somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রস্তাবিত সম্প্রচার নীতিমালা ২০১১: আদিম গুহামানব যুগে প্রস্থান করতে চাই!

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১১ রাত ২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রস্তাবিত সম্প্রচার নীতিমালা পড়ার পর অনেক দিন বেকুবের মত ভেবেছি! কোন কুল কিনারা না
পেয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আদিম গুহামানব যুগে প্রস্থান করিব!
প্রস্তর দিয়া শিকার করিব, মনের ভাব আকারে ইঙ্গিতে প্রকাশ করিব, বনের রাজা ব্যাঘ্র মহাশয়ের পূজা করবো।
এছাড়া আর কোন গত্যন্তর আছে বলে আমার মনে হয়না! যেহেতু আমরা সভ্য সমাজে বসবাসের উপযোগী নই, সেহেতু আমাদের রশি দিয়ে বেঁধে রাখতে হবে!
আমরা গরু-ছাগলের মত ভেঁ-ভেঁ,হাম্বা-হাম্বা করব আর মাথা দোলাবো।


ই রকম একটা আবেগ তাড়িত আবেদন নিয়ে অতি উৎসাহী কিছু নীতিনির্ধারক অতি সম্প্রতি জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছেন!
গণতন্ত্র,বাক স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মন্দা,বেকারত্ব নিরসনে,ক্ষুধা-দরিদ্রতা নিরসনে নির্বাচিত সরকারগুলোর ব্যর্থতায় রাজনৈতিক দলগুলোর এবং এর নেতৃবৃন্দদের
অহরহ সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয় এবং এটাই স্বাভাবিক।

এই যে আলোচনা-সমালোচনা এর থেকেই সবাই ভুলগুলো শুধরে নিলে আইন করে অধিকারগুলো হরণ করার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমরা মনে করিনা।
প্রস্তাবিত এই নীতিমালাকে সম্মান কিম্বা সাধুবাদ জানিয়ে এ পর্যন্ত কেউ পক্ষে তার সাফাই গেয়েছে বলে আমি দেখিনি, সমাজের সর্বত্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এরপরও গুঞ্জন আছে এই নীতিমালাটিও আইন আকারে পাশ হতে যাছে।
এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর কিম্বা পরিকল্পনাকারীরা ভালো জানবেন।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এমন অনেক নীতিমালা বা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে যেখানে জনমতের প্রতি শ্রধ্বাবোধ দেখানো হয়নি।

অনলাইন সংবাদ মাধ্যম,সংবাদ পত্র,বেসরকারি চ্যানেলগুলো সবাই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সম-অংশীদার। সবাই স্বাধীন দেশের নাগরিক। স্বাধীনতা ভোগ করার সুবিধা সবারই আছে।
একটি গণতান্ত্রিক দেশে এমন চিত্র-ই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
যদিও কতিপয় সংবাদপত্র,সংবাদ-সেবী,সুশীল সমাজের একটা অংশ জাতীয় জরুরি মুহূর্তে, জাতীয় নৈরাজ্যে এগিয়ে না এসে একপেশে মন্তব্য করে, হলুদ কিম্বা অপ-সাংবাদিকতা করে তথ্য বিকৃত করে অনেক ঘটনার, আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন, তারপরও বলি মিডিয়ার স্বাধীনতায় কোন সরকারের হস্তক্ষেপে কখনোই সফলতা বয়ে আনেনি, আনতে পারেনা।
তা দেশের বঞ্চিত, অবহেলিত জনগণের কথাই হোক, গণতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্রেই হোক।

