মৃত জিহাদিদের শরীর গুলো শুয়োরের চামড়া জড়িয়ে মুখে শুয়োরের বিষ্ঠা ঢুকিয়ে জ্বালিয়ে দাও ---ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায় এ কথা বলেছেন।
তথাগত রায় এবং তার বক্তব্য সমর্থনকারী এদের মধ্যেই স্ববিরোধীতা রয়েছে। সমস্যাটা সেইখানেই। এতদ্বতীত এটা শুধু একটা নির্দিষ্ট বিষয়কে টার্গেট করে নয়। এই বক্তব্যের মাধ্যমে হিডেন টার্গেট রয়েছে।
তথাগত রায় বলেছেন, মৃত জিহাদিদের শরীর গুলো.....// উনি জিহাদিদের টার্গেট করেছেন। উনি জিহাদি না বলে সন্ত্রাসী অথবা দেশদ্রহী বা এই জাতীয় কিছু বলতে পারতেন। কারন ভারতে কোন জিহাদী আক্রমন করেনাই এবং সেখানে কোন জিহাদ হচ্ছেও না। ভারতের সন্ত্রাস হচ্ছে আন্তমহাদেশীয় ক্ষমতার ভারসাম্য কেন্দ্রিক। পাকিস্তান-ভারত জন্ম শক্র আর তাতে ইন্ধন দেওয়ার জন্য আছে পুজিপতি বিশ্ব। ভারত আক্রান্ত হয় পাকিস্তানের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের দ্বারা। ভারত তা তারস্বরে চেচিয়ে সমগ্র বিশ্বকে জানিয়ে যাচ্ছে।
তথাগত রায় চেচনিয়ার কথা বলেছেন। চেচেন যোদ্ধারা স্পষ্টতই স্বাধীনতা ডিমান্ড করেছে এবং স্বাধীনতা চেয়ে তার জন্য যুদ্ধ করে পরাজিত হয়েছে।
নেতাজি সুবাস বসু যেমন ভারতীয়দের কাছে একজন দেশপ্রেমী বীর তেমনি বৃটিশদের কাছে একজন দেশদ্রোহী সন্ত্রাসী।
অবস্থানগত পার্থক্য দৃষ্টিভংগি বদলায়। নেতাজি বসুকে নিশ্চয়ই কোন ভারতীয় তথাগত রায়দের বক্তব্যের সমার্থক কোন বক্তব্য দিয়ে হেয় করার কথা স্বপ্নেও ভাববে না। কিন্তু ততকালীন বৃটিশ সরকার মহাত্না গান্ধী, নেতাজি বসু এদেরকে রাষ্ট্রদ্রোহী সন্ত্রাসী হিসাবেই মার্কিং করেছিল। ভারত যদি স্বাধীনতা না পেত আজও এই সব মহান নেতৃত্বের গায়ে দেশদ্রোহী সন্ত্রাসীর তকমাই লেগে থাকত।
এটাই আমি বলছি। রায় সাহেবদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। মহান নেতাজিদেরকে আমি কখনই অসম্মান করছিনা, করবও না। অবশ্যই আমি তাদেরকে, তাদের ত্যাগকে সম্মান এবং শ্রদ্ধা করি।
1400 বছর আগে অবশ্যই কোন জেহাদী মতবাদ প্রচার করা হয়নাই, কখনওই না। মোহাম্মদ ( সাল্লাঃ ) কখনও আক্রমন করেননি। আক্রান্ত হয়ে প্রতিরোধ করেছেন। কখনওই তিনি যুদ্ধ করতে বা আক্রমন করতে বলেন নি, উতসাহিত করেননি। এমনকি আক্রান্ত হলেও ধৈর্যধারন করতে উতসাহিত করেছেন।
মোহাম্মদের ( সাল্লাঃ ) যারা সত্যিকারের অনুসারী, তারা কখনও কোনওপ্রকার সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ধার-কাছ দিয়েও যাবেনা।
জেহাদী হিসাবে ইহুদিবাদী পশ্চিমা বিশ্ব যাদেরকে প্রচার করছে অবশ্যই তারা কেউ মোহাম্মদের ( সাল্লাঃ ) অনুসারী নয়। মোহাম্মদের ( সাল্লাঃ ) কথা ও কাজের সাথে কি তাদের কোন সাদৃশ্য আছে? মোহাম্মদ সাল্লাললাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের সাথে বর্তমানের ততাকথিত জেহাদীদের কোন মিল বা কোন সম্পর্ক নেই।
দুগাছি দারি আর মাথার তালুর উপর একখানা টুপি লাগিয়ে মোল্লা মার্কা একখানা চেহারা বানিয়ে, হাতে একখান অস্ত্র নিয়ে বলল আমি মোহাম্মদের অনুসারী, আমি জেহাদী। ব্যাস হয়েগেল। মামা বাড়ির আবদার আরকি?
চিন উইঘুরু সম্প্রদায়ের মুসলমানদের রাষ্ট্রীয় অধীকার হরন করে নিচ্ছে। তারা কোনপ্রকার সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত নেই, এখন পর্যন্ত সেরকম কোন প্রমান নেই। অথচ চীন শুধুমাত্র মুসলমান হওয়ার কারনে তাদের অধীকার হরণ করে নিচ্ছে। ইতিহাস সাক্ষি, যখনই কোন সম্প্রদায়কে তাদের অধীকার থেকে বিঞ্চিত করা হয়েছে তারা সময়ের আবর্তে স্বাধীকার আন্দোলন করেছে। চেচনিয়ায়র স্বাধীনতার আন্দোলনকারীরা পরাজিত হয়েছে কিন্তু এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীর সেনানীরা স্বাধীনতার সোনালী রক্তিম সূর্ষকে ছিনিয়ে এনেছে।
ফিলিস্তানের স্বধীনতাকামী যোদ্ধাদের পশ্চিমা বিশ্ব সন্ত্রাসী হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছে। ভারতের কাশ্মিরের সাধীনতার আন্দোলনকারীদেরকে ভারতীয়রা সন্ত্রাসী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তথাগত রায় তাদের অনুসারীদের নিয়ে আরও একধাপ এগিয়ে তাদেরকে সমগ্র মুসলমানদের প্রতিনিধী বানিয়ে জেহাদী তকমা দিয়ে মুসলমানদের হেয় প্রতিপন্ন করে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা ঘরে তুলছে।
জিহাদী শব্দটি মুসলমানদের নিকট একটি সম্মান জনক অবস্থান এবং ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয়। জিহাদ এবং সন্ত্রাস এই দুটো এক নয়।
তথাগত রায় সন্ত্রাসীদের জিহাদী বলে জিহাদ এর ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন অপরদিকে একঢিলে দুই পাখি মেরেছেন।
একদিকে তিনি তার কট্রর হিন্দুত্ববাদী মতবাদ প্রচারের জন্য মিডিয়া কাভারেজ পাচ্ছেন অন্যদিকে মুসলমানদের হেয় প্রতিপন্ন করেছেন।
ধিক তার এই নোংরা রাজনীতিকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪০