somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদেরকে খাইতে দেন আর না হয় গুলি কইরা মারেন -ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"আমাদেরকে খাইতে দেন আর না হয় গুলি কইরা মারেন" এ কথা গুলো আমার নয়, ১৯৭৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি গার্ডিয়ান পত্রিকার নিউজ হেড লাইটি ছিল এমনই। সংবাদের বিবরণে বলা হয় লাখো লাখো মানুষ ক্ষুদার জালায় গ্রাম ছেড়ে প্রতিদিন শহরের দিকে ধাবিত হতে থাকে এ প্রত্যাশায় যে, বঙ্গবন্ধু তাদের জন্যে অন্তত: দু,মুঠো ভাতের সংস্থান করে দিবেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাদের পেটের আগুন নিভানোর কোন ব্যবস্থাই করতে পারলেন না। ববং তাদের হদয়ে আরো ক্ষোভের আগুন প্রজ্জ্বলিত হয়েছে। শেখ মুজিব নিজেই স্বীকার করেছিলেন যে, খেতে না পেয়ে প্রায় ২৭০০০ লোক মারা যায়। যদিও ঐ হিসেবটা ছিল ভয়াবহ দূভিক্ষের তুলনায় খুবই কম। কমপক্ষে ৩০ লক্ষ লোক উপোস সীমার নীচে বসবাস করছিল। সুতরাং ঐ হিসেবে দূভিক্ষের কারণে মূত্যুর সংখ্যা প্রায় লক্ষের ঘরেই গিয়ে দাঁড়িয়েছে। শেখ মুজিব প্রতিটি ইউনিয়নে লঙ্গর খানা খোলার নির্দেশ দিলেন। ৪৩০০ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৭০০ লঈরখানা খোলা হয়েছিল। ঐগুলোতে প্রতিদিন তিরিশ-চল্লিশ লাখ না খাওয়া মানুষ জড়ো হতো এক মুঠো খাবারের জন্য। পত্রিকাটি আরো লিখেছে হাজার হাজার ছিন্নমুল জনতা আর ভিক্ষুকের দল ঢাকায় চলে এলে সরকার বিব্রত হয়ে পড়ে। আর সরকার” ঢাকা শহর পরিচ্ছন্ন” করার নামে এক আভিযান চালিয়ে প্রায় দুই লক্ষ ছিন্নমূল আর বস্তিবাসী জনতাকে জোর করে, হয় তাদের গ্রামের বাড়িতে, না হয় শহর থেকে বেশ দুরে সরকার সৃষ্ট ক্যাম্পে যেতে বাধ্য করা হয়। এমনই একটি ক্যাম্প হচ্ছে "ডেমরা ক্যাম্প"। ঢাকার ডেমরায় আবস্থিত এই ক্যাম্পের অবস্থা ছিল জঘন্যতম ও হদয়বিদারক। আর ঐ ক্যাম্পেরটিতে ৫০ হাজারের ও বেশী লোক জড়ো করা হয়েছিল। চর্তুরদিকে কাটা তারের বেড়া দিয়ে রক্ষীবাহিনী দ্বারা পাহারার ব্যাবস্থা করা হয়েছিল তারা যেন পালিয়ে যেতে না পারে। ক্যাম্পের আটকে রাখা মানুষ গুলোকে একজন সাংবাদিক দেখতে গেলে এক হতভাগ্য ছিন্নমূল ক্যাম্পবাসী বুড়ো বলেছিল” আমাদেরকে খাইতে দেন আর না হয় গুলি কইরা মারেন”।

সুবিজ্ঞ পাঠক বৃন্দ বাংলাদেশে বর্তমান মহাজোটের শাসনামলে সেই দুর্ভিক্ষের প্রতিধ্বনি জনগণ আবার শুনতে পাচ্ছে। এ সরকার উত্তর বঙ্গের মঙ্গাকে জাতীয়করণ করে সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছে। নির্বাচনের পূর্বে এদেশের সকল জন সাধারণের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিশ্রুতিটি ছিল” ১০ টাকা কেজির চাউল খাওয়ানোর ঘোষণা” এই প্রতিশ্রুতিটি দিয়েছেন স্বয়ং আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টাঙ্গাইল সহ সারা দেশের কয়েকটি জনসভায়। দেশের প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ায় একযোগে তা ফলোআপ করে প্রচার করে। প্রধামন্ত্রীর এমন প্রতিশ্রুতি দেশের মানুষ নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মূহুর্তে গিলেছে ভালো এতে কোন সন্দেহ নেই। এই বুদ্ধিটি প্রধানমন্ত্রীকে যে উপদেষ্টা দিয়েছেন তার জন্য হয়ত তিনি ধন্যবাদ ও পেয়েছেন। কিন্তু এ ঘোষণা আজকের এ মূহূর্তে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর জন্যেই কাল হয়ে দাঁড়াবে তা আবার কে জানে। আবার এ নিয়ে বিরোধী দল পাল্টা চ্যালেঞ্জ দিবে তাও হয়ত প্রধানমন্ত্রীর জানা ছিল না। তিনি মনে করেছেন এগুলোতো অন্য অনেক ওয়াদার গুলোর মতই একটি মাত্র। অবশ্য আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নিকট এ জাতীয় ওয়াদা খুবই মামুলী ব্যাপার।

