে না।"


ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার সিটপ্ল্যান দেখে মীমের মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে! বেঞ্চের ওপর পাশে অভ্রের সিট! অভ্রকে দেখে কি করবে সে বুঝতে পারছে না। পরীক্ষা শুরু হওয়ার দেড় ঘন্টা পর, রুমে যখন খাতা দেখে লেখার পরিমাণ বেড়ে গেল স্যাররা ফাকা বেঞ্চগুলোয় অনেককেই পাঠানো শুরু করল। মীমও চিন্তা করছে এমন কিছু একটা করার। সে ইচ্ছা করে পিছনে তাকিয়ে আনিকার খাতা দেখে লেখা শুরু করতেই ম্যাডাম এসে আনিকার সিট চেঞ্জ করে দিলেন! আনিকা মহা রাগ মীমের উপরে! সাহস করে বলল, "ম্যাম আমার সিট চেঞ্জ করে দিন, ওর কোন দোষ নেই, আমিই দেখেছি!" ম্যাডাম ধমক দিয়ে বলল, "তোমার খাতা নিয়ে বের করে দিব, বস। যেখানেই চেঞ্জ করে দিব সেখানেই ডিস্টার্ব করবে তুমি!" অভ্র বুঝতে পারলো মীম এখানে কমফোর্টেবল ফিল করছে না এবং এটাও বুঝেছে স্যার ম্যাডামরা মীমের সিট চেঞ্জ করবে না। সবদিক দিয়েই অভ্রের লাভ!


"ওই তুই খাতা দেখার আর সময় পেলি না?" আনিকাকে উত্তরে বলল, "আমি ইচ্ছা করেই দেখছিলাম যেন আমার সিট চেঞ্জ হয় কিন্তু উল্টা হয়ে গেছে!" আনিকা বলল, "ঠিক আছে পরশুর পরীক্ষায় সিট চেঞ্জ করে বসব যদি অন্য কেউ গার্ডে পরে।"
মীম কিছুক্ষণ চিন্তা করলো আনিকার কথা। হঠাৎ মনে পরল কোনো একদিন আনিকা বলেছিল অভ্রের কথা! মীম বলল, "ওই এক মিনিট, সাইডে দাড়া! অভ্রের উপর তুই ক্রাশড?"
আনিকার কথা বেধে বেধে যাচ্ছে! মীম এক দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলল, "আরে দোস্ত কই ছিলি এতদিন? আমার সকল সমস্যা দুর হয়ে গেছে!"
আনিকা বলল, "মানে?"
"তুই অভ্রকে পছন্দ করিস? কিন্তু বলতে পারিস না? তোর সমাধান আমি করে দিচ্ছি দুই দিনের মধ্যে!"

