শাহবাগের আবেগ- ইস্যুটি নিয়ে অন্তত ফেসবুকে কিছু লিখবোনা ভেবেছিলাম কারণ এইসব রাজনৈতিক ব্যাপার স্যাপার আমার ইনোসেন্ট ফেবু ফ্রেন্ডসরা ঠিক বুঝতে চাইবেননা। কিন্তু কয়েকদিনের উপুর্যপুরি মেসেজ আর ইমেইলের ধাক্কায় লিখতে বাধ্য হলাম।
নিচের লিখাটি সমমনা কয়েকজন ব্লগারএর মুক্ত আলোচনা- কথা হচ্ছিল বিভিন্ন ইস্যুতে, তারই একটা সারসংক্ষেপ|
সোবহান সাহেবের বাগিচা আজ স্লোগানে স্লোগানে মুখর, প্রজন্ম চত্তরের প্রত্যয় আজ মাতৃভূমি ছাড়িয়ে মেল্বৌর্নেও! ভালই লাগছে!
ভালোর সাথে 'ই' প্রত্যয় যুক্ত করে ভাললাগাকে খাটো করিনি কিন্তু কেবল মুচকি হাসিখানা ঝুলিয়ে রাখা বোঝাতে চেয়েছি, বৈরীভাবে না নিলেই হয়|
আজকাল খুব ভয়ে আছি, মুখ খুললেও দোষ আর না খুললেও দোষ! এই যেমন ধরুন দুদিন আগে এক ভদ্রমহিলা যিনি বেশ নামী দামী লোকেদের সাথে চলাচল করেন যদিও উনি আমার ফ্রেন্ড নন-ফেবুতে পিক দেখলাম, তিনি মেসেজ পাঠিয়েছেন এইভাবে যে,
"ব্লগেতো ছদ্মনামে লিখে খুব লম্ফঝম্প করতেন,টপ রেটেড হতেন, আর ফেবুতে পরে আছেন সুখী হবার উপায় নিয়ে জনগনকে উপদেশ আর উপদেশ কিন্তু শাহবাগ ইস্যুতে আপনার কোনো পোস্ট নেই, কোনো কমেন্ট নেই, জামাতিদের পেইজে সমানে লাইক দিয়ে যাচ্ছেন! এতে করে আবার প্রমানিত হয় যে আপনি জামাতি| ভন্ডামি ছেড়ে দিয়ে আমাদের সাথে হাত মেলান, আখেরে ভালো হবে| "
- এই ছোট্ট একটা টোকা আমার কলম বিরতীর শীতনিদ্রা ভঙ্গ করলো, আড়মোড়া দিয়ে মোবাইলটি হাতে নিলাম! আমার মত অখ্যাত এক বেদেনীর সাপোর্ট তাদের মত Big Shots দের প্রয়োজন ভেবে পুলকিত হলাম!
২০০৫-২০০৬ এর মাঝামাঝি সময়কার কথা, আমার ব্লগিং জীবনের শুরু, তুমুল উদ্যমে ব্লগিংচলছে, আস্তমেয়ে, সন্ধ্যিয়াবাতী, বজ্লুমহাজন, ফারজানা মাহবুবা, ত্রিভুজ, অথবা চতুর্ভুজ! কিংবা ব্লগিংচলত মুখফোর,চোর, শমশের, আইজুদ্দিন, ভাস্কর, ইমরান, হুসেইন,আর হাল জামানায় লাইম লাইটের নিচে আশা অমি রহমান পিয়াল, আরিফ জেবতিক, কিংবা আসিফ মহিউদ্দিনদের সাথে,তারা আমার কো-ব্লগার|
এদের সবাইকে চিনি বিগত ৭-৮ বছর ধরে| একটা উদাহরণ দেই- কট্টরপন্থী আওয়ামী ঘরানার ব্লগার অমি রহমান পিয়াল যিনি শাহবাগের আন্দোলনের লিডিং স্টেজ এ আছেন তার কথা না তুললেই নয়, উনার একটা Adult Site আছে,"যৌবনজ্বালা"যা পরবর্তিতে যৌবনযাত্রা নামকরণ করা হয়েছে| ওখানে তার আইডি হলো আশ্রম মামা! যেখানে কেবল দেশী গার্লসদের হিডেন ক্যামেরার ভিডিও দেখানো হত, পরবর্তিতে উনার নাম পড়ে যায় চটি পিয়াল!
