মোফাসসিল ইসলামে ফিরে এসেছে। মোফাসসিল নিয়ে কপি পেষ্ট শেয়ার মতামত ইত্যাদি খুব একটা বেশী করা হয়নি, প্রথমদিকে একটা ছড়া বা কিছুএকটা শেয়ার করেছিলাম যেদিন শুনেছি তিনি আওয়ামিলীগ বা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে ঘোষণা দিয়েছিলেন এবার একটা কিছু হবে। আমরা যারা ভেড়ার পাল তারা সাধারণত এসবে খুশি হই আর পেছন পেছন দৌঁড় মারি। আমি ভেড়াটা বেশীদূর যাইনি, তারপর তার উল্টাপাল্টা কাজ শুরু আমিও ডিজলাইক দিয়ে কেটে পড়ি।
তাহলে মুফাসসিল দিয়ে শুরু করলাম কেন? কারন অন্য কিছু বোঝানোর জন্য তাকে উদাহরণ হিসেবে ব্যাবহার করতে চাই, সেদিন একটা ক্লিপ দেখলাম, পুরোটা দেখিনি একটু করে, সেখানে সে বলল সে মহা নাস্তিক হয়ে গিয়েছিল এবং অনেকই তার অনুসারী হয়ে নাস্তিক হয়ে গেছে, এখন সে ইসলামে ফিরে এসেছে সুতারং তার ইসলাম বিরুদ্ধ কথাবার্তা, চিন্তা চেতনাগুলো খন্ডিয়ে সে এখন ইসলামের স্বপক্ষে যুক্তি দেবে।
মজাটা এখানেই। ব্যাপারগুলো স্পেস এতো বিশাল যে, আপনি চাইলে যুক্তি তর্ক দিয়ে সেরা নাস্তিক হয়ে যেতে পারবেন আবার আপনি আপনার বিরুদ্ধে যুক্তি তর্ক দিয়ে সেরা আস্তিকও হয়ে যেতে পারবেন। এটাতো চিন্তার স্পেস। পৃথিবীর স্পেস দিয়ে একটা ঘটনা বলি। আমরা তিনজন সাগরে নেমে পড়লাম একটা বল নিয়ে, দূরে একটা চর দেখা যাচ্ছে সেখানে যাবো গন্তব্য। আমি একটু দূর্বল তায় বলটা আমার কাছেই বেশী ছিল। বল ছাড়াই সাঁতার কাটলো ফিরোজ। সে সবার আগে, আমি আর শাহনেওয়াজ হাপাতে হাপাতে পেছনে। একটু দূর যাবার পর স্পেসটা বাড়লো, তীরটা ছোট হতে লাগল। তারপর আমরা হারিয়ে ফেলতে থাকলাম ডানবাম সামনে পেছনে। ফিরোজ এগিয়ে আছে সে চিৎকার করে বলছে উল্টো যাচ্ছো, ফিরো। তার মানে বল নিয়ে সাতার দিতে দিতে একটু একটু কোণ ঘুরতে ঘুরতে আমি উল্টো যেদিক থেকে আসছি মানে তীরের দিকেই যাচ্ছি। ফিরোজ চিৎকার করে করে আমাকে ঠিক করছিল। যাই হোক চরে উঠে ভাবলাম জীবন ফিরে পেলাম। উল্টো আসতে সময় বেশী লাগেনি, স্রোতের অনুকূলে হওয়াতে কষ্টও কম হল, তবে যেখান থেকে যাত্রা করেছিলাম তার থেকে অনেক দূরে গিয়ে উঠলাম, ঢেউয়ের তালে গা ভাসিয়ে আসতে গিয়ে এমন হল।
-
