ঈদের সময় সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পানির নীচের ছবি তুলতে গেছিলাম সে সব তো আগেই শুনেছেন, কিন্তু ঐ রাতে যে আমরা ছেড়াদ্বিপে থেকে গেছিলাম তা মনে হয় বলা হয় নি। আমি আর ফয়সাল আগে থেকেই প্ল্যান করে গেছিলাম যে সারাদিন পানির নীচে ঘুরে ফিরে রাতটা ছেড়াদিয়াতেই কাটিয়ে দিব - ইচ্ছা সকালে আরেকবার পানির নীচে নামার, রাত কাটানোর প্রস্তুতি হিসাবে সাথে আছে ২ টা ছোট তাবু, যার যার স্লিপিং ব্যাগ, ক্যাম্পিং চুলা, নুডলস, ডিম আর পর্যাপ্ত পরিমান চা/কফি ও পানি।
১. ভাটার সময় ছেড়াদিয়ার সাগরতীর:

টুরিস্ট সিসন শুরু না হউয়াতে সারাদিন ছেড়াদিয়াতে আমরা ছাড়া আর কোন জনমানব নাই, কিন্তু বিকালের দিকে কিছু স্থানীয় পিচ্চির দল দেখলাম কড়ি/ঝিনুক কুড়াতে এখানে চলে এসেছে। যেহেতু ছেড়াদিয়াতে থাকা নীষেধ আর আমরাও চাইনা কেউ জানুক আমরা এখানে রাতে থাকবো, তাই অপেক্ষা করতে লাগলাম ওদের চলে যাওয়ার। এর মাঝে আমরা ক্যাম্প কোথায় করবো ঠিক করে ফেলেছি, দেখে মনে হচ্ছে এখানে পানি উঠেনা জোয়ারের সময়। শেষ মুহুর্তে লোভ সামলাতে না পেরে আমার ছোট বোন মনিষাও থেকে যাওয়া ঠিক করেছে আমাদের সাথে, যদিও ওর ফিরে যাওয়ার কথা ছিল বিকালে।
২. অপেক্ষা করছি, সবাই চলে গেলে ক্যাম্প করবো এখানে: (ছবি: ফয়সাল কাইয়ুম)

৩. আমাদের ক্যাম্প:

৪. আমাদের ক্যাম্প:

এরমাঝে জোয়ার শুরু হয়েগেছে, আমরা ছাড়া সবাই ফিরে গেছে মুল দ্বীপে। আকাশের অবস্থাও ভালো না, চারিদিকে ঘন কালো মেঘ। তাড়াতাড়ি তাবু গুলা পেতে আমরা রান্নার ব্যাবস্তা করতে লাগলাম, বৃষ্টি নামার আগেই খেয়ে তাবু তে ঢুকতে হবে। রাতের খাওয়া ডিম দিয়ে নুডলস আর পরে ক্যালশিয়াম (বার্মিজ ইন্সট্যান্ট ড্রিংকস, যবের তৈরী)।
৫. রাতের রান্নার শুরু: (ছবি: ফয়সাল কাইয়ুম)

৬. ডিনার টাইম: (ছবি: ফয়সাল কাইয়ুম)

৭. আকাশ ভরা তারা: (ছবি: ফয়সাল কাইয়ুম)

কিছুক্ষন পরে ঝড়ো বাতাস শুরু হলে মেঘ সরে গেলো, ফয়সাল ট্রাইপডে ক্যামেরা লাগিয়ে আকাশের ছবি তুলতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো। অনেক রাত পর্যন্ত আমরা হাটাহাটি করে আড্ডা দিয়ে ঘুমাতে গেলাম, রাতে মুশলধারে বৃষ্টি এসেছিল কিন্তু সারাদিনের পরিশ্রমের কারনে আমরা বেশ আরাম করে ঘুমালাম। সকালে উঠে আরেকপ্রস্থ ক্যালশিয়াম আর কফি ষাথে নুডলস দিয়ে নাস্তা করে ফেললাম। আমাদের পানি শেষ হয়ে যাওয়াতে সবাই কম কম পানি খাচ্ছি, কফি খাওয়ারো উপায় নাই। এর মাঝে ফয়সাল মুখ ধুতে যেয়ে আবিস্কার করলো সামনে যে জায়গাটাতে পানি জমে আছে তা আসলে লবনাক্ত না, বৃষ্টির পানি জমে আছে। আমরা মনে করেছিলাম সমুদ্রের পানি। পানির অভাব মিটে গেলো, আমরা প্রান ভরে ঐ পানি খাতে লাগলাম।
৮. সকালের নাস্তা চুলায়: (ছবি: ফয়সাল কাইয়ুম)

৯. ইয়ামি:

১০. মিস্টি পানির জলাশয়: (ছবি: ফয়সাল কাইয়ুম)

একটা দ্বিপে আমরা মাত্র কয়জন, নিজেদেরকে বেশ রবিনসন ক্রুশো মনে হচ্ছিল, জীবনে এত আনন্দ খুব কমই পেয়েছি কোথাও ঘুরতে যেয়ে........
১১. সকালের নাস্তা:

১২. ছেড়াদ্বীপ বা ছেড়াদিয়া: (ছবি: ফয়সাল কাইয়ুম)


অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