চিন্তা করে দেখুন আপনার বনের গোপন ভিডিও হয়ত ওই মর্ষকামী লোকেরা ওখানে প্রচার করেছে, যারা এখন শাহবাগে গলা ফাটিয়ে চিত্কার করছে!
আসিফ মহিউদ্দিন- ব্লগিংজীবন শুরু করেছে নাস্তিকতাকে প্রমোট করার জন্য, প্রিয় নবীকে নিয়ে এমন কোনো নোংরা কথা নেই যা তার নোংরা মুখে বেরোয়নি! আমার গ্রুপের দাঁত ভাঙ্গা জবাবে সমু ব্লগ থেকে লেজগুটিয়ে পালানো ছাড়া যখন কোনো উপায় ছিলনা তখন আমার নাম এমন গল্প ফান্দ্লো যে আমি নিজেই বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম যে আমার নাম জামাল খান আর বনানী বাজারে আমি সাইবার কাফে চালাই যেহেতু আমার আইডি ছিল Hide করা এবং তারা আমার ব্যক্তিগত পরিচয় জানতনা!
আমি দুঃখিত, ঐসব শুকরদের সাথে শাহবাগের সহাবস্থানকে আমি অস্বীকার করছি!
তবুও আমি পরিবর্তনের পক্ষে,শাহবাগের এই আন্দোলন থেকে হয়ত একটা ভালো কিছু হত কিন্তু এটাও একটা দলীয় সমাবেশে পরিবর্তিত হলো, হবে-সেটা জানতাম কারণ যাদের লিডিংএ হয়েছে তারা হিডেন এজেন্ডা না থাকলে কখনো ওই পথে পা বাড়াবেননা তা আমার বহু আগে থেকেই জানা. যারা জন্মের আগেই শত সহস্র বছর আগের ইতিহাস জানেন তাদেরকে আমি সমীহ করে চললেও এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি!
“Pessimism of the intellect, optimism of the will.” । আশা দুই প্রকারের। এক ধরনের আশা ছেলেভুলানো ছড়ার মতো ক্লান্ত দিনশেষে পরাজয়ের অপরিসীম গ্লানি ভুলিয়ে আমাদের ঘুম পাড়িয়ে রাখে, স্বান্তনার প্রলেপ দেয়। আর আরেক ধরণের আশা পরিবর্তনের প্রেরণা জোগায়, আমাদের স্বপ্ন দেখায় নতুন সম্ভাবনার!
যাকগে, এখন মূল ব্যপারে আসি:
অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে যুদ্ধাপরাধের বিচার বুঝি লাওয়ারিশ ল্যাম্পপোস্টে জ্বলতে থাকা ৬০ ওয়াটের একটা ফিলিপস বাতি যেটার কোন নেটেড কাভার নাই|
২৫০ অধিক আসন নিয়ে আওয়ামি লীগ বর্তমানে ক্ষমতায়, কেন তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে দিচ্ছেনা ?কেন শেখ হাসিনা এমন সুবর্ন সুযোগ হেলায় ফেলে দিচ্ছেন ?
উনি যদি আজ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে দেন তাহলে বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি হাঁফ ছেড়ে বাচবে,শুধু সেটাই নয় , প্রো লেফট এবং কট্টর আওয়ামি সমর্থকদের কাছে জামাত একটি বিষফোঁড়ার মতই যন্ত্রনা উপসর্গ|
যদি তিনি জামাতকে নিষিদ্ধ করেন ৮৬'র জাতীয় বেঈমানি , ৯৬'র তসবি-পটটি সহ নানারকম চিটিং বাটপাড়িতে ভরপুর শেখ হাসিনার প্রোফাইলে সম্ভবত এটাই হবে সবচেয়ে গৌরবজনক কাজ|
কারন আওয়ামি লীগ প্রায়ই বলে জামাত কি ইসলামের ইজারা নিয়েছে ?
