আজকে বাংলাদেশের একটি সাম্প্রতিক সমস্যার কথা তুলে ধরছি।তা হল স্ক্যান্ডাল।অনেক ভাবেই আপনি এর শিকার হয়ে উঠতে পারেন,জীবনটা হয়ে উঠতে পারে বিষাদময়।তাই এখনি সময় এসেছে সচেতন হওয়ার।আমাদের সচেতনতা এটাকে নির্মূল না করতে পারলেও অন্তত কমিয়ে দিতে পারবে।
স্ক্যান্ডাল কি?
স্ক্যান্ডাল হল একপ্রকার অভিযোগ যা আপনার খ্যাতি বা সম্মান বিনষ্ট করতে চায় বা করতে পারে,তা সত্যি হোক আর না হোক না কেন।আর তা কোন ভিডিও,ছবি,হাতের লেখা,অডিও কিংবা অন্যভাবে প্রমান করতে চাইবে যে আপনি কাজটি করেছেন।সেক্ষেত্রে সেটা সত্যও হতে পারে , আবার ডিজিটাল কারসাজি এর মাধ্যমে এডিটেড এবং ভুয়াও হতে পারে।
মিথ্যা স্ক্যান্ডাল থেকে বাচার উপায়ঃ
মিথ্যা কলংক থেকে বাঁচার কোন উপায় আমার জানা নেই।এর থেকে বাচতে হলে সম্ভবত আপনাকে গুহায় চলে যেতে হবে।আর আদিম মানুষ এর মত চলতে হবে।আর যা এ যুগে সম্ভব নয়।কারন আমরা নেট ইউজ করব,ফেসবুক ইউজ করব,আমাদের ছবি বিভিন্ন স্থানে আপলোড করব।সুতারাং এটা সম্ভব নয়।এটা বাদ দিতে হবে।
মিথ্যা স্ক্যান্ডালগুলো দেখলেই বুঝা যায়।সুতারাং এর থেকে বাচার আপাতত কোন দিকনির্দেশনা দিতে পারলাম না।
সত্য স্ক্যান্ডাল যেন বের না হয় তার জন্য আমাদের করনীয়ঃ
১।ফেইসবুক এবং বিভিন্ন সোশাল সাইটঃ
ফেইসবুক না থাকলে জাত যায়!!!!এটা এখনকার আপু ভাইয়াদের সময় কাটানোর অন্যতম মাধ্যম।আপনি কি জানেন শুধু মাত্র ২-৩ জন অপরিচিত মানুষ আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকলেই চলে।আপনার একাউন্ট হ্যাক করা যাবে।তাছাড়া ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ছবিতে সবার এক্সেস দিবেন না।ফেইসবুকের ছবি দেখার নতুন স্টাইলের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারলে f5 টিপলে পুরাতন স্টাইলে চলে যাবে।আর ছবি কপি করা তো দুই ক্লিকের ব্যাপার।তাছাড়া বিভিন্ন সাইটে আপনার ছবি দেখার নিয়ন্ত্রন শুধু মাত্র বন্ধুদের কেই দিবেন অন্য কাউকে নয়।
দাওয়াইঃ
এখনি প্রাইভেসি সেটিং চেঞ্জ করুন
ক্লিক করুন
friends only তে apply করুন।
আর যাদেরকে কে চিনেন না তাদের অতিসত্তর ছেটে ফেলুন
এখানে গিয়ে ছাটুন
২।ছবি তোলা সমাচারঃ
ক।নিজেঃ
দেখেলেন বাজারে অমুকের ভিডিও আসল।খুব ভাল লাগল।আপনি নিজে নিজের কিছু প্রাইভেট ছবি তুললেন আর দু একদিন পর আপনার মোবাইল ছিনতাই বা চুরি হয়ে গেল!
খ।ভাই-বোন/নিকট আত্মীয়ঃ
আপনি আপনার বোনের ছবি তুললেন।দেখা গেল সে রোদে চুল শুকাচ্ছে।আপনার কাছে বোন হতে পারে,কিন্তু আপনার বন্ধুর কাছে সে একজন নারী।সে আপনার বোনকে সম্মান নাও দেখাতে পারে।আপনার মোবাইলের ব্লুথুড দিয়ে সে যে কোন সময় এসব ছবি নিয়ে যেকোন সাইটে আপলোড কিংবা ফেইসবুকে ফেইক প্রোফাইল বানাতে পারে।আর ওসব সাইটে আরও আজেবাজে ছবির সাথে আপনার বোনের ছবি।আপনার অন্য কোন আত্মীয় যদি এসব দেখে বুঝুন অবস্থাটা কেমন হবে?
