somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের জলদূর্গ.....মুন্সিগঞ্জের ইদ্রাকপুর

২০ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সৃষ্টির গোড়া থেকেই মানুষ প্রকৃতি ও প্রতিপক্ষের কাছ থেকে রক্ষা করেছে এবং নিজের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করে প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এরই অনিবারযতায় এক সময় দূর্গ-ব্যবস্থার পত্তন হয়।
প্রত্ন্ তাত্ত্বিক দৃষ্টিতে দূর্গ ব্যবস্থা হলো প্রতিরোধের আয়োজন। পরিখা বা গর্তের মাধ্যমে অথবা অন্য কোনভাবে বসতিকে ঘিরে রাকার ব্যবস্থা থেকেই দূর্গ ধারণার উৎপাত্তি।
দূর্গ সাধারণত দুই রকমের দেখা যায়: স্থায়ী ও অস্থায়ী।
স্থায়ী দূর্গ শান্তির সময়ে প্রতিরক্ষা ও শত্রুর বিরুদ্ধে আক্রমনের জন্য শহর, সীমান্ত-চৌকি, সমুদ্রা বা উককূলবর্তী অঞ্চল, বানিজ্য-কেন্দ্র এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে রক্ষার করার জন্য নির্মিত হয়, যেখানে প্রয়োজনীয় সব কিছুই রক্ষিত থাকে।
অন্যদিকে অস্থায়ী দূর্গ গুলো জরুরী ভিত্তিতে যুদ্ধের সময়ে তৈরি করা হয়!
কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে ঔদকদূর্গ, পার্বতদূর্গ, ধান্বনদূর্গ ও বনদূর্গ এই চার রকমের দূর্গের কথা উল্লেখ আছে।

উপমহাদেশে প্রথম নগর সভ্যতস হরপ্পার (সিন্ধু) প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল দূর্গ। হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের প্রায় এক হাজার বছর পরে গাঙ্গেয় উপত্যকায় যে দ্বিতীয় নগরায়ন শুরু হয় তারও প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল দূর্গ।
নদীবহূল বাংলায় দূর্গ গুলো তৈরী হয়েছিল নদীর তীরে, কারণ এর ফলে যাতায়ত ও প্রতিরক্ষা দুটোই সহজ হতো। দূর্গ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শাক্তিশালী করতে পরিখা, নালা, খাল বড় পুকুর খনন করা হতো।
দু একটি ব্যতিক্রম ছাড়া দূর্গ নগরী গুলো প্রাচীর ঘেরা থাকে, এবং এর বাইরে থাকে পরিখা। দূর্গ পাচিলের কোণায় বা কৌশলগত স্থানে এক বা একাধিক বরুজ থাকে। আদি ঐতিহাসিক ও প্রাক মধ্যযুগের দূর্গ প্রাচীর গুলো মাটির ও ইটের তৈরি।


এবার দেখে নেয়া যাক বাংলাদেশের বিখ্যাত দূর্গ গুলোর একটি ইদ্রাকপুর জলদূর্গ।


ইদ্রাকপুর জলদূর্গটি ইছামতি নদীর কোল ঘেসে নির্মান করা হয়েছিল,
এখন অবশ্য ইছামতি মৃতপ্রায়। মুন্সীগঞ্জের দেওভোগ
গ্রামে গেলে দেখতে পাওয়া যাবে এই দূর্গটি। ধারণা করা হয় সম্ভবত
মুঘল সুবাদার মীর জুমলা এই আনু: ১৬৬০ খ্রি: এই দুর্গ নির্মান করেছিলেন।

সেই সময়ে জলপথে মগ ও পর্তুগীজদের আক্রমন প্রতিহত করার জন্য
বেশ কিছু জলদূর্গ তৈরি করা হয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম লালবাগ
সোনাকান্দা প্রভৃতি।

ইদ্রাকপুর দুর্গটি দুটি অংশে বিভক্ত। অপেক্ষাকৃত বড় অংশটি হলো সুরক্ষা
প্রাচীর দিয়ে ঘেরা উন্মুক্ত অঙ্গন। প্রাচীর উপরে মার্লন
আলংকরণ আছে।


প্রাচীরের কোনা গুলোতে রয়েছে সিলিন্ডার অকারে বেস্টন বা
পর্যবেক্ষন মঞ্চ।পর্যাবেক্ষন মঞ্চের দেয়ালে যে চৌকা ফোকর গুলো দেখআ
যাচ্ছে ওখানে কামান রাখা হতো।



একপাশের দেয়াল প্রায় মাটিতে ঢেবে গেছে, শুধু প্যারাপেট গুলো বের
হয়ে আছে।
অপেক্ষাকৃত ছোট অংশটিতে আছে বড় অকৃতির একটা গোলাকার
বেদি। এটাও প্রাচীরের মতো আরেকটা সুরক্ষা প্রাচীরে ঘেরা।


এখানে ওঠার জন্য একটা সিড়ি আছে।



দূর্গের প্রবেশদ্বার, উপরে প্যারাপেট অলংকরণ।

বর্তমানে এই বেদির উপরে ডেপুটি কমিশনারের বাসভবন নির্মান করা
হয়েছে :|
আর পুরো দূর্গটাই এখন জেল হিসেবে ব্যবহার করা হয় /:)

সুতরাং আর দেরি কেন, একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবার আগে দেখে আসুন
মুঘল এই স্থাপত্যকে।

ইদ্রাকপুর জলদূর্গটি ইছামতি নদীর কোল ঘেসে নির্মান করা হয়েছিল,
এখন অবশ্য ইছামতি মৃতপ্রায়। মুন্সীগঞ্জের দেওভোগ
গ্রামে গেলে দেখতে পাওয়া যাবে এই দূর্গটি। ধারণা করা হয় সম্ভবত
মুঘল সুবাদার মীর জুমলা এই আনু: ১৬৬০ খ্রি: এই দুর্গ নির্মান করেছিলেন।

সেই সময়ে জলপথে মগ ও পর্তুগীজদের আক্রমন প্রতিহত করার জন্য
বেশ কিছু জলদূর্গ তৈরি করা হয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম লালবাগ
সোনাকান্দা প্রভৃতি।

ইদ্রাকপুর দুর্গটি দুটি অংশে বিভক্ত। অপেক্ষাকৃত বড় অংশটি হলো সুরক্ষা
প্রাচীর দিয়ে ঘেরা উন্মুক্ত অঙ্গন। প্রাচীর উপরে মার্লন
আলংকরণ আছে।


প্রাচীরের কোনা গুলোতে রয়েছে সিলিন্ডার অকারে বেস্টন বা
পর্যবেক্ষন মঞ্চ।পর্যাবেক্ষন মঞ্চের দেয়ালে যে চৌকা ফোকর গুলো দেখআ
যাচ্ছে ওখানে কামান রাখা হতো।



একপাশের দেয়াল প্রায় মাটিতে ঢেবে গেছে, শুধু প্যারাপেট গুলো বের
হয়ে আছে।
অপেক্ষাকৃত ছোট অংশটিতে আছে বড় অকৃতির একটা গোলাকার
বেদি। এটাও প্রাচীরের মতো আরেকটা সুরক্ষা প্রাচীরে ঘেরা।


এখানে ওঠার জন্য একটা সিড়ি আছে।



দূর্গের প্রবেশদ্বার, উপরে প্যারাপেট অলংকরণ।

বর্তমানে এই বেদির উপরে ডেপুটি কমিশনারের বাসভবন নির্মান করা
হয়েছে :|
আর পুরো দূর্গটাই এখন জেল হিসেবে ব্যবহার করা হয় /:)

সুতরাং আর দেরি কেন, একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবার আগে দেখে আসুন
মুঘল এই স্থাপত্যকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১:৩০
৩১টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×