somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোট ছোট কথামালা (২) বেইজ্জতি ঘটনা

০৬ ই জুন, ২০১২ রাত ৮:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৪। এই চুপ , দুষ্টামি করবে না

আগামীকাল ঈদ । আমরা সবাই খুব খুশি । শেষ মূহুর্তের গোছগাছ করছে সবাই । আমার পিচ্চি ভাইটাকেও (কাজিন) শিখিয়ে পড়িয়ে নেয়া হচ্ছে । আমাদের মসজিদের বাহিরে ঈদগাহে সবার সাথে সে ও যাবে । ঈদগাহে গিয়ে কথা বলা যাবে না , চুপচাপ থাকতে হবে , দুষ্টুমি করা যাবেনা ইত্যাদি ইত্যাদি সে খুব ভালোভাবেই পা নাড়াতে নাড়াতে মন দিয়ে শুনেছে । এবং বিজ্ঞের মত মাথা ঝাকিয়ে সব ঠিকঠাক ভাবে বুঝতে পেরেছে বলে সম্মতি দিয়েছে :|



সকালে গোছল-টোসল শেষ করে সবাই ঈদগাহে গেছি । পিচ্চির সাথে চিমটা –চিমটি করতে করতে হুজুরের ভাষন শুনলাম । হুজুর আবার খুব সময় সচেতন B-) । কাটায় কাটায় সাড়ে আটটায় ই নামাজে দাঁড়ালাম আমরা । হুজুর যখন নামাজে সুরা পড়া শুরু করছে তার একটু পরেই পিচ্চিটা হঠাৎ করে ওর আব্বুকে বলে উঠল ,

“হে হে হে , আব্বু আব্বু দেখ হুজুরে নামাজের মধ্যে কথা বলে । ”

আমরা তো লাজওয়াব ! ছোটরা অল্পবিস্তর হাসা শুরু করেছি তা দেখে পাকনাটা বলে , “এই চুপ । ঈদাহে দুষ্টামি করবে না ! ”



৫। আমরা না দাওয়াতে আসছি

আমার পিচ্চি ভাইটার সাথে এক দাওয়াতে গেছিলাম । যাওয়ার পর পরই শরবত আর হালকা নাস্তা খেতে দিল ওরা । পিচ্চিটা জোরে জোরে আমাকে জিজ্ঞেস করে , “সিফাত ভাইয়া আমরা না দাওয়াত খাইতে আসছি তাইলে তাইলে তারা পোলাও দেয় নাই কেন ? আমরা তো বাসা থেকেই নাস্তা করে আসছি B:-) :-P । ”

আমি আর কি বলব চুপ করে মুচকি হাসতাছি । পরে ওরা পিচ্চির কাছে ইজ্জত হানীর আগেই তাড়াতাড়ি করে আমাদের ডাইনিংইয়ে নিয়ে গেল । পোলাও আর কাবাব দিল । পিচ্চি ওর আম্মুরে কয় , “ আম্মু ওরা আমাদের ডিম দিচ্ছে না কেন ? আমরা কি শুধু কাবাব দিয়ে খেতে পারি B:-/ ! ”



বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গেলে তার কমন কিছু প্রশ্ন , আমাদের মিষ্টি দেয় নাই কেন ? দধি দিছে কিন্তু স্প্রাইট দেয় নাই কেন । তুমি না বাসায় থেকে একবার খেয়ে আসছ আবার খাও কেন ? খাসীর মাংস কোথায় ? ব্লা ব্লা ব্লা ।

খুব মনে হচ্ছে বাপরে বাপ খাওয়া নিয়ে এত খোঁজখবর করে পিচ্চি নিশ্চই সেইরাম খায় । আসলে সব কিছু নিয়া মাখাইয়া কয়েক লোকমা খেয়ে বলে , “ আমরা না বাসা থেকে খেয়ে আসছি । আর খাব না । আম্মু তুমি রাগ করিওনা 8-|। ”

আর ওর আম্মু ওর দিকে কটমট করে চেয়ে থাকে । বলে “আগামীবার একেবারে দুই দিন না খাইয়ে তারপর কোন দাওয়াতে নিয়ে যাব । ”


৬। আংকেল আংকেল :(

তখন আমার দাঁড়ি গোফ আস্তে আস্তে ঘন হওয়া শুরু করেছে । সেভ করা শুরু করিনি । আমার জন্য শার্ট কিনব , আপুকে নিয়ে মার্কেটে গেছি । ওখানে এক মুটো আন্টি তার পিচ্চি দুষ্ট বাবু আর মিষ্টি মেয়েকে নিয়ে কেনাকাটা করছে । আমরাও ঐ দোকানে গিয়ে শার্ট দেখছি । এর সাথে সাথে আমি দুষ্টটার সাথে দুষ্টামি আর মিষ্টিটার সাথে ভাব জমাচ্ছিলাম :!> । এটা সেটা জিজ্ঞেস করছিলাম ।



অনেকক্ষন দেখাদেখির পর আপুর একটা শাটঁ পছন্দ হইছে তাই আমারে ডাকল , সিফাত দেখ তো এ শার্ট টা পছন্দ হয় কিনা । আমি চেয়ারে বসলাম । আপুরে বললাম তোমার পছন্দ হইলেই হল আমি আর কি দেখব তোমার পছন্দই তো অনেক ভালো (পাম দিলাম আর কি যাতে ভালা কইরা নাস্তা করায় :P ) ।

পিচ্চিটা আমারে ধাক্কা দিয়া বলে আমি আংকেলের শার্ট দেখব , আমি আংকেলের শার্ট দেখব । আমি তো বেকুব হয়া গেলাম কিরে আমারে আংকেল কয় ক্যান ? আমারে মহা বেকুব বানায়া দিয়া পিচ্চির বইনটা কয়া উঠল আংকেল এটা নিয়ে নাও সুন্দর আছে । তোমাকে দারুণ মানাবে :-*

এ এক বাক্যেরই শক্ত আঘাতেই আমার হৃদয় ভেঙ্গে খান খান হয়া গেল :(( :(( । আমারে আংকেল কইছে তাইলে কেমনে কি হইল /:) ? আমি উঠে দাঁড়ালাম আর আপুরে বললাম আপু এ শার্ট আমার ভালো লাগেনা , এটা কিনব না । চল অন্য দোকানে যাই । সেদিন আর শার্ট কেনা হয় নাই । সে কুফা দোকানেও আর কোনদিন যাই নাই । যাইতেও চাই না । ;)

ফিরে দেখাঃ ছোট ছোট কথামালা (১) বেইজ্জতি কান্ড
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৩৩
৩৭টি মন্তব্য ৩৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×