পরেরদিন,
অভ্র এসে দেখে পাশে মীম নেই! আনিকা বসে আছে। মীম সামনের সিটে বসা। বেশ শান্তিতেই আছে সে! অভ্র আনিকাকে বলল, "আনিকা, তোমার সিটে যাও আর মীমের সিট মীমকে দাও!"
আনিকা কলম রেখে বলল, "আপনার মুখ নাই? আপনি বলেন!"
অভ্র অপেক্ষা করছে স্যারদের জন্য, মীমকে তো পাশে বসিয়েই ছাড়বে আজ সে। একটুপর স্যাররা আসলো, গতদিনের কেউ ডিউটিতে আসে নি। অভ্র উঠে বলল, "স্যার এখানে অনেকেই সিট চেঞ্জ করে বসেছে!"
দুর থেকে ম্যাডাম বলল, "তুমি ঠিকমত বসেছো তো? এবার বসে যাও!"
একথা শুনে রুমে বাকি সবাই হেসে উঠলো!!
"সাইলেন্স প্লিজ!"
মীম কোনমতে ওর হাসি আটকে রেখেছে।
পরীক্ষা শেষে অভ্র মীমকে খুঁজতে লাগলো। মীমকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে গেল সে। ওর হাত শক্ত করে ধরে অভ্র বলল, "সিট চেঞ্জ করলে কেন? আজ তোমার জন্য আমার কত ইনস্টল হয়েছে দেখছো তুমি?"
অভ্র এতটাই শক্ত করে হাত ধরে ছিল যার জন্য ব্যথায় মীম কেঁদেই দিল! দুর থেকে হামজা এটা দেখে এগিয়ে আসলো কি হচ্ছে এটা দেখার জন্য। সেখানে আনিকাও উপস্থিত! মীম খুব চেষ্টা করছে হাত ছাড়ানোর, বারবার বলছে "ছেড়ে দিন, ব্যথা পাচ্ছি!" হামজা এসে বলল, "আরে অভ্র ভাই পাগল হয়ে গেছেন নাকি? হাত ছাড়েন। টিচার কেউ দেখে ফেললে কি হবে বুঝতে পারছেন?"
হামজাকে দেখে আরও মেজাজ খারাপ হয়ে গেল তার! "তোকে কে আসতে বলছে আমাদের মধ্যে? এটা আমার আর মীমের ব্যাপার! যা বের হো!" এই বলেই হামজাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল! মীম কোনমতে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে অন্য হাত দিয়ে কষে এক চড় বসিয়ে দিল অভ্রের গালে! কাঁদতে কাঁদতে আনিকাকে নিয়ে বের হয়ে গেল মীম! হামজা তখন ফ্লোরে বসা। উঠে দারিয়ে বলল, "আপনি আসলেই কাপুরুষ, পশু যার মধ্যে বিবেক বলতে কিছু নেই।" একটুপর আবার বলল, "মীম তো দুরের কথা আপনি নিজের কাছেও সেফ না। এক প্রকার মানুষিক রোগী আপনি।"
এমনিই পুরো ক্লাসের সামনে বেইজ্জতি, তারপর আনিকার উপস্থিতিতে মীমের চড় এবং সর্বশেষ হামজার কথা! অভ্র হামজার দিকে এগিয়ে গিয়ে হামজাকেও মারতে শুরু করল! মিল্লাত এসে দেখে অভ্রের কাণ্ড! আতিক, মিল্লাত এবং আরও দুই তিনজন এসে অভ্রকে সরিয়ে নিয়ে গেল। ঘটনা মোটামুটি তৃতীয় তলার অনেকের কাছেই পৌঁছে গেল! কিন্তু কেউ জানলো না মীমের সাথে কি করেছে সে!

হামজা আর আতিক মেস চেঞ্জ করে অন্যদিকে চলে গেল। বলা যায় রাস্তাই বদলে ফেলেছে যেন কখনও একসাথে যেতে না হয়। মীম আনিকাকে বলল, "সেদিন যা হয়েছে শুধু আমার আর তোর ভিতরেই থাকবে, প্লিজ কাউকে বলিস না।"
আনিকা বলল, "আমি ঘৃণাই করছি শুধু। আচ্ছা পরে যে ছেলেটা আসলো সে কে রে? তোকে চেনেও মনে হয়?"
"হুম হামজা, ছেলেটা আসলেই পরিস্থিতির শিকার! এর আগেও আমার জন্য অভ্রের কাছ মার খেয়েছে!" আনিকা বলল, "হুম আজ বেশিই মার খেয়েছে! বেচারার কপাল বেয়ে রক্ত পরছিল!"
আনিকা বলল, "মানে? অভ্র আবার ওকে মারছে?" আনিকা বিস্ময় নিয়ে বলল, "তুই পরের ঘটনা শুনিস নি?" আনিকা সবকিছু বলার পর মীম বলল, "আমি ড্বীন স্যারের কাছে নালিশ জানাবো কনফার্ম!"
আনিকা বলল, "আরে পাগল নাকি? নিজেকে আরও ভাইরাল করার শখ হয়েছে? তোকে নিয়ে কত কথা তৈরি হবে ভেবেছিস?"
মীম বসে পরল। কল কেটে দিয়ে চিন্তা করতে থাকলো বাসায় জানানো দরকার। এটাও ঠিক বাসায় চিন্তা করবে সবাই তারপরও সমাধানে আসতে হবে। নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো রক্ত জমাট বেধে গেছে! মীম মনে মনে বলল, "যদি এই দাগ আব্বু দেখে তাহলে আরও এক সমস্যার তৈরি হবে!" তাই সে কয়েকদিন অপেক্ষা করল আঁচড়টা মিশে যাওয়ার।


