আল্লাহর নামে জিহাদ করতে চাওয়া প্রিয় ভাই আমার,
আমার সন্দেহ আছে আসলেই তুমি এই লেখাটি পড়বে । কিন্ত তবুও লিখছি ভাই এবং বন্ধু হিসেবে তোমাকে কিছু বলার জন্য।
খুব সম্ভবত তুমি এখন তরুণ এবং একনিষ্ট। তুমি রেগে আছো, কেননা আমাদের ইসলাম ধর্ম এবং এর সম্পর্কে না জেনে কিছু লোক আবমাননাকর মন্তব্য করছে।যা তোমার কাছে ভাল লাগে না ।আসলে কি ভাইয়া এইটা আমারও ভাল লাগেনা।এর মানে এইনা এইটা বিচার করার দায়িত্ব আমার নিজের ।আমার অনেকের কথা ভাল লাগেনা এর মানে এইনা আমি তাদের সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করব ।
ইতোমধ্যে তুমি জান আমাদের মূল্যবোধেরও অবক্ষয় হয়েছে ।আমরা আমাদের ধর্ম নীতি নিয়ম থেকে অনেক দূরে চলে আসছি। তুমি কি জান আমরা আমাদের নৈতিকতাও ভূলে গেছি এখন ।তুমি কি জান গত ১লা বৈশাখে তোমার কোন বোনের সঙ্গে কিছু ছেলে খারাপ ব্যবহার করছে। তারা কিন্তু ধর্মীয় মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলছে এই জন্য এই কাজটা করতে পারছে। তুমি কি জান যারা ইসলাম নিয়ে বাজে কথা বলে তারা এই ধর্মটা খুব ভাল করে জানেনা।তারা আমাদের পবিত্র প্রতীক সমূহের অবমাননা করে। কিন্তু তারা জানেনা সব ধর্ম অন্য ধর্মকে আঘাত করতে নিষেদ করে দিয়েছে ,যদিও তারা কোন ধর্মের অনুসারি না।কিন্তু যারা নিজেকে নাস্তিক বলে তোমার ধর্মকে আঘাত করে কথা বলে তারা আসলে এন্টি ইসলাম বিরোধী। তোমার ধর্ম তোমাকে কাউকে হত্যা করার অনুমতি দেয়নি ।
আমি মনে করি যে, নিজের আত্মপরিচয়ের ব্যাপারে একজন বিশ্বাসী মুসলমান হিসেবে উম্মাহর এহেন অসুস্থতার প্রতি চিন্তা করা অবশ্যই মহৎ।কিন্তু এর মানে এইনা তুমি কোন খারাপ কাজ করে তার দোষের ভাগ সব মুসলিম উম্মার উপর চাপাবে ।
তুমি মুসলিম এই চিন্তা মাথায় রেখেই, তুমি কিন্ত অসাধারণ সব কাজ করতে পারো। নিজেতে সুশিক্ষিত রূপে গড়ে তুলতে পারো। হতে পারো সুপ্রতিষ্ঠিত একজন স্কলার কিংবা একজন ইসলামি চিন্তাবীদ।
তোমার কাজের দ্বারা তুমি আমাদের এই উম্মাহর জন্য অবদান রাখতে পারো। এই উম্মাহর যে, এমন বুদ্ধিবৃত্তিক, বৈজ্ঞানিক, শৈল্পিক পুনর্জাগরণ বড্ড প্রয়োজন। অবশ্যই ইসলামের জন্য চিন্তা করবে। এবং আমি তোমাকে পরামর্শ দিবো, আত্মোন্নয়নের জন্য এই চিন্তাকে অনুপ্রেরণা করে নাও।
জিহাদ কিংবা সংগ্রাম যেই নামই দাও না কেনো, অবশ্যই তাতে সামিল হও। কিন্ত এমন কিছুতে আত্মনিয়োগ করো যা শান্তি, শিষ্টাচার এবং সম্মানের সহিত তোমার পরিবার, সম্প্রদায় এবং উম্মাহর মান-মর্যাদাকে উন্নিত করে।
কিন্ত এর মধ্যেই সে সকল মানুষ থেকে সাবধান থেকো, যারা তোমাকে তোমার পথ হতে বিচ্যুত করতে চাইছে। হিংসাত্মক, নির্মম এবং রক্তপিপাসু কাজ করতে উৎসাহিত করছে। যেমনটা করে চলেছে ISILসহ নামে বেনামে থাকা জঙ্গি সংগঠনগুলো ।
ইসলামি সভ্যতার ইতিহাসে ISIL এর মতো করে জিহাদের নামে বাছবিচারহীন হত্যা কখনো ঘটেনি। কুরআন অবশ্যই আগের মুসলিমদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন এই বলে যে, "আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে।" সেই সাথে তিনি যোগ করে দিয়েছেন, “কিন্ত কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না।" (সূরা বাকারা - আয়াত ১৯০)। আমাদের মহানবী (স: ) এই বাড়াবাড়ির সীমারেখাও ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন, “বৃদ্ধ, নাবালক, শিশু অথবা নারীদেরকে হত্যা করোনা।"
মুসলিম ইতিহাসে সশস্ত্র জিহাদকে সবসময়ই যেদ্ধাদের মাঝে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। নিরীহ নাগরিকরা ছিলেন যুদ্ধের আওতামুক্ত। উপরন্ত মুসলমানরা কখনো জিহাদের লক্ষবস্ত ছিলোনা। তারা যেই গোত্রেরই হোক না কেন কিংবা যেই বিশ্বাসস ই তারা ধারণ করতেন না কেনো।
এ কারণেই, প্যারিস, মসুল কিংবা রাক্বার রাস্তায় নিরীহ বেসামরিক মানুষ হত্যা কখনোই জিহাদ হতে পারেনা হতে পারেনা নাজিমসহ কোন সঘোষিত নাস্তিক। এ তো ঠান্ডা মাথার খুন ছাড়া আর কিছুই নয়। এ তো মহাপাপ।
তুমি হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারো যে, তবে কেন আমার ধর্ম নিয়া খারাপ মন্তব্য করবে ? কি এমন আছে যা তাদেরকে অনুপ্রাণিত করছে। তাদের পথ কি তা তারা জাননা?
অবশ্যই তারা এমনটাই বলে এমনকি বিশ্বাসও করে যে আমাদের ধর্ম এবং পথটা ভূল। কিন্ত তুমি যদি একটু সাবধানতার সাথে তাদের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করো তবে দেখতে পাবে যে, তাদের কার্যকলাপ খুব অল্পই জ্ঞানের মিশ্রণ আছে। বরং বেশীরভাগ ক্ষেত্রে তা কেবল নিজের বানানো থিওরি দেয়া আছে।
কোন হত্যা মানবিকতার মাঝে পরেনা ।তুমি যাকে খুন করলে তার পরিবার বোঝে আপন কাউকে হারানোর বেদনা ।নিশ্চয় তুমি ভূল করছ ।আর কোন স্বাভাবিক সুস্থ মুসলিম হিসাবে আমি চাই প্রতিটা হত্যার বিচার হোক ।ইসলাম জঙ্গিকে সমর্থন করেনা ,সমর্থন করেনা কোন মুসলমান ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