প্রস্তাবিত নীতিমালার যেসব বিষয়ে আপত্তির যথেষ্ট কারণ রয়েছে যেগুলো পড়লে মনে হয় সরকারের ভেতর একটি গুষ্ঠি ক্রমশ স্বৈরাচারী মনো ভাবাপন্ন হয়ে উঠছে, কিম্বা উঠতে চাইছে!
এরা দেশপ্রেমিক ধ্বজাধারী অশুভ-শক্তি বৈ আর কিছু নয়!
প্রস্তাবের এক যায়গায় বলা হয়েছে,
" রাজনীতির বিষয়ে নেতিবাচক কিছু প্রচার করা যাবে না।"
"সরাসরি বা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোন রাজনৈতিক দলের বক্তব্য বা মতামতও প্রচার করা যাবে না।"

এটা গণতন্ত্র চর্চার প্রতি প্রথম বাধা বা হস্তক্ষেপ বলে আমি মনে করি,,আগই বলেছি যার যার মত প্রকাশের স্বাধীনতা তার আছে। তার বক্তব্য জনগণের কাছে পৌঁছানোর অধিকার
আছে বা থাকা উচিত।
জনগণের চোখ তো বাঁধা থাকছে না! ফলে ভাল-মন্দ স্থির করার দায়-ও জনগণের উপরই বর্তায়।
উল্লেখ্য সবগুলো প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে নিজস্ব মিডিয়া, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আছে বলে আমি মনে করি।

এরপর বলা হয়েছে:
"বেসরকারি সম্প্রচারের উদ্দেশ্যে পরিবেশিত অনুষ্ঠান প্রচারের ক্ষেত্রে খসড়া নীতিমালায় সম্প্রচারে ১৯৬৩ সালের ফিল্ম সেন্সরশিপ আইন অনুসরণের কথা বলা হয়েছে অ্যাক্টের অধীনে প্রণীত বিধি বা নীতিমালা অনুযায়ী কোন অনুষ্ঠান প্রচার করা যাবে না।"
"প্রস্তাবিত নীতিমালায় উল্লেখ না থাকা সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তথ্য মন্ত্রণালয়।"

অর্থাৎ নীতিমালায় উল্লিখিত না থাকা কিছু কাল্পনিক বিধান যাকে "কালো আইন" হিসেবে অভিহিত করা যায়। এখানে সরকারের মনোভাব কেমন সেটা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হতে হবে কি!


আরেকটি অংশে বলা হয়েছে:
"...কিংবা একটি বন্ধু ভাবাপন্ন বিদেশী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এমন ধরনের প্রচারণা যার ফলে সেই রাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার সুসম্পর্ক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আছে এমন অনুষ্ঠানও করা যাবে না।"

আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। যে আমাদের সীমান্তের তিনদিক ঘিরে আছে, ১৯৭১-র মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশটির অনেক অবদান আছে। ভারত আমাদের বন্ধু ,আমাদের প্রতিবেশী।
কথা হচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে সীমান্তে কাঁটা তারের বেড়া দিয়েছে,আমাদের ছিটমহলে বন্দী করে রেখেছে,
আমাদের ৩ বিঘা করিডোর বুঝিয়ে দিচ্ছেনা, আমাদের প্রাপ্য পানির ন্যায্য হিস্যা না দিয়ে, সীমান্তে পাখির মত মানুষ মারছে এসব প্রচার করা হলে বন্ধুত্ব নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে,
তাই বলে কি আমরা চুপ করে থাকব!

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন ," খসড়া নীতিমালাটি অনলাইনেও দেওয়া হবে। এ বিষয়ে সাধারণ মানুষ মতামত দিতে পারবেন। অনলাইনে পাওয়া ভালো ও গুরুত্বপূর্ণ মতামত কমিটি বিবেচনায় নেবে।"
সম্প্রচার নীতিমালা যদি হয় বাক-স্বাধীনতার উপর খড়গ তা হলে বলতে হবে গণতন্ত্র তোমার মুক্তি এখনও হয়নি। স্বাধীনতার সুফল এখনও জনগণের কাছে পৌঁছেনি।
আমি আমার মতামত জানালাম।
আমার সাথে আর কেউ তাদের মতামত শেয়ার করবেন কি !
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১১ রাত ২:১০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×