দুইদিনপর,
দুপুরে মীম মাঠের এক কোণায় বসে আছে, সাথে আছে আনিকা আর রুপা। আলাপ করছিল অভ্রকে নিয়ে। রুপা বলল, "মীম, তুই কি আসলেই অভ্র ভাইকে পছন্দ করিস না?"
"যদি এতই পছন্দ করতাম তাহলে তোরা বুঝেই নিতিস আর তোর তো প্রেমের অভিজ্ঞতাও অনেক!" আনিকা হেসে দিল! একটুপর মোবাইলে কল আসলো মীমের,
"আসসালামু আ'লাইকুম আব্বু"
"আমার হার্ট, কি অবস্থা তোমার?" কথার এক পর্যায়ে তিনি বললেন, "আচ্ছা তুমি কি এখন ফ্রি? মানে লাঞ্চ ব্রেক চলছে না?"
মীম স্বাভাবিকভাবে বলল, "জ্বি আব্বু!"
"হ্যা তোমাকে দেখার খুব ইচ্ছা হয়েছে আর কেন যেন মনে হচ্ছিল তুমি আমাকে খুঁজছো তাই আরকি..." মীম উঠে দাড়ালো! আশেপাশে তাকিয়ে বলল, "আব্বু তুমি আশেপাশে আছো তার মানে?" ফোনের ওপাস থেকে হাসি দিচ্ছেন তিনি। মীম দুরে তাকিয়ে দেখে মাটি রঙা দুইটা গাড়ি দারিয়ে আছে! আনিকা আর রুপাকে নিয়ে রওনা হল গেটের দিকে। এর আগে বলল, "শোন তোরা দুইটা, আব্বুর সামনে অভ্র সম্পর্কিত কোন কথা তুলবি না এবং বলবি না!"
মীমের সামনে যেতেই দুইজন সৈনিক দরজা খুলে দিল। মীমের আব্বুকে দেখেই চোখ কপালে উঠে যাওয়ার অবস্থা আনিকা ও রুপার! এত ফিট আর উচা লম্বা মানুষ তাও এই বয়সে! রুপা আনিকাকে ফিসফিস করে বলল, "এই সিনটা অভ্রের দেখা দরকার ছিল রে! ওর বুঝা উচিৎ কি নিয়ে সে এত আকাশে উড়ে!"
ব্রিগেডিয়ার হাসান আল সাঈদ, আনিকা একটু একটু করে গুনতে শুরু করল কয়টা পদক ঝুলানো আছে কিন্তু বারবার এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে! মীম সামনে এসে বলল, "আব্বু এরা দুইজন আমার বান্ধবী, ও হচ্ছে আনিকা আর ও হচ্ছে রুপা।" তারা দুইজনই সালাম জানালো।
মীমকে বললেন, "ক্লাস শেষ?"
"জ্বি"
"তাহলে চল, ভাল মন্দ খেয়ে আসি! মামনি তোমরাও চল!"


রেস্টুরেন্টে বসে,
"তোমরা দেখ কি খাবে? যা ইচ্ছা!"
জমপেশ খাওয়া দাওয়া শেষে মীম জিজ্ঞেস করল, "আব্বু তুমি কয়দিন আছো এখানে?"
"বেশি না, আর দুইদিন! আর কাল আবার তোমার ভার্সিটি যাবো।"
"হঠাৎ?"
"ম্যাথ ডিপার্টমেন্ট হেড ফজলে আব্বাস আমার কলেজের সিনিয়র ছিলেন। এখানে এসেছি আর যদি পরিচিত মুখ গুলোর সাথে দেখা না করি তাহলে কেমন হয়!"
মীম খুব সাবধানে হাতের দাগ লুকিয়ে রেখেছে। কোনভাবেই বুঝতে দেয়া যাবে না।
রুপা আর আনিকার উদ্দেশ্যে বললেন, "মনি তোমরা ঠিকমত খাচ্ছো তো? দেখ খাবার খাওয়ায় লজ্জাবোধ বা কার্পণ্য করবে না। শরীর সুস্থ থাকলে সবই ভাল যায়।"
আনিকা মুখ ফসকে বলল, "জ্বি আঙ্কেল, জলজ্যান্ত প্রমাণ আপনিই! বিশ্বাসই হচ্ছে না আমাদের!" রুপা পা দিয়ে আস্তে করে ধাক্কা দিল আনিকাকে। ব্রিগেডিয়ার হাসতে হাসতে বললেন, "এটা তো কমই!"
মীম আর তার বান্ধবীদের মেসে পৌঁছে দিয়ে মীমকে বললেন, "ঠিক আছে সুইটহার্ট, যেতে তো ইচ্ছা করছেই না তারপরও... আচ্ছা শোন, বাসায় কল দিয়ে কথা বল।" এবং শেষে পড়াশোনা করা এবং বাজে আড্ডা না দেয়ার জন্য বলে গেলেন।


