মনটা ভাল নাই। তার অন্তত ১০ টা কারন আছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, এর প্রতিটা কারনই হতে পারত অনেক আনন্দের। এই যেমন ধরুন পড়ালেখার ব্যাপারটা। প্রতি সপ্তাহে নিদেন পক্ষে একটা আইডিয়া পাই, যেটা দেখে মনে হয় পেপারটা এবার নামিয়ে দিতে পারব। এমন একখান পেপার লিখব যে, একেবারে গোলা, রিভিউয়ারের চোখ উলটে যাবে।. অসলো ইউনিভার্সিটি হারিকেন দিয়ে খুঁজবে, বাবা পি.এইচ.ডি টা নিয়ে যাও। কিন্তু সিমুলেসন আমার কথা রাখল না। কোন ভাবেই কার্ভটা উপরে উঠলো না! এভাবেই ল্যাবের সময়টা কাটে আশা-নিরাশার সিমুলেসন করে।
অনেক আশাহত বেদনা নিয়ে বাড়িফিরি। ভাবি, পড়াশোনা গোল্লায় যাক, নিজের বউ-বাচ্চা নিয়ে অন্তত আজকের দিনটা ভাল থাকি। বউকে বল্লাম, বউ চল বাইরে কোথাও যাই মন ভাল হবে। চলো দিপু ভাইয়ের বাসায় আড্ডা দিয়ে আসি। মানুষ ভাবে এক হয় আরেক। বউ বলে, "আচ্ছা, তুমি মানুষের বাসায় খাওয়ার জন্য পাগল কেন? তোমার পেটের সাইজ দেখছ??" ভাল মেজাজটা ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে আবার ল্যাবের দিকে চলেগেল। বউকে ২য় বার সাধাসাধিও করতে ইচ্ছা হলো না। অথচ, বউ রাজি হলে সন্ধ্যায় রসালো একটা আড্ডা হতে পারত।
বউএর কাছে বাউন্সার খেয়ে আবার কম্পউটার নিয়ে বসলাম। যথারীতি মেইলচেক, বিডিনিউজ, সামু, ফেসবুক চেক করলাম। আসলে ল্যাবে তো সারাক্ষন তাই করি। আগেই জানি ওই গুলোতে কি আছে। শুধু কনফার্ম হওয়া, আর কি। প্রতি ৫ মিনিটে একবার মেইল, ১৫ মিনিটে বিডিনিউজ, ২০ মিনিটে একবার সামু আর ৩০ মিনিটে ফেসবুক, এইটা একটা মুখস্ত রুটিন।তারপর ক্রিকইনফো খুল্লাম। ইসস্। ইংলিশগুলো আউটই হয় না! ভেতরে পড়লাম ৩টা নির্ঘাত আউটের আবেদনে আম্পায়ার সারাদেয় নাই। কেন দেয় নাই? দিলেই কিন্তু বউ-এর উপর রাগটা মাটি হয়ে যেত। বউকে তেল দিয়ে বাইরে নিয়ে যেতাম। মনটা ভাল হয়ে যেত। কে জানে, ফুরফুরে মেজাজের বদৌলতে আরেকটা গ্রাউন্ডব্রেকিং আইডিয়া মাথায় চলে আসত।
কিন্তু....।. শুধু মাত্র, এই একটা কিন্তুর কারনে মনটা ভাল হতে পারল না।