somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তর্ক থেকে কেউই শেখে না, সেও না আমিও না

২৯ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাতে ভালো ঘুম হয়নি। আবার ভালো কাজও হয়নি। কিন্তু টেবিল চেয়ারে বসে ছিলাম প্রায় রাত ২ টা পর্যন্ত। সকালবেলা বসে বসে একটু হিসেব মেলাতে চেষ্টা করলাম। দেখলাম, খুব অল্প সময় কাজের পেছনে ব্যয় করেছি। বাকি সময়টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেজবুকে।


সকালবেলা মনে হচ্ছে রাতের সেই অধিকাংশ সময় আমি কিভাবে ব্যয় করেছি? একজন বিটিসিএল এর একটা আইপি কলিং অ্যাপের লিঙ্ক শেয়ার করেছেন। লিঙ্ক থেকে কেউ অ্যাপ ইনস্টল করলে রেফারেল কমিশন দেওয়ার কথা। যদিও অ্যাপটা কোনো কমিশন আপাতত দিচ্ছে না।

ছেলেটা যে গ্রুপে লিঙ্ক শেয়ার করেছে সেটা ছিল মূলত একটা টিভি দেখার অ্যাপভিত্তিক। আর গ্রুপটা মূলত সেই গ্রুপেরই নিজস্ব একটা অ্যাপ সম্পর্কিত। তাই মনে হলো ভুল জায়গায় পোস্ট দিয়েছে। কমেন্ট করে বসলাম, যতই চাপাচাপি করেন (একটা টিভি বিজ্ঞাপনে দেখেছিলাম) রেফারেল কমিশন পাবেন না।

এই কমেন্টের রিপ্লাইয়ে ছেলেটা সেই বাজেভাবে কমেন্ট করে বসল। যেটা হয়তো না করলেও পারত। এরপর সে যা বলত, তাতে বোঝালো অ্যাপটা সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই নাই। অথচ সে ছেলেটাই ভুলভাল কথা বলতেছিল অ্যাপটা সম্পর্কে। মোটামুটি এক রকম তর্কে জড়িয়ে পড়লাম। যদিও একেবারে অল্প বয়ষ্ক একটা ছেলে। এখনো কলেজের গণ্ডি পেরোয়নি। সামনে দাঁড়িয়ে কথা বললে হয়তো আমার কথা মাথা নিচু করে শুনতো। কিন্তু আমি থাকি কুড়িগ্রাম, সে থাকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে। আমাকে সম্মান না দিলেও তার চলবে। আমি দেখলাম আমার পিঠের ভার্চুয়াল ছাল এখনো কিছুটা বাকি আছে। তাড়াতাড়ি কমেন্ট রিমুভ করে দিলাম।

এখানেই মাথাটা একটু গরম হয়ে আছে। এরপর দেখলাম, আমার ফ্রেন্ডলিস্টের এক ছেলে একটা পোস্ট দিয়েছে। সেখানে তারই এক শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে কমেন্ট করছে। সেখানে অনেক শিক্ষার্থী (যাদের পড়াশোনা ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শেষ হয়েছে ও শেষ হয়নি উভয়ই) শিক্ষকের বিপক্ষে কথা বলতেছে। দালাল থেকে শুরু করে যেভাবেই আঘাত করা যায় করতেছে। শিক্ষককেও দেখলাম, কিছু কিছু কথা অতিরিক্ত বলতেছেন। চট করে আমিও সেখানে ঝাপিয়ে পড়লাম শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

যদিও আমি মনে করছি আমি আমার দিক থেকে দুটো ঘটনাতেই সঠিকই ছিলাম। শিক্ষকের সামনে দাঁড়ালে আমিও মাথা নিচু করে সব শুনে যেতাম। কিন্তু অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। হয়তো আমার চেয়ে মাত্র কয়েক বছরের সিনিয়র হবেন। আবার নাও হতে পারেন। তাই হয়তো চট করে তর্কে লেগে গেলাম।

লাভের লাভ আসলে কি হলো। প্রায় সারারাত কাটালাম তর্কে। এতে যা হলো-

১। প্রথম ছেলেটার সাথে আমার হয়তো কখনো দেখাই হবে না। কারণ তার আর আমার মাঝে দূরত্ব অনেক।

২। স্যার যে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন সেখানে আমার খুবই ঘনিষ্ট এক আত্মীয়ও চাকুরি করেন। তাই তার সাথে সেখানে আমার কখনও যাওয়ার সুযোগও হতে পারে। তখন হয়তো সেই স্যারের সাথেও দেখা হয়ে যেতে পারে। দেখা হলে, হয়তো সেই স্যারের অভিব্যক্তি খুব একটা ভালো থাকবে না।

ভাবলাম, এভাবেই কি তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা আমাদের শত্রু বাড়িয়ে তুলছি? এজন্যই কি তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট, ভিডিও, কমেন্ট ইত্যাদির কারণে জ্বালাও, পোড়াও শুরু হয়? তারচেয়েও বড় কথা মনের অজান্তেই কি আমরা আমাদের শত্রু বাড়িয়ে তুলছি না? সকাল হতে হতে বারবার মনে হচ্ছে, দরকার কি ছিল দুজন লোকের সাথে তর্কে জড়ানো? যে লোকগুলো আমাকে চেনেই না।

প্রতিজ্ঞা করলাম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব কম সময় দিব। আর হুটহাট কোথাও কমেন্ট করে তর্কে জড়াবো না। কারণ তর্ক দেখছি চলতেই থাকে। শেষ আর হয় না। তর্ক থেকে কেউই শেখে না, সেও না আমিও না। নিজস্ব গণ্ডির ভেতর যেসব গ্রুপ আছে আর পরিচিত বন্ধু বান্ধব আছে, আর যেখানে যথাযথ মডারেশনের ব্যবস্থা আছে সেখানে বিচরণ করব।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:১৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×