অনেকদিন পর ক্যাম্পাসে হামজাকে দেখে ডাক না দিয়ে কল করলো মীম। হামজাও আশেপাশে খুঁজে নিল কিন্তু দৃষ্টিসীমায় দেখতে পেল না! ফোন রিসিভ করতেই মীম বলল, "যদি সময় থাকে তাহলে উত্তর দিকের গ্রাউন্ডে আসা যায়?" হামজা তাকিয়ে দেখে মীম আর আরও একজন দারিয়ে আছে। "টিউটোরিয়াল আছে, ১২টায় আসি?" সম্মতি জানিয়ে কেটে দিল কল।

দুরে দারিয়ে অভ্র একাই সিগারেট টানছে। শেষ দেড় বছরে কত চেঞ্জ হয়ে গেছে সে! ক্লাসের কেউ তেমন কথা বলে না, সবাই নেগেটিভ মনোভাব নিয়ে চলে। কোনো আড্ডায় কেউ আর ডাকে না! মিল্লাত এসে বলল, "খুব একা একা লাগছে দেখি! দে কয়েকটা টান দিই!" মিল্লাত সিগারেট নিয়ে নিল। অভ্র কিছু বলছে না।
মিল্লাত আবারও বলল, "মীমরে মিস করতেছিস?"
অভ্র মিল্লাতের দিকে তাকালো কিন্তু রাগী নজর দিয়ে নয় মলীন হয়ে! সিগারেট পিষে দিয়ে মিল্লাত বলল, "দোস্ত একটা বাস্তব কথা বলি, তোর ভালোর জন্য!"
মিল্লাত বলতে শুরু করলো, "তুই কি জানিস তুই কোনদিনই মীমকে ভালবাসিস নি?"
"মানে? কি বলতে চাস?"
"বলতে চাই, তোর কাছে ভালবাসাটা জোর করে বা যেভাবেই হোক নিজের করে নেয়ার মত! কেয়ার, স্যাক্রিফাইজ বা এডজাস্টমেন্ট না! মনে করে দেখ, আমাদের সেম ইয়ারের রিয়ার কথা? কত কেয়ার করতো তোর? তারপর জুনিয়র সুমনা? কতটা খেয়াল রাখতো? আসলে এরা সময় আর চোখের পানি দুইটাই নষ্ট করছে।"
অভ্র বলল, "তোর কি মনে হয় আমি মীমের কেয়ার করি না?"
মিল্লাত হাসতে হাসতে বলল, "হুম দেখলাম তো নমুনা! আর হামজার সাথে যা করলি তা তো আর নাই বলি।"
"মীমকে তো রাজি করিয়েই ছাড়বো, ওর বাসায় প্রস্তাব পাঠাবো।"
মিল্লাত বলল, "আমি চাই না মীম বা মীমের মত কেউ তোর কপালে পরুক। আগে নিজে ঠিক হো।"
অনেক বলছিস, এর আগে আমি উল্টাপাল্টা কিছু করে বসি, উল্টা হাটা শুরু কর!"
মিল্লাত উঠে বলল, "আজ তিন তারিখ, অক্টোবরেই আমি মেস ছেড়ে দিব, এটা বলার জন্যেই এসেছিলাম।"


দুপুর সাড়ে ১২টা,
"কি ব্যাপার খুব খুশি খুশি মনে হচ্ছে?"
হামজা এসে বসল।
মীম বলল, "হুম, খুশি আর মরা দুটোই!"
"যেমন?"
রুপা বলল, "ওর আব্বু এসছে এই খুশি আর আব্বু আছেন এই চিন্তায়!"
"ক্লিয়ার করে বল কি হইছে?"
"আব্বু এখন ম্যাথ ডিপার্টমেন্টে আছে।" হামজা বলল, "আচ্ছা ওই লম্বাচড়া ইউনিফর্ম পরা উনি নাকি?" "হুম!"
"তো এতে দুশ্চিন্তার কি আছে?"
"অভ্র সেদিন হাত এতই শক্ত করে ধরেছিল যে দাগ বসে গেছে! খুব সাবধানে কব্জি ঢেকে রেখেছি। যদি আব্বু কোনো ভাবে দেখে ফেলে তাহলে আমার ইন্টার্ভিউ শেষ হবে না!"
হামজা বলল, "আমি জানতাম না উনি তোমার আব্বু কিন্তু জেনে আমি শকড! মানে দেখতে এখনও ইয়ং! ফিটনেসও মাশাআল্লাহ!"
একটুপর মোবাইলে কল আসলো মীমের। কথা শেষ করে মীম বললো, "হামজা চল, আব্বুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিই, রুপা তুই চল।"