যেমন শেখ হাসিনা বলেছিলেন (ক) ৫৭ বছর বয়সে তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নিবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার নিকট জিজ্ঞাসা এখন আপনার বয়স কত? ( খ) ৯৬ সালে আওয়ামীলীগ বলেছিল আমরা বিরোধী দলে গেলে ও হরতাল করবো না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার নিকট জিজ্ঞাসা বিগত ৪ দলীয় জোটের আপনি কয়টি হরতাল করেছিলেন? (গ) আওয়ামীলীগ ওয়াদা করেছিল ক্ষমতায় গেলে ইসলাম বিরোধী কোন আইন তারা করবেনা। অথচ তারা সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থার নামে ধর্মবিমূখ জাতি, পদার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ, দেশে বড় বড় আলেমদেরকে কারাগারে আটক রাখা ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ নয় কি?

আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ১০ টাকার চাল খাওয়ানোর ঘোষণা যখন ”ট্যক অব দ্য কান্ট্রি” ঠিক তখনই চালের মূল্য স্বাধীনতা উত্তর সবচেয়ে চড়া, ক্ষুদার জালায় মা যখন তার সন্তান বিক্রি করছে তা পত্রিকার পাতায় খবর চাপা, যখন খোলা আকাশের নীচে চাউলের জন্য আভিজাত্য পরিবারের ছেলে মেয়েরা শরীরের ওড়না আর কাপড় দিয়ে লজ্জায় মুখ ঢেকে কাতার বন্দী হয়। ঠিক তখন মহান সংসদে দাঁড়িয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বললেন ১০ টাকা চাল খাওয়ার ঘোষণা ৯৬ সালে দিয়েছি এবার নয়। তখন তিনি হয়ত বেমালুম ভুলে গেছেন তার বক্তব্য পত্রিকায় ছাপা আছে আর চ্যানেল গুলোতে আছে রেকর্ড করা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো যে পত্রিকা গুলো ৯৬ সালে জন্মেই হয়নি তারা ও প্রধানমত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ স্বরূপ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঐ বক্তব্য তাদের পত্রিকায় আবার ও ছেপেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন অ-সত্য বক্তব্য দিয়ে আপনি কি জনগণের সাথে আর আমার মা -বোনের সাথে তামাশা করেননি? এটি নতুন প্রজন্মের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা নয় কি? প্লিজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন মহান দায়িত্বে থেকে এমনটি করবেন না। এটি আপনার ব্যক্তির জন্য যতটুকু বিব্রতকর তার থেকে অনেক বেশী লজ্জাজনক এই জাতির জন্য। আমাদের দেশের ক্ষমতাসীনদের মনে রাখা দরকার, এদেশের যুব প্রজন্ম যেমনি কাউকে ক্ষমতায় আরোহনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি আবার ক্ষমতা থেকে নামানোর ও সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবেও কাজ করে। মিসরের যুব সমাজের শক্তির দিকে একটু তাকিয়ে চিন্তা করুর প্লিজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী!