ছাত্র রাজনীতি অবশ্যই থাকতে হবে, অনেকটা ফরজ এর মতো অবস্থা। এমন একটা ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে যারা আওয়ামিলীগ করে এবং ছাত্রদের যুক্তি দিয়ে খন্ডন করে বুঝিয়ে দেয়। তারা এই যুক্তিটা ছাত্রদের ধরিয়ে দেয় কেননা একটা পক্ষ মনে করে ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন নাই, আবার ছাত্র রাজনীতি না থাকলে ছাত্রলীগ না থাকলে আওয়ামিলীগ এর পেশী শক্তিতে টান পড়বে তায় তারা তাদের ছাত্রদের এমন করে বুঝিয়ে দেন যে, ছাত্র রাজনীতি না থাকলে দেশও টিকবেনা।
একই যুক্তি ছাত্র শিবিরের, যেহেতু ইসলামি রাজনীতি ফরজ (তাদের মতে) তায় ছাত্ররা ছাত্র রাজনীতি করবে এটাই স্বাভাবিক, ছাত্র শিবির না করলে অন্য একটা করবে যেটা ইসলামের স্বপক্ষে এমনটা একটু যুক্তিও দেখানো হয়, আর যুক্তিগুলোর উপসংসার হলো, শিবির এর মতো দক্ষ্য, ভাল, ইসলামের স্বপক্ষে আর নাই, তায় তোমারও উপায় নাই শিবিরকে অবহেলা করার, ঘুরেফিরে চয়েস এটাই।
এখন কথা হল, যেসব ছাত্ররা ছাত্রনেতা হচ্ছে ছাত্রলীগ থেকে তারা কতোটা ভাল ছাত্র, পড়াশুনা বিষয়ে কতোটা অবদান রাখছে তার চাইতে তাদের সাথে জড়িয়ে পড়ছে মদ, জুয়া, নারী ক্যালেংকারী ইত্যাদি। এসব যুক্তি দেখালে শিবিরের সুবিধা, তারা বলতে পারে আমার ছাত্ররা দেখো, এসবের বিরুদ্ধেই সংগ্রাম করছে। এখানে অন্য সংগঠনের ছাত্রদের আনলামনা, কারন দুইটা চরম দলের উপমা থেকে অন্যদেরগুলো বিবেচনায় চলে আসে।
ছাত্রশিবিরের ছাত্ররা ছাত্রলীগের মতো অতসব কুকামে জড়িত নয়, তবে তারা মনে করে তারাই একমাত্র উপায়, সেখানেই তাদের দূর্বলতা, আর ধর্মীয় কারনে অন্য ধর্মের ছাত্ররা সেখানে আসবে কেন? কারণতো দেখিনা, তারা আসার মতো স্পেস আছে কিনা সেটাও বিবেচ্য। থাকলে তারাও আসতো শিবিরে, শিবিরের হিন্দু শাখা বা বৌদ্ধ শাখাও থাকতো। কিজানি এসব শাখার কথা শুনো হাসি পাচ্ছে কিনা।
-
মোদ্দাকথা হলো ছাত্ররাজনীতিতে একটা শূণ্যতে সৃষ্টি হবে অচিরেই, যাদের সাথে নেশা আর নারীজনিত বিপত্তি যোগ হবে তারা বেশীদিন নেতৃত্ব দিতে পারবেনা, সেই শূণ্যতা থেকেই নুরুদের ফুলকির মতো বের হয়ে আসা। যদিও নুরুরা তাদের পথ নিজেরা রুদ্ধ করে দিয়েছে আপোষ করে, তবে থেমে থাকবেনা, এমন ফুুলকি আরো দেখা দেবে। মেধাবীরা নেতৃত্ব দেবে আগামীতে, তার জন্য চাই এখন থেকে প্রস্তুতি। জ্ঞান আর বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতির উদয় হোক দেশে। ছাত্র রাজনীতির নামে যেসব হচ্ছে সেসব মনে হয় না হলেই চলে। তারা ছাত্রদের নিয়ে যা করে তার চাইতে মূল উদ্দেশ্য হল জাতীয় রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৫১