প্রাচীন কোন এক নির্জন পাথরখন্ড থেকে
এক রাতে সেই অহল্যা শিলালিপির ডাকে আমার ঘুম ভেঙে যায়
আর চোখ বুজে অসহ্য রাজনীতি এবং রুগ্ন শীর্ন হাতগুলোর বন্ধন ছিড়ে
আমি পথ হাটতে শুরু করি এক অজানা রাজপুরীর দিকে।
আমায় দেখে শুক আর শারীদের দল জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়---
আর বলে---- 'কোথায় যাও যাযাবর?'
আমি ওদের কথার কোন উত্তর দেইনা....
একবার মনে হয় বলি-----
আমি সেই শাক্যবংশীয় যুবক.......''
যেকিনা একরাতে পূর্নিমা দেখে সভ্যতা সংস্কারে----
সমস্ত বন্ধন ছিড়ে ঘর ছেড়ে অজানার উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিল।
কিন্তু আমি এসবের কিছুই বলিনা কারন,
আমাকে সভ্যতা সংস্কারের ক্ষমতা দেয়া হয়নি
আমি কোন মহাপুরুষ নই
আমি কোন রাজপুত্র নই..........
আমি এক নিতান্ত সাধারন ক্ষুধার্ত যুবক।
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই অবহেলিত মাটির উঠোনে---
আরো অনেকের মতো আমিও আজ ---
ক্ষুধার্ত দৃষ্টি নিয়ে শূন্যে তাকাই......।
আমার মা আর বোনগুলো আজ ------ ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে বেশ্যাবৃত্তিতে নামে--
আমার ভাইগুলো একমুঠো ভাতের জন্য আজ অস্ত্র ধরে---
ক্ষুধার জ্বালায় আমার চোখদুটো আজ মানচিত্রের ফলার মতো তীক্ষ্ম ।
তাই পূর্নিমা এলে আমি আর স্থির থাকতে পারিনা
হিংস্র শ্বাপদের মতো তীক্ষ্ম দৃষ্টিকে সঙ্গী করে ----
আমি বাইরে বের হই,
আমার পথের দুপাশে তখন মানুষের হাড়ের মরুভূমি,
ডানে এক সবুজ বৃক্ষ যার নাম স্বাধীনতা,
তার প্রতিটি পাতা আজ শুকিয়ে শীর্ন হয়ে গেছে।
বামে এক বিশাল রাজপ্রাসাদ যার সারি সারি সুরম্য কক্ষে --
রাজা আর মন্ত্রীর পাল সুরা উৎসবে মত্ত।
পেছনে এক মানচিত্রের বই যার প্রতিটি পাতা ছেড়া আর --
সামনে সারি সারি পিরামিডের মতো ক্ষুধার্ত মানুষের স্তুপ......।
সেই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের দিগন্তবিস্তৃত বধ্যভূমি দেখে
আমি আর স্থির থাকতে পারিনা----
চিৎকার করে দুহাতে মাথা চেপে আমি সৃষ্টিকর্তাকে ডাকি
আর বলি-------
হে ঈশ্বর ,
আমি আর সহ্য করতে পারছি না
আমি আর সহ্য করতে পারছি না।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ ভোর ৪:০৬