তাহলে তাদের এই ইজারা নেয়া বন্ধ করে দিন|
অসংখ্য ধর্মভীরু সাধারন বাংলাদেশি মুসলিমদেরকে তারা যেভাবে দলে ভেড়ায় সেটা বন্ধ করে দিন|
কেন হাসিনা এই সুযোগ টা নিচ্ছেন না ?
কেন তিনি আওয়ামি মতাদর্শের অসংখ্য ভক্তের যন্ত্রনা উপশম করছেননা জামাত নামের বিষফোঁড়াটি কেটে ফেলে ?
কারন রাজনীতি হচ্ছে স্টান্টবাজির জায়গা|
স্টান্টবাজি থেকেই বলা হয় আওয়ামি লীগ স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি যদিও সাভার স্মৃতিসৌধ নির্মান করেছেন জিয়া , হাসান হাফিজুর রহমান জিয়ার নির্দেশেই স্বাধীনতার দলিলপত্র সঙ্কলন করেন!
স্বীকার করতে দ্বিধা নেই একই ধরনের স্টান্টবাজি থেকেই বলা হয় জিয়া আওয়ামি লীগের পুনর্বাসক....
আপনি মানবেন সেটা ?
জানি মানবেন না...............
কেন মানবেন না ?
কারনটা বুঝতে বুঝতেও ঠিক বুঝে উঠতে না পারলে সেটা বুঝিয়ে দেই..........
শেখ মুজিব নিজের হাতে বাংলাদেশ আওয়ামি লীগ শব্দটিকে বাকশালের বর্শা দিয়ে নিহত করেছেন!
শেখ মুজিব নিজেও নিহত হয়েছেন, তাতে কি বাংলাদেশ আওয়ামি লীগের মৃত্যু ঘটেছে ?
না , ঘটেনি,কারন বাংলাদেশ আওয়ামি লীগের ভোটারদের মৃত্যু ঘটেনি!একটা দলের ভোটারদের মৃত্যু যতক্ষন না ঘটে ততক্ষন দলটিরও মৃত্যু ঘটেনা|
শেখ হাসিনা নিজেও জানেন ৭০'র নির্বাচনেও আওয়ামি লীগ ১০ % ভোট মিস করেছে......
এই ভোট গুলো কাদের ?
জামাতপন্থিদের......
মুক্তিযুদ্ধের ঠিক আগেও যেমন তাদের ৭-৮% ভোট ছিল মুক্তিযুদ্ধের ঠিক অব্যবহিত পরেও ঠিক একই ভোট তাদের ছিল......
মুক্তিযুদ্ধের পরে জামাত মরে যায়নি , কারন তাদের ভোটাররা মরে যায়নি, ঠিক যেমনি ভাবে শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগ মরে যায়নি , কারন তাদের ভোটাররা মরে যায়নি|
জামাতের ভোটাররা যতদিন থাকবে ততদিন জামাতও থাকবে,শেখ হাসিনা খুব ভাল করেই জানেন এসব...
জামাতকে নিষিদ্ধ করে দিলে তারা নতুন মার্কা , নতুন নাম নিয়ে আসবে, ঠিক তুরস্কের এ কে পার্টির মত, কোন কিছুই হের ফের হবেনা....
মাঝখান দিয়ে হাসিনার রাজনীতির স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ স্টান্টবাজিটা মার খাবে!
জামাত তো নেই , এবার উনি কাকে গালি দেবেন?
And বিএনপি উটকো ঝামেলা থেকে বেঁচে যাবে
জামাত নামের সিন্দাবাদের ধুর্ত ধাড়ী বুড়োকে আর কাঁধে নিতে হবেনা|
তারচেয়েও বড় ঝুকিটা হল বাংলাদেশের প্রো রাইট ভোট তখন একচেটিয়া বিএনপি উপভোগ করবে!যেইসব সাধারন ধার্মিক মুসলমান বাংলাদেশিরা আওয়ামি লীগ থেকে ১০০ হাত দূরে গা বাঁচিয়ে চলেন তারা সবাই একজোট হয়ে বাই ডিফল্ট বিএনপি ভোটার হয়ে যাবে|
কারন তাদের ওয়াজ মাহফিলের মিষ্টি সুর শুনিয়ে দলে ভেড়ানোর সেয়ানা বাশিওয়ালা জামাত তখন নেই,ঠিক যেমনি ভাবে বাংলাদেশের প্রায় ১০০ তে ১০০ % প্রো লেফট ভোট এর কেক আওয়ামি লীগ একাই গেলে...
আর আম্বিয়া , ইনু , খালেকুজ্জামানদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়.........
জামাতকে বাঁচিয়ে রাখতে পারলে প্রো রাইট ভোট ব্যাংকের কিছুটা জামাতের কাছে থাকবে....
ডিভাইড অ্যান্ড রুল থিওরির এত মজা হাসিনা মিস করতে চান না !
“আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন দল নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে । কারন রাজনীতি করার অধিকার সবার রয়েছে..........”
কথাগুলো খালেদা জিয়া বলেছেন ভেবে কিছুক্ষন খিস্তি খেউর গালাগালি করে মনের সুখ মিটিয়ে নিন
,তারপর জানুন বাকিটাঃ
...............তবে নির্বাচন কমিশনের আইন মেনে তাদের রাজনীতি করতে হবে। কেউ নির্বাচন কমিশনের নীতিমালার বিরুদ্ধে কিছু করতে চাইলে তা করতে পারবেনা। ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার তা নেবে নির্বাচন কমিশন । জামায়াত ইসলামীকে নির্বাচন কমিশনের আইন মেনে রাজনীতি করতে হবে.......
– গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ,২২ শে জুলাই , ২০১০ তারিখে জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত আওয়ামি লীগ সংসদীয় দলের বৈঠক
– কালের কণ্ঠ / ২৩ শে জুলাই , ২০১০: শেখ হাসিনার বক্তব্য জামায়াত নিষিদ্ধকরণ বিষয়ে
-প্রথম আলো / ২৩ শে জুলাই , ২০১০
:তাহলে জামাতকে পুনর্বাসনের প্রশ্নটা আসে কিভাবে ?
ঠিক যেভাবে বলে মজা পান জিয়া জামাতকে পুনর্বাসন করেছেন ঠিক সেভাবে একই সিংগেল স্ট্যান্ডার্ডে এটা কি বলেন জিয়া আওয়ামি লীগকেও পুনর্বাসন করেছেন ?
কেন বলেন না ?
দয়া করে ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের ত্যানা প্যাচাবেননা......
দালাল আইনের ব্যাপারে জিয়াকে দোষী করতে চান ?
হ্যা , করতে পারেন.........
তবে জিয়াকে দোষী করতে চাইলে যত বড় কথা বলতে হয় তত বড় মুখ আর কাজ আপনার আছে তো ?
কথাটা বললাম এই কারনে মিডল ইস্টে আজ যে ৭০০০০০০ শ্রমিক ঘাম ঝরিয়ে এদেশটাকে বাঁচিয়ে রাখছে ওদের সেই সুযোগটা করে দিয়েছেন জিয়া.........
পাল্লার একদিকে দালাল আইনের ছাড় , অন্যদিকে লাভের বাটখারা, বেশ ওজনদার বাটখারা , ৭০ লাখ শ্রমিকের চাকরি , ৩০ টা দেশের স্বীকৃতি......
