somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশু কিশোর উন্নয়ন বা সংশোধনী কেন্দ্র---বন্দীশালার পাখিদের কথা

০৩ রা মে, ২০১২ রাত ৯:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

:তোমার নাম কি?
:মিলন।
:তোমার বাড়ি কোথায়?
: নাই.....
:নাই?
: না নাই...
:চকলেট খাবে?
: খাবো। ব্যাগ থেকে মার্সের একটা ছোট্ট প্যাক বের করে দিলাম ওর হাতে।
: আচ্ছা তোমার কি করতে সবচাইতে বেশী ভালো লাগে?
: টিবি দেখতে। ঐ যে টিবির মইধ্যে বই দেয়না? সিনেমা। সেই সব দেখতে বেশী ভালা লাগে।
: তুমি গান জানো? গাইতে পারো?
: হ্যা পারি।
: শোনাবে একটা গান?
৮/৯ বছরের মিলন এইবার একগাল হেসে, গলে যাওয়া চকলেট মাখা হাতটা চেটেপুটে, রংচটা নীলরঙের প্যান্টের উপর নির্দ্বিধায় মুছে নিলো। তারপর গান ধরলো।

হারজিৎ চিরদিন থাকবে তবুও এগিয়ে যেতে হবে।
বাঁধা বিঘ্ন না পেরিয়ে বড় হয়েছে কে কবে???
.......................................................
রতন বাদশাহ বাবুল বাচ্চু কেউ আলাদা নয়
বন্দিশালার পাখি মোরা সেই তো পরিচয়........

আমি অবাক!! কে শেখালো ওকে এই গান? তার কথায় জানলাম। ওদেরকে দেখানো হয়েছে এই বাংলা সিনেমাটা। সাদাকালো এত পুরোনো দিনের সিনেমা! সিনেমার নাম জানিনা তবে গানটা শুনেছি অনেকবার আমিও। ইউটিউবে খুঁজে পেলাম গানের লিন্কটা।
http://www.youtube.com/watch?v=otX2_2uB5mk

গিয়েছিলাম একদল শিশু মনোবিজ্ঞানীদের সাথে কিশোর অপরাধ সংশোধনী কেন্দ্রে। যদিও ওরা অপরাধী তবুও ওরা শিশু অথবা কিশোর আর তাই ওদের জন্য জেলখানার শাস্তি বা বড়দের আদালতের শাস্তি প্রযোজ্য নয়। বরং স্নেহ মমতা, ভালোবাসায় ও যত্ন নিয়ে বুঝিয়ে, কিছুটা কঠোর নিয়ন্ত্রনে ওদেরকে সংশোধন করে তোলা সম্ভব! এ ধারণা থেকেই ১৯৭৮ সালে ২০০ কিশোর অপরাধী রাখার উপযোগী করে টঙ্গীতে গড়ে উঠেছে কিশোর অপরাধ সংশোধনী কেন্দ্রটি।

এ কেন্দ্রটির আগেও ঢাকা জেলার রূপগঞ্জ থানার মুড়াপড়া জমিদার বাড়িতে “বোষ্টাল স্কুল” নামে অবাধ্য কিশোরদেরকে সুস্থ্য স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এমনি একটি আবাসিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো। ১৯৭৮ সালে টঙ্গীতে বোষ্টাল স্কুলের আদলেই দেশের এই একমাত্র “জাতীয় কিশোর অপরাধী সংশোধন প্রতিষ্ঠান” তৈরী করা হয়। ২০০৩ সাল এই প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় “কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র” । সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে।

শুরুর দিকে অপরাধীদের বেশির ভাগই ছিল অভিভাবকদের অভিযোগে অভিযুক্ত। পড়শোনায় অমনোযোগী, অবাধ্যতা এমন সব কারণে মা বাবারা নিজেদের ইচ্ছায় এসব সংশোধনীকেন্দ্রে শিশুকিশোরদেরকে পাঠাতেন। কিন্তু ২০১০ সাল থেকে দেখা যায়, ১০ ভাগ অভিযোগ আসছে অভিভাবক হতে আর বাদবাকি ৯০ ভাগ অভিযোগই পুলিশের। ইদানিং ১৬ বছরের নিচে যাদের বয়স তারা চুরি, ডাকাতি, খুন চাঁদা আদায় এসবসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। মা-বাবার সামান্য নিয়ন্ত্রণটুকু যেন নেই তাদের উপরে । আজকাল ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের অপরাধপ্রবণতাও অনেক অনেক বেশী বেড়েছে।

বাংলাদেশে সরকারীভাবে রয়েছে তিনটি কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র। এর একটি ২০০ আসন বিশিষ্ঠ টঙ্গী, গাজীপুরে, দ্বিতীয়টি ১৫০ আসন বিশিষ্ট পুলের হাট, যশোরে এবং তৃয়টি কিশোরীদের জন্য ১৫০ আসন বিশিষ্ট কোনাবাড়ী, গাজীপুর। প্রতিটি কেন্দ্রই এসব শিশু, কিশোরদের কাউন্সিলিং, মটিভেশন ও গাইডেন্সের মাধ্যমে তাদের মানসিকতার পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করছে। পড়ালেখার পাশাপাশি কারিগরি প্রশিক্ষনের মাধ্যমেও সুস্থ্য সুন্দর স্বাভাবিক জীবন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। শিশু আইন, ১৯৭৪ এবং শিশু বিধি, ১৯৭৬ এর আলোকে শিশু ও কিশোর,কিশোরীদের উন্নয়নে কাজ করা হয়।

কিভাবে এখানে আসে এই শিশুকিশোরেরