আজ এখন পর্যন্ত আমি স্বাভাবিক হতে পারিনাই। সকলেই চেষ্টা করছিলাম সাহায্য করতে কিন্তু কিছুই করার ছিলনা। কান আর নাক দিয়ে যে ভাবে ফোয়ারার মত রক্ত বেরুচ্ছিল ঘটনাস্থলেই বুঝেছিলাম বাচার আশা নিরাশা। তবে তখনও বেচেছিল।
রাজধানীর মৌচাক মোরে রাস্তা পার হতে গিয়ে দু’টি বাসের মাঝখানে পড়ে চাপ খেয়ে মোজাম্মেল কাঞ্চন (২৩) নামে এই বিশ্ববিদ্যালয় এই ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল রোববার সকাল ৯টার দিকে এই র্দূঘনাটি ঘটে। নিহত কাঞ্চন আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ঢাকা ক্যাম্পাস থেকে বিবিএ শেষ করেছেন। বর্তমানে একটি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করছিলেন তিনি। তিনি ঐ প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছিলেন কিন্তু অসচেনতা আর তাড়াহুড়ো করার মূল্য দিলেন নিজের জীবন দিয়ে।
বাস চালকরাই দোষী। তিনি মৌচাক মোরের উত্তর পাশ থেকে দক্ষিন পার্শে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। রাস্তায় ছিল প্রচন্ড জ্যাম। সামান্য ফাকা পেয়েই তিনি অনেকের সাথে তাড়াহুড়ো করে রাস্তা পার হওয়ার ঝুকি নেন। সেসময়ে দিবানিশি আর ফালগুনি বাস দুটি পরস্পরের সাথে প্রতিযোগিতা করছিল আগে যাওয়ার জন্য। দুর্ভাগ্রক্রমে তিনি আটেকে পরেন বাস দুটির মাঝখানে।
অবস্থা বেগতিক দেখে কাঞ্চন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে দুই হাত উঁচু করেন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ড্রাইভাররা সেদিকে বিন্দুমাত্র ভ্রক্ষেপ করেননি। কাঞ্চন দুই বাসের মাঝখানে পড়ে যান। দুই বাসের চাপায় তার শরীরে উর্ধাংশ থেঁতলে যায়। মাথায় প্রচন্ড আঘান পান। নাক ও কান দিয়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। বাসের যাত্রীরাও চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু তখন সামনে জ্যাম থাকায় বাসগুলো সরতে পারেনি। কয়েক মিনিট এভাবে আটকে থাকার পর দিবানিশি বাসটি সরে যায়। তখন কাঞ্চনের শরীর রাস্তার ওপর পড়ে যায়। কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সবশেষ। ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কে নিবে এই দুর্ঘটনার দায়িত্ব? আমাদের আরও সচেতন হওয়া উচিত। কষ্ট হলেও ফুট ওভার ব্রিজ ব্যবহার করুন। ফুটওভার ব্রিজ না থাকলে রাস্তা সম্পুর্ণ নিশ্চিত নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন তরপর রাস্তা পরহোন।
দয়া করে দু-মিনিটের জন্য আপনার মূল্যবান জীবনের ঝুকি নিবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১২