মাপার সময় বাটখারাটা নিতে ভুলবেননা দয়া করে
,কারন এই আপনারাই একপাল্লায় যখন ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীকে বসানো হয় তখন অন্য পাল্লায় পাকিস্তান আটক বাঙালিদের বাটখারাটা বসিয়ে দেন এবং এটাও ভুলে যান যে শাহ আজিজকে সংগে নিয়েই বংগবন্ধু শেখ মুজিব হাসিমুখে ৭৪'র লাহোর ও আই সি সম্মেলনে গিয়েছিলেন!
স্বাধীনতার পর যে বাংলাদেশ শব্দটি বিশ্ব সমাজে অনাদরে উপেক্ষায় ছিল তার অবসান ঘটিয়েছিলেন জিয়া......আয়নায় তাকিয়ে দেখুন মধ্যপ্রাচ্যের সেই ঘামসিক্ত টাকায় আপনার পেটে অন্ন গলধকরন হয় কিনা ?
যদি হয়ে থাকে তো সে অন্ন আর গিলবেন্না.......
মধ্যপ্রাচ্যের ৭০ লাখ শ্রমিকের দেশেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আপনিই করবেন,আপনারই করা উচিত , বড় কথাটা যেহেতু আপনিই বলেন...কাজে বড় হন, বড় কথা বলার মত দেশ উদ্ধারক বড় কৃতিত্ব জাহির করুন|
এই দেশটা হিপোক্রেটে ভর্তি!
এখানে অনেকেই গায়ে টি শার্ট চড়িয়ে চে গুয়েভারা বনে যায়! বিপ্লবি ভাবের হাওয়ায় ঝাকড়া চুলের বাবরি দুলিয়ে বাসায় ফিরে গেটের সামনে ১ টাকা নিয়ে রিকশাওয়ালাকে চোখ রাঙায়.....
কাঁধে গাট্টি বোচকা চাপিয়ে পুজিতন্ত্রের বিশ্বমধুভান্ডার আমেরিকায় এসে মধু চেটে খায় আর পুজিতন্ত্রের ডলার ভাঙিয়ে কক্স , ভেরাইজোন ,এটিঅ্যান্ডটির নেটে বসে আমেরিকা টু বাংলাদেশ সমাজতন্ত্রের সাইবার মিসাইল লন্চ্ঞ করে...........ঠিসিয়া !
শাহবাগ আন্দোলনকে আওয়ামী লীগ ম্যানিপুলেট করবে এটা যারা শুরুর দিন থেকে আওয়ামী লীগ - ছাত্রলীগ- আওয়ামী বুদ্ধিজীবিদের গ্যাদারিং দেখেও না বোঝার ভান করবে তাদেরকে আমি ভন্ড বলি। আওয়ামী লীগ কবরস্থানে রাজনীতি করে , আর শাহবাগে করবে না ?
আর বুদ্ধিপ্রতিবন্দীদের সাথে বাতচিতে আমি আগ্রহী নই|
পারষ্পরিক শ্রদ্ধাবোধ।। অন্যের আদর্শকে শ্রদ্ধা করেও নিজের আদর্শ প্রচার করা যায়, নিজের আদর্শ পালন করা যায়।।
নাস্তিকদের নিয়ে কখনোই আমার চুলকানী ছিলনা।। যার মন চেয়েছে সে নাস্তিক হয়েছে।। আমার কিছু যায় আসেনা।।একজন মানুষকে আমি আস্তিক- নাস্তিক দাড়িপাল্লায় বিচার করার পক্ষপাতি নয়।।সমাজের উন্নতির কাজে, দেশের কাজে যে কারো সাথে কাঁধে কাঁধ মিলাতে আমার আপত্তি নেয়।। কিন্তু সমস্যা তখনই তৈরী হয় যখন সে আমার বিশ্বাসকে, আদর্শকে গালিগালাজ করবে।।
যে ব্লগার খুন হয়েছে একে অনেক আগে থেকেই চিনতাম,খুবই নোংরা মানসিকতার এক ব্লগার হিসেবে।। ইসলাম, আল্লাহ , রসুল(স) কে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বাজে মন্তব্য করেছে।। তার নোংরামী সীমার বাইরে চলে গিয়েছিল অনেকবার।।
