somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুভ জন্মদিন হুমায়ূন স্যার! এ ভালোবাসা গ্রহণ করুন। (হুমায়ূন স্যারের জন্মদিন উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ই-বুক ও তার ডাউনলোড লিংক)

১৩ ই নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১)

দরদর করে ঘামছি! এই মাত্র কে যেনো কনুই দিয়ে এক বাড়ি দিয়ে চোখের পাশে খানিকটা জায়গা কালচে করে ফেলেছে! তাতে কি? আমিও “এই সর, হেই মিয়া! জায়গা দ্যান!” বলে ধুম ধাম করে এগুতে লাগলাম!

পেছন থেকে কাকে যেনো বলতে শুনলাম, “এই লোক সাহিত্যকে ধ্বংস করে দিচ্ছে! সে কি উপন্যাস লেখেন নাকি? লিখেন “অপন্যাস”, বুঝলেন?”

বোধ করি, তাঁর কানেও কথাগুলো গেল। তিনি শুধু মুচকি মুচকি হাসলেন। আর যন্ত্রের মতো চালিয়ে যেতে লাগলেন হাত ও কলম, সামনে অটোগ্রাফ বাহিনীর একাংশ গড়াগড়ি খাচ্ছে!

“নন্দিত নরকে” দিয়ে শুরু, কলমের কালির বাঁধভাঙ্গা অদম্য স্রোতে এসেছেন “বাদশাহ নামদার” পর্যন্ত। জন্ম দিয়েছেন হিমু, মিসির আলি, বাকের ভাই, শুভ্র’র মতো অবাস্তব জগতের রক্ত মাংশ ওয়ালা মানুষের। বই এর ভেতর থেকে যেনো এই মানুষগুলো চিমটি কেটে যায় এই বলে,” আরে, কি ভাবছিস? আমি আছি কি নেই, এই তো? ধরে নে আছি!”



২)

জাত লেখক জিনিসটা কি, বলতে পারেন? খুব সম্ভবত যে ঘুম থেকে উঠে চোখ খুলে হাই তুলতে তুলতে কিছু একটা লিখলেও সেটা পাঠককে প্রতিক্রিয়াশীল করে দিতে পারেন, তিনিই জাত লেখক। আমার চোখে এরকম আছেন একজনই! তিনি হিমু, মিসির আলি ও শুভ্রের পিতা – “হুমায়ুন আহমেদ”। ইতোমধ্যেই সবাই জেনে গিয়েছেন যে, স্যারের কোলন ক্যান্সার ধরা পরেছে এবং তিনি বর্তমানে নিউইয়র্কের মোমোরিয়াল সোলেন ক্যাটারিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। একের পর এক ক্যামোথেরাপি গ্রহন করতে হচ্ছে তাঁকে। আমি ব্যক্তিগতভাবে “হা” হয়ে যাই, এরকম পরিস্থিতির মাঝেও একজন মানুষ, নার্ভ এতোটা শান্ত রেখে কিভাবে প্রতিনিয়ত লিখে যাচ্ছেন? তাঁকে যদি জাত-লেখক না বলি, তা হলে কাকে বলবো?

৩)

সমসাময়িক একটি ঘটনা বলি। এক লোক, যাকে এ দেশের মানুষ ভালোবেসে ডাকত “গুরু”। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তবে, তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি আমাদের বাংলাদেশের পপ সঙ্গীতের জনক! তিনি আমাদের প্রয়াত আজম খান। আমি প্রচন্ড কষ্ট পাচ্ছি, তাঁর নামের আগে “প্রয়াত” শব্দটি যুক্ত করাতে। এই “প্রয়াত” শব্দটি যুক্ত করার পেছনে আমাদের অপরাধ কম নয়! তিনি বেঁচে থাকতে কি করেছি আমরা তাঁর জন্য? তিনি যখন মুখের ক্যান্সারের জন্য চিকিৎসার দ্বারস্থ হয়েছিলেন কিন্তু অর্থের অভাবে চিকিৎসা সম্পুর্ন করতে পারেন নি, কোথায় ছিলো আমাদের “গুরুপ্রেম” ? মানুষটিকে আমরা হারালাম, সাথে সাথে শুরু হয়ে গেলো, “হায় গুরু!”, “হায় গুরু!”