ক্যান্টিনে অভ্র ঢুকতেই দেখে মীম আর হামজা বসে আছে। আর ভীড় অনেক! কোনরকম কিছু বলা ঠিক হবে না ভেবে বাইরে অপেক্ষা করতে লাগলো অভ্র। একটুপর কল করে বলল দেখা করার জন্য। মীম হামজাকে জানানোর পর হামজাও সাথে যেতে চাইলো কিন্তু মীম মানা করল। এমনিই তার জন্য অনেক মার সহ্য করেছে সে!

বেঞ্চে বসে মীমের অপেক্ষা করছে অভ্র। মীম পিছন থেকে ডাক দিয়ে বলল, "জ্বি কেন ডেকেছেন?"
অভ্র ঘুরে বলল, "হামজার সাথে কি করছিলে?"
"যদি সোজা সাপ্টা বলেন কেন ডেকেছেন সেটাই ভাল হবে।" অভ্র বলল, "সোজা কথা এটা, আমি তোমার সাথে হামজাকে একদম সহ্য করতে পারি না তাই হামজার সাথে কথাবার্তা/চলাচল বন্ধ করে দাও!"
মীম হাসতে হাসতে বলল, "ওহ আচ্ছা এই কথা! আমি অতি খুশির সাথে জানাচ্ছি যে আমি এটা করবো না কারণ আপনার কেনা গোলাম নই যে আপনার যেকোনো কথা মানতে হবে। শুকরিয়া করা উচিৎ আপনার কারণ আমি আমার ইজ্জতের কথা চিন্তা করে ড্বীন/স্যারদের বিচার দিচ্ছি না আপনার নামে।"
অভ্র উঠে দারালে মীম দুই পা পিছিয়ে গেল। অভ্র বলল, "বাহ! এখনও ভয় পাও দেখি আমাকে!"
"ভয় পাই না, রাগে কখন কি করে বসি তার ঠিক নেই তাই নিজেকে সেফ রাখছি!"
অভ্র বলল, "তুমি হামজা থেকে যত দুরে থাকবে ওর জন্য ততই মঙ্গল।" মীম বলল, "এবার যদি হামজার গায়ে একটা আঁচড়ও লাগে তবে আপনি যেখানেই থাকেন সেখান থেকেই তুলে এনে দুনিয়াদারি ভুলিয়ে দিব! এতদিন কিছু বলি নি কিন্তু আর সহ্য হচ্ছে না আপনাকে।"
অভ্র হাসতে হাসতে বসে গেল এবং বলল, "বাপরে! আমি আজ পর্যন্ত কোনো মেয়েকে থ্রেট দিতে শুনিনি বা দেখিনি! তোমাকেই প্রথম দেখলাম! ঠিক আছে দেখি কি হয়!"
মীম চলে যাচ্ছে আবার অভ্র ডেকে বলল, "আচ্ছা একটা উত্তর দিয়ে যাও তো? তুমি কি হামজাকে পছন্দ কর নাকি সে তোমাকে পছন্দ করে?"
মীম বলল, "পছন্দ করি কিনা জানি না তবে আছে কিছু বিষয়.... আপনার বোধগম্য হবে না!"
"বুঝতে তো পারছিই তবে এমনটা যেন না হয়।"
মীম একটু এগিয়ে এসে বলল, "আমার নজরে আমি দুইজন কে দুইভাবে দেখি! আপনাকে তো দেখিই না আর এটাই আমার নজর আর হামজার কথা বলতে গেলে ডিসেন্ট একজনকে যেভাবে দেখা দরকার সেভাবেই দেখি।"