আওয়ামী লীগের ইতিহাস আমরা নতুন প্রজন্ম প্রায় বই থেকেই বেশী পড়েছি। যেহেতু ১৯৭৫ সালের আমাদের অনেকের জন্মই হয়নি সেহেতু আওয়ামী লীগের দু:শাসনের অনেক ইতিহাসই আমাদের প্রজন্মের শুনা। ক্ষুদার জ্বালায় লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুবরণ, আর কুকুরের সাথে খাবার নিয়ে মানুষের কাড়াকাড়ি আর ইজ্জত রক্ষায় মহিলাদের জাল পরে থাকার ঘটনা ছিল অনেকটাই গল্পের মত। কিন্তু আওয়ামীলীড়েরর দু:শাসন এখন আমাদের এই প্রজন্মের কাছে শুনা গল্প আর বইয়ের পাতায় লেখা কোন ইতিহাস নয়। যার সাক্ষী আমি নিজেই এবং বলতে গেলে যে দৃশ্যটি দেখে আমি এই লেখাটির কল্পনা করেছি তা, হলো গত কয়েকদিন আগে ঢাকার মগবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে আমি আসতেছিলাম। রাস্তায় খুব জ্যাম তৈরী হয়ে আছে। তাকিয়ে দেখি একটি ট্রাকের সামনে দুইসারিতে লম্বা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনেক গুলো মেয়ে ও বৃদ্ধ মহিলা ও শিশু। ছেলে মানুষ খুব একটা ছিল না এই লাইন গুলোতে। সবাই সারিবদ্ধ হয়েছে চাউলের জন্য। আমি দু:খিত তাদের সবাই কে হতদরিদ্য বলতে না পারার কারণে। কারণ তাদেরকে গরীব বলেল আমার ঐ মা বোনদের উপর অবিচার করা হবে। যারা আসলেই গরীব নয়। তাদের অনেকেরই পোষাক-আষাক বলছে তারা এইভাবে খোলা আকাশের নীচে চাউলের জন্য সারিবদ্ধ হওয়ার কথা নয়। কিন্তু পরিস্থিতি তাদেরকে বাধ্য করেছে। এর প্রমাণ হলো রাস্তার পাশের এই সারিতে দাঁড়িয়ে অনেকেই দেখেছি স্কুলের ওয়ালের দিকে মূখ করে দাঁড়িয়ে থাকতে। সম্ভবত তারা অনেকেই চাচ্ছিলেন রাস্তার মানুষ অন্তত যেনো তাদের চেহারা গুলো না দেখে। এই জন্যেই হয়ত তারা এভাবে নিজেদের আড়াল করছে। এই হচ্ছে আজকের বাস্তব অবস্থা। যারা আওয়ামী লীগের দুর্ভিক্ষের যাতাকলে ক্ষুধার জ্বালা নিবারণ করতে সকল লজ্জা শরম গুছিয়ে খাবরের জন্য খোলা আকাশের নীচে কাতার বন্দী হয়েছে, তাদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় আমার জানা নেই কিন্তু, কেউ যদি আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েও থাকেন, এই পরিস্থিতির জন্য যে বর্তমান সরকারকে অভিশাপ দিচ্ছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর যারা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে কিন্তু দ্রব্যমূল্য পানি গ্যাস আর বিদ্যুৎ পাচ্ছেনা তারা ও সরকারের উপর ডাবল অ-সন্তুষ্ট নয় কি?

বর্তমান মহাজোটের নির্বাচনের আগে যে কয়টি জনপ্রিয় প্রতিশ্রুতি ছিল, এক- ডিজিটাল বাংলাদেশ, যা যুব সমাজ তথা নতুন ভোটাদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছিল। কিন্তু আওয়ামীলীগ, যুবলীগ. ও ছাত্রলীগের ডিজিটাল সন্ত্রাসের নির্মম শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছে অনেকেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে সেশন জটের যাতাকলে পিষ্ঠ আজকের নতুন প্রজন্ম। ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়া তো দুরের কথা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকারে হয়ে চাকরী হারাচ্ছে ঘরে ঘরে। প্রশাসনে ওএসডি এখন প্রতিপক্ষকে দমনের শক্তিশালী হাতিয়ার। আরেকটি জনপ্রিয় নির্বাচনী ওয়াদা ছিল ১০ টাকা দরে মানুষকে চাল খাওয়ানোর ঘোষণা। আমাদের দেশের সচেতন মানুষজনের এ কথা খুব ভালো করেই জানা আছে যে, নির্বাচনের সময় ভোটের মেনোফেষ্টোতে এমন কোন ভালো প্রতিশ্রুতি নেই যা রাজনৈতিক দল গুলো করেনা। ঠিক তেমনি আওয়ামী বুদ্ধিজীবি আবুল বারাকাত যাকে অনেকেই চেনেন মুখস্থ অর্থনীতিবিদ হিসেবে, আর জাফর ইকবালদের ব্রেইন থেকে আগত চমক লাগানো শ্লোগান দিয়ে মহাজোট তৈরী করেছে আকর্ষণীয় নির্বাচনী মেনিফেষ্টোর কনসেপ্ট। অবশ্য সেই নির্বাচনী মেনিফেষ্টোই এখন আওয়ামী লীগের জন্য গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কথায় বলে” চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। আওয়ামীলীগ ও তেমনি তাদের পুরনো বাকশালী চরিত্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। বিগত দু,টি বছর তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। আর বর্তমানে আওয়ামী বুদ্ধিজীবি ও জোটের শরীকরাও আওয়ামী লীগের উপর মহা ক্ষুব্ধ। টি,আই,বি সহ মানবাধিকার সংগঠন গুলোর সাথে সরকারের দুরত্ব বাড়ছে। ড. ইউনুসকে নিয়ে সম্প্রতি শেখ হাসিনার কার্যক্রমকে আমেরিকা দেখছে বাড়াবাড়ি তথা প্রতিহিংসা হিসেবে। তাই শেখ হাসিনাকে সরাসরি ফোন করে সেই কথাই জানিয়ে দিলেন আমেরিকার পররাষ্ট মন্ত্রী হিলারী ক্লিনটন।

৯৬ এর আওয়ামী লীগের অপশাসন এবং বর্তমান এই কু-শাসনের যাতাকলে পিষ্ট হয়েছে তাদেরকে বুঝাতে হবে না আওয়ামীলীগ কি জিনিস। তা সত্যিই হাড়ে হাড়ে ওরা টের পেয়েছে। আমি মনে করি আওয়ামী লীগের ৯৬ পর খুব কাছাকাছি সময়ে আবার ক্ষমতায় আরোহন ছিল এই জেনারেশনের কাছে ৭১-৭৫ দু:শাসনের পুনরাবৃত্তির অরেকটি দলীল। কথায় বলে ভুক্তভোগীর জন্য চলিত আর সাধু উভয় ভাষার বর্ণনাই সমান। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আরোহণ করার পর আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ভর্তি-বাণিজ্য, চুরি-ডাকাতি, দখল, লুণ্ঠন, হত্যা, খুন, রাহাজানি ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী তৎপরতা ফলে দেশজুড়ে সৃষ্টি হয় এক মারাত্মক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির। ভারতের সাথে কয়েকটি গোপন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে প্রিয় বাংলাদেশকে তাদের হাতে তুলে দেয়ার চক্রান্ত প্রায় চূড়ান্ত। এক্ষেত্রে এদেশের জনগণই সরকারের প্রধান অন্তরায়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্যান্য পেটোয়া সন্ত্রাস-বাহিনী দ্বারা বিনা বিচারে হত্যার সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের জননিরাপত্তা ব্যবস্থা যেভাবে ভেঙে পড়েছে সেটা স্বাধীনতা-পরবর্তী ৭২-৭৪ সময়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ক্ষমতার দাপট, সীমাহীন লোভ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, এলাকা প্রীতি ইত্যাদি সরকারের সর্বত্র ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। বিরোধীদল ঘোষিত ও সরকার অনুমোদিত বিভিন্ন জনসভা দলের অঙ্গসংগঠনের ক্যাডার ব্যবহার করে পণ্ড করে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে তারা পাল্টা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রশাসন ও পুলিশ দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করিয়ে ‘শান্তিরক্ষা’র অজুহাতে বিরোধী দলের সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে, যা তাদের পুরনো ফ্যাসিবাদী ধারারই অনুসরণ।

বাংলাদেশে নিম্ন আদালতের আইনের শাসন এখন নাকি রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মানুষ সুবিচারের জন্য ছুটে যায় সর্বোচ্চ আদালতে। সেখানে অন্তত নিরাপত্তার আশা টুকু বুকে ধারণ করে বেঁচে আছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু শেষ আশ্রয়টুকুও এখন আর অবশিষ্ট থাকল না। বাংলাদেশ বর্তমানে এক চরম সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে। ক্ষমতাসীন সরকার নানাভাবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে জলাঞ্জলি দিয়ে নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছে। গ্যাস বিদ্যুৎ পানিসহ জনদূর্ভোগ, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বোগতি সংবাদপত্রের কন্ঠরোধ ও সাংবাদিক নির্যাতন, ইভটিজিং শেয়ার বাজারের মাধ্যমে অর্থআত্মসাত, বিরোধী দলের উপর দমন নীপিড়নের ও শিক্ষাঙ্গনগুলোতে ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসের ফিরিস্তি লম্বাই বটে। ছাত্রলীগের অত্যাচারে গোটা জাতি যখন অতিষ্ট। মাত্র দু বছরের সরকার অপশাসনের এক কালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দিন গণনার সাথে সাথে দিন বদলের আসল রূপে ফিরে আসছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ।

সরকারের দেশ, জাতি, স্বাধীনতা ও ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যাতে কেউ কোনো আওয়াজ তুলতে না পারে সেজন্য একে একে সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে নির্মূল করে আওয়ামীলীগ একদলীয় বাকশাল কায়েম করে বাংলাদেশকে একটি করদ রাজ্যে পরিণত করতে চায়। আওয়ামীলীগ আজ অবস্থান নিয়েছে দেশ-জাতি, গণতন্ত্র ইসলাম ও দেশপ্রেমিক সকল মানুষের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে। এমনি এক প্রেক্ষাপটে দেশের জনগণ মিশরের গণ-অভ্যুত্থানের মত বাংলাদেশে ও জেগে উঠার প্রতিধ্বনি খুঁজে পেয়েছে আড়িয়াল বিলের বীর জনতার সাহসী উচ্চারণ থেকে। এ দেশের আমজনতার এই আন্দোলনের ধ্বনিতে মুখরিত সারা বাংলাদেশ। বিজয় হবে মুক্তিকামী জনতার।

e-mail- [email protected]
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×