স্বাধীনোত্তর বাংলাদেশে, হুমায়ুন আহমদ স্যারের মতোন বড় মাপের ও জনপ্রিয় লেখক র সৃষ্টি হয়েছেন কিনা আমার জানা নেই! আজ তিনি শয্যাশায়ী। কি মনে হয়, তাঁর প্রাপ্যটুকু তাঁকে দিতে পেরেছি আমরা? বছর বছর বইমেলায় তাঁর বই কিনেছি ঠিকই, কিন্তু যে সম্মানটুকু, যে ভালবাসাটুকু আমাদের অনেকেরই বুকে জমে আছে, তা কি স্যারকে জানাতে পেরেছি আমরা? সৃষ্টিকর্তা না করুক, স্যারের আজ যদি কিছু একটা হয়ে যায়, তিনি কি এই ভালবাসার নমুনাটা দেখে যেতে পারবেন?

অনেক দুঃখের আলাপ করলাম। এবার একটা সত্যিকারের আনন্দের কথা বলি। আজ, ১৩ই নভেম্বর, হুমায়ুন আহমেদ স্যারের জন্মদিন। আর এ জন্মদিন উপলক্ষ্যে “সরব” পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা স্যারের প্রতি আমাদের অসীম ভালবাসার ছোট্টো একটি নমুনা স্বরুপ, একটি ছোট্টো উপহার দেবার চেষ্টা করেছি।

হুমায়ুন স্যারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে পাঠকদের প্রতিক্রিয়া আর হাজারো অনুভুতি নিয়ে “স্বপ্নলোকের কারিগর” ই-বুক প্রকাশিত হলো আজ। হুমায়ূন আহমেদ স্যারের প্রতি আমাদের মনের শুদ্ধতম ভালবাসার খুব ছোট্টও একটি অংশের প্রকাশ এই ই-বুকটি। এই বুকটি জড়িয়ে আছে, হুমায়ুন স্যারকে নিয়ে আমাদের আকুলতা, আশা-ভরসা, ব্যাকুলতা ও আরও অনেক কিছু।

সরব পরিবারকে নিয়ে শুধু একটা কথাই বলতে চাই যে, আমরা বিশ্বাস করি “মৃতের পূজোর চাইতে জীবিতের প্রতি ভালবাসার প্রকাশ, অনেক শ্রেয়”

সবশেষে হুমায়ূন স্যারের জন্য অনেক অনেক প্রার্থনা আর শুভকামনা আশা করছি সবার কাছ থেকে। এতো ভালবাসাকে পাশ কাটিয়ে স্যার যেতে পারেন না, ঐ কালো আকাশের ওপাশে যিনি আছেন, এতো মানুষের দোয়া তিনি ফেলে দিতে পারবেন না। স্যার, আপনাকে ফিরে আসতেই হবে।

[ যিনি না থাকলে এই ই-বুক প্রকাশই হত না তিনি আমাদের স্বপ্নজয় ভাইয়া। ভাইয়া, আপনাকে অনেক অনেক বেশী ধন্যবাদ। গুরুচন্ডালী দোষে দুষ্টু এই ধন্যবাদ গ্রহণ করবেন, আশা করি। আর বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই জিকুবাই (জিকসেস), কিনাদি (কি নাম দিব) ও সুপ্তিপুকে (বাবুনি সুপ্তি) ]

"স্বপ্নলোকের কারিগর" বইটি ডাউনলোডের জন্য ক্লিক করুন এখানে
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:২১
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×