গ।বন্ধু-বান্ধবীঃ
সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।খারাপ বন্ধু-বান্ধবী আপনাকে যেকোন সময় বেকায়দায় ফেলে আপনার কিছু ছবি তুলতে পারে।অনেক ক্ষেত্রে আপনার ফ্রেন্ড আপনার প্রতি ইর্ষান্বীত হয়ে আপনার আলুথালু বেশের ছবি ছড়িয়ে দিতে পারে।আর কেউ না কেউ এসব ছবি কোন সাইটে আপলোড করে দিলে ,তা এক সাইট থেকে আরেক সাইটে পারমানবিক বিক্রিয়ার মত দ্রুত ছড়াতে থাকবেই।
ঘ।প্রেমিক-প্রেমিকাঃ
ভাল্বাসা ভালু না। আর যদি কাউকে ভালবেসে ফেলেন,তাহলে সত্যিকার ভাবে ভালবাসবেন।বিয়ের আগে শারিরীক সম্পর্ক তৈরি করবেন না।কোন হোটেলে গেছেন তো আরও ধরা,সেখান থেকে গোপনে ভিডিও করা হতে পারে।বন্ধুর বাসায় গেলেন সেখানে যে প্রিয় বন্ধুটি আপনাদের ছবি তুলছে না এটা কি আপনি বলতে পারেন । কয়েক হাজার টাকায় ই স্পাই ক্যাম পাওয়া যায় এবং সেটা খুব সহজ লভ্য। আপনি বুঝবেনই না একটা ফুলদানি কলম এর মত নিষ্পাপ কিছু আপনাকে ভিডিও করছে ।
ঙ।স্বামী-স্ত্রীঃ
স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে উজার করে দেওয়ার সময় ছবি তুলেন কিংবা ভিডিও করেন অবসর সময়ের জন্য বিনোদন হিসেবে দেখার জন্য । আরে ভাই লাইভ জিনিসের ভিডিও কইরা কি লাভ বলেন ? আর উপরের যেকোন উপায়ে ভিডিও কিংবা ছবি যেকোন সময় নেটে চলে আসতে পারে।
অন্যান্যঃ
বন্ধু-বান্ধবী কিংবা লাভার একে অন্যের সাথে নানা অপ্রীতিকর কথা বার্তা এবং একান্ত সময় শেয়ার করেন।যা বলুন বিএফ-জিএফ কে সরাসরি বলুন, ফোনে গুজুর গুজুর ফুসুর ফুসুর করছেন তো ফাসছেন।কারন আপনার বয়ফ্রেন্ড টি যেকোন সময় অন্যের হয়ে যেতে পারে,(হরহামেশাই যা হচ্ছে()আর সে যদি আপনার অনুমতি না নিয়ে আপনাদের সংলাপ রেকর্ড করে ফেলে।বুঝেন কাহিনী কি হবে । আপনি তার কাছে ধরা । যে কোন সময় আপনার সাথে রেকর্ড করা অডিও টি প্রকাশ হয়ে যেতে পারে।
বয়ফ্রেন্ড এর মোবাইল ছিনতাই কিংবা তার অগোচরে কেউ অডিও নিয়ে নিতে পারে । আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় ছেলেটার কিন্তু কিছুই হবে না । কিন্তু আপু আপনার নামের সাথে একটা কলংক যুক্ত হবে।
দাওয়াইঃ
আপনি সব সামাজিক সম্পর্ক ছেড়ে দিয়ে রুপলালের মত গভীর অরন্যে কিংবা গুহায় চলে যান । পারবেন? অবশ্যই পারবেন না। এটা ছাড়া এ রোগের কোন দাওয়াই নেই। তবে কিছু সেমি দাওয়াই এর কথা বলতে পারি।
আপনাকে যা করতে হবেঃ
১।সচেতন হওয়া।সচেতন হোন
২।ব্যাক্তিগিত ছবি তোলা কমিয়ে দিন।একান্ত সময়ের ছবি তুলবেন না।
৩।ভাল মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করুন।হল ,মেস বা হোস্টেলে ভাল কারও সাথে থাকার ব্যাবস্থা করুন।
৪।আরে ভাই বউকে তো সবসময় ই পান।আবার ছবি তোলার কি হইল!!!???
৫।আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল বিক্রি করলে হার্ডডিস্ক এবং মেমরি কার্ড আপনার কাছেই রেখে দিন।হার্ডডিস্ক এবং মেমরি কার্ড থেকে ডাটা রিকভার করা যায় । আপনার ডিলেট করা কোন স্পর্শকাতর ডেটা পেয়ে গেলে ওরা আপনাকে যেকোন ভাবে ব্লাকমেইল করতে পারে । আর স্ক্যান্ডাল সেটা তো সময়ের ব্যাপার।
৭। কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে যেকোন সময় আপনি হ্যাকিং এর শিকার হতে পারেন । তাই আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জানুন এবং কমপক্ষে একটা ভালমানের এন্টিভাইরাস ব্যবহার করুন ।
৬।ভালভাবেই ভালবাসুন ,প্রতারনার আশ্রয় নিবেন না,আপনি যদি একটা মেয়ের সর্বনাশ করতে চান দেখা যাবে অন্য ছেলেও একইভাবে আপনার বোনের সর্বনাশ করছে।
আপনি কিংবা আপনার আপনজনের কাছে যেটা শোভনীয় দেখা যাবে বিকৃত রূচির মানুষদের কাছে সেটা চরম উপভোগ্য।সুতরাং নিজে সচেতন থাকুন অন্যকে সচেতন করুন আর দেশীয় সংস্কৃ্তির প্রতি আরও আস্থা রেখে পথ চলুন।আপনার পথ হবে সুগম ।
অনেক পড়লেন এবার একটা গান শুনুন ।প্রিয় শিল্পী হায়দার হোসেনের আমি ফাইসা গেছিঃ
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৫৫