আমি জানিনা কে বা কারা তাকে খুন করেছে।। নিজের গ্রুপের লোকেরাও হতে পারে, উগ্রপন্থী কেও হতে পারে।। এক উগ্রপন্থা সবসময় বিপরীত উগ্রপন্থার জন্ম দেয়।। এই নোংরা ব্লগার একজন উগ্রপন্থী ছিল।। কাজেই সে যদি কোন বিপরীত উগ্রপন্থীর হাতে খুন হয় আমি অবাক হবনা।।
আর একটা কথা,
" তাদেরই একজন আজ জবাই হয়েছে যারা শাহবাগের মঞ্ছে উঠে হাজার হাজার ছেলে মেয়েকে শপথ করায় " একটা দুইটা শিবির ধর- সকাল বিকাল জবাই কর।"
তাদেরই একজন আজ লাশ হয়েছে যাদের কাছে শিবিরের ছেলেদের অগণিত লাশকে যাস্ট উইকেট হিসেবে মনে হয়।। মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত শিবিরের ছেলেদের লাশ দেখিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করে এরাই লেখে " আজ চট্টগ্রামে চারটা উইকেট পড়ছে, আজ কক্সবাজারে দুইটা উইকেট পড়ছে"!
বলতে বাধ্য হচ্ছি আজ তাদের নিজেদেরই একটা উইকেট পড়ে গেল, দঃখিত নূন্যতম সহানূভুতি দেখাতে পারলামনা বলে!
শিবিরের আদর্শ আমার কাছে ভুল মনে হয়, তাদের সমালোচনা আমরাও করি কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ওদেরকে ধরে ধরে জবাই করবো।। আজ সারা বাংলাদেশে জামাত-শিবিরের প্রায় তিন কোটির উপর কর্মী-সমর্থক আছে।। এই তিন কোটি মানুষকে জবাই করে আপনি দেশের উন্নতি করার সপ্ন দেখতে পারেন, কিন্তু ওইটা Day Dream! তাদেরকে তাদের ভুল বুঝিয়ে সঠিক পথে আনা যেতে পারে কিনা জানিনা কিন্তু যারা জবাই এর ঘোষণা দেয় তাদের সাথে পাকিস্তানী হানাদার আর ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের কি পার্থক্য থাকলো?
সর্বশেষ একটা কথা বলতে চাই- " হুমায়ুন আহমেদও একজন লেখক, হুমায়ুন আজাদও একজন লেখক, হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুতে চোখে জল আসে কিন্তু হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুতে মুখে একদলা থুথু আসে- পার্থক্যটা ঠিক এখানেই।
কিছুদিন আগে ব্লগার ইমন জুবায়ের ভাই মারা গিয়েছেন, তার মৃত্যুতে আস্তিক, নাস্তিক, ডান-বাম-মধ্যপন্থী নির্বিশেষে সকলকে শোক প্রকাশ করতে দেখা যায় অথছ আজ থাবা বাবা নামের এ ব্লগারের মৃত্যুতে গুটিকয়েক Atheist come AL বাদে সবাই কেন থুথু ফেলছে?? প্রশ্নটা ভেবে দেখা দরকার|
হুমায়ুন আহমেদ কিংবা ব্লগার ইমন জুবায়ের ভাই ঘোষণা দেয়া কোন আস্তিক ছিলেননা, জানিওনা তারা আস্তিক নাকি নাস্তিক,তাদের মৃত্যুতে এ প্রশ্নগুলা উঠেনা,সবাই এক কাতারে দাড়িয়ে চোখের জল ফেলে, প্রশ্নগুলা উঠে শুধুমাত্র আজাদ কিংবা থাবার মত মানুষরা মরলে!
লিখেছেনঃ Elora Zaman
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।