রাত ১টা,
ছাদে বসে আছে অভ্র! কিছুদিন হল ঘুম ধরছে না তার! কানে শুধু হামজা, মিল্লাত আর মীমের কথাগুলো বাজতে থাকে! কয়েকদিন হল বাসা থেকেও কল আসছে না কারণ বেশ রাগারাগি করেছে সে। পাশে রাখা সিগারেটের প্যাকেটে আর মাত্র ৩টা সিগারেট আছে! ভরা মেসটা আজ একদম শুন্য! কেউ অভ্রের নাম শুনলে আর মেসমেট হতে চায় না। ফাইনাল পরীক্ষার আর দেড় মাস বাকি। মীমের চক্করে গত দেড় বছর বই তো কখনও খুলেই দেখে নি সে! অথচ সময় তো চলে যাচ্ছে!

আতিক হামজাকে নিয়ে মাঠে বসে কিছু কাগজপত্র ঠিকঠাক করছে। এমন সময় অভ্র এসে বসে পরল। হামজা কোনো কথা বলল না। আতিক জিজ্ঞেস করল, "কি অবস্থা ভাই?"
অভ্র বলল, "আতিক মাঝে মাঝে কিছু থার্ড ক্লাস পোলাপান দেখবি যারা সারাদিন আপু/ভাবি বলে সম্বোধন করে দিনশেষে তার সাথেই সম্পর্ক করে তোলে!"
হামজা আর আতিক একে অপরের দিকে তাকালো! কথাটা হামজার একেবারেই সহ্য হল না! সে বলল, "ভাই সোজা সোজা বলেন না আপনি আমার কথাই বলছেন!"
"হ্যা এখন তুই নিজের দিকে নিয়ে নিলে আমার কিছু করার নাই!" হামজা বলল, "একটা কথা মনে পরল আতিক ভাই, কেউ কেউ মনে করে মেয়েরা দোকানের পণ্য! যখন যার ইচ্ছা কিনে এনে নিজের গোলাম বানিয়ে ফেলে আর পরে ডাস্টবিন! এটা তাদের কাছে এক প্রকার গেম!"
আতিক হেসে দিল! কিছুক্ষণপর মীম এল। অভ্রের উদ্দেশ্যে হামজাকে দেখে বলল, "আরে আমি কতক্ষণ হল তোমাকে কল করছি আর তুমি এখানে! চিন্তায় পরে গেছিলাম আমি!"
হামজা ফোন বের করে দেখে ৯টা মিসড কল! "ওহ সরি মীম, আসলে কাগজগুলো নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।"
মীম জিজ্ঞেস করল, "ওহ ভাল কথা হামজা, তুমি ঠিক আছো তো?" "কেন?"
"আসলে একজন থ্রেট দিয়েছিল তাই বললাম আরকি।" হামজা বলল, "আরে ধুর, কারও থ্রেটে আমি ভয় পাই না। বাঁচানোর মালিক আল্লাহ, যেখানেই রিজিক শেষ ওখানেই মৃত্যু! ওসব থ্রেটকে গুনে লাভ আছে?"
অভ্র খুব প্রতিকূল পরিবেশে পরেছে! উঠে যেতেও পারছে না আবার বসে থাকতেও পারছে না! এদিকে হামজা আর মীমের কথাও সহ্য হচ্ছে না! আতিক বিপদের আভাস পাচ্ছে। ভাবছে উল্টাপাল্টা কিছু ঘটে যায় কিনা! সে মোবাইল বের করে মিল্লাতকে মেসেজে জানিয়ে দেয় সতর্ক থাকার।


[চলবে]
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১০:১০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৃদ্ধাশ্রম।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৬



আগে ভিডিওটি দেখে নিন।

মনে করেন, এক দেশে এক মহিলা ছিলো। একটি সন্তান জন্ম দেবার পর তার স্বামী মারা যায়। পরে সেই মহিলা পরের বাসায় কাজ করে সন্তান কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

টের পেলে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

টের পেলে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

টের পেলে গুটিয়ে যায় লজ্জাবতী/ পরিপূর্ণ যৌবনে যুবতীর নিখুঁত অনুভূতি। আমার চাওয়া, ইচ্ছে, স্বপ্ন! আমার পছন্দ বুঝদার, সুন্দর হৃদয়ের রূপ! সৌন্দর্য সুন্দর যা চিরন্তন সত্য। কিন্তু সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×