somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্বোধের সন্ধানে

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ ভোর ৬:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোরআনে অনেক জায়গাতেই কাফেরদেরকে (যারা আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার করে) অজ্ঞ বা নির্বোধ প্রকৃতির লোক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে এদের অন্তর অন্ধ। এরা সত্যকে চিনতে পারে না।

“আর যখন কোন সুরা নাযিল করা হয়, তখন তারা এক অপরের দিকে তাকাতে থাকে; (এবং বলে যে) তোমাদের কি কেউ দেখে না? অতঃপর তারা সরে পড়ে। আল্লাহ তাদের অন্তরগুলোকে ফিরিয়ে দিয়েছেন, কারণ তারা হচ্ছে নির্বোধ সমাজ মাত্র”। (তওবাঃ ১২৭)

“তোমাদের মধ্যে যদি বিশজন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকে তারা দু’শর মুকাবিলায় জয়ী হবে। আর যদি তোমাদের মধ্যে একশ’ লোক থাকে তারা হাজার কাফিরের উপর জয়ী হবে। কারণ তারা জ্ঞানহীন”। (আনফালঃ ৬৫)

“তারা কি এইজন্য যমীনে চলাফেরা করেনি যাতে তারা সমঝদার হৃদয় ও শ্রবণশক্তিসম্পন্ন কর্ণের অধিকারী হতে পারে? বস্তুত, চক্ষুতো অন্ধ হয় না, কিন্তু বক্ষস্থিত অন্তরই অন্ধ হয়”। (আল-হজ্বঃ ৪৬)

আয়াতগুলো পড়লে পরিস্কার বোঝা যায় এসব লোকগুলোর আসলে বুদ্ধিসুদ্ধি নেই, নির্বোধ। বিষয়টা বড় ভাবনার। বাস্তবে আমরা এমন বহু মানুষকে দেখেছি যাঁদেরকে অনেক বেশি জ্ঞানী মনে হয় যদিও তাঁরা স্রষ্টায় বিশ্বাসী নন। তাহলে কোরআনের বক্তব্যের সাথে মিলল?

আরও একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে বোঝা যায় আসলেই তাঁরা মুর্খ। তারা জানেন বটে, তবে যা জানেন তা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য অপ্রয়োজনীয়; কখনও কখনও বিপজ্জনক।

সমাজের নৈতিক ভিত্তির কথায় ধরুন। আপাত দৃষ্টিতে অনেক বড় বড় সমাজ বিজ্ঞানীর দেখা আমরা পেয়েছি। কিন্তু গীবত যে একটা সামাজিক অপরাধ- এই ধারণাটা কোন সমাজ বিজ্ঞানী দিয়েছেন বলে আমার জানা নাই। পরিবার, বিয়ে, বিয়ে বিচ্ছেদ (তালাক), পিতা-মাতা সম্পর্ক, ছোট-বড় সম্পর্ক, সম্ভাষণ (সালাম), পর্দা (এটা যে কল্যাণকর সেটাই তো উনাদের উপলব্ধিতে এলো না), নেতা-কর্মী সম্পর্ক, গণজমায়েত (ঈদ, জুমা), মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, ইত্যাদি প্রয়োজনীয় বিষয়ে অনেক তত্ব বা মতবাদ এলেও কল্যাণকর এবং বেস্ট সল্যুশন তাঁরা দেখাতে পারেন নি। তবে এসব তথাকথিত পন্ডিতদের কোন যুক্তিতে জ্ঞানী বলা চলে!

অর্থনীতির কথা ধরুন। অনেক মত ও পথ এসেছে। সুদ যে একটা জুলুম, এই বোধটাই এখনও তাঁদের মধ্যে তৈরি হয়নি। যাকাত যে অর্থনীতির ভিত্তি হতে পারে, এ জ্ঞানই তাদের নেই। যাকাত ও দানের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারা তো আরও অনেক পরের ব্যাপার।

মানবাধিকার নিয়ে ব্যপক হৈচৈ। এটা প্রতিষ্ঠিত করতে জাতিসংঘ তৈরি করা হলো। ফলাফল কারও অজানা নয়। ইরাকীদের মুক্ত করতে আমেরিকা শান্তির জন্য যুদ্ধ শুরু করল। বিশ্বে এত এত অস্ত্র তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে, কিন্তু যুদ্ধের সঠিক নীতি এইসব তথাকথিত পন্ডিতেরা দিতে পারল না। মুর্খতা আর কাহাকে বলে?

রাষ্ট্রব্যবস্থার কথায় আসি। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস বলে জনগণের সাথে আহম্মকি করা হয়। এত কিছু অবলম্বন করেও রাষ্ট্রকে দুর্ণীতিমুক্ত করা সম্ভব হয় না। এমন কিছুর জ্ঞান তাদের নেই যা দিয়ে জনগণের সার্বিক কল্যাণ করা সম্ভব হতে পারে। নইলে বড় বড় সুশীলরা ক্ষমতায় আসার পরও পরিস্থিতির উন্নতি হওয়া দুরের কথা অবনতি হয় কিভাবে?

ডিপ্রেসন দুরীকরণে এইসব তথাকথিতরা অব্যর্থ কোন ঔষধ দিতে পারেন নি, মানুষের সাস্টেইনেবিলিটির জন্য যা ভীষণ প্রয়োজনীয়।

আরও কিছু বিষয় যা তাদের উপলব্ধিতে আসে না। একটা মানুষের অন্যায়ভাবে এক হাজারটা খুনের শাস্তি এবং অপর মানুষের অন্যায়ভাবে একটা খুনের শাস্তি কখনও একই রকম হতে পারে না। নিজের জীবনের কি মানে থাকতে পারে তা তার নিজেরও জানা নেই।

“তাদের মধ্যে আর একটি দল আছে, যারা উম্মী। খোদার কিতাব সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞানই নাই। নিজেদের ভিত্তিহীন আশা-আকাঙ্খা ও ইচ্ছা-বাসনাই তাদের একমাত্র সম্বল, ও অমূলক ধারণা-বিশ্বাস দ্বারা পরিচালিত হয়”। (বাকারাঃ ৭৮)

“তিনি যাকে চান, জ্ঞান ও সুবুদ্ধি দান করেন; আর যে ব্যক্তি এই জ্ঞান লাভ করল, প্রকৃতপক্ষে সে বিরাট সম্পদ লাভ করল। এইসব কথা থেকে তারাই শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহণ করতে পারে যারা বুদ্ধিমান”। (বাকারাঃ ২৬৯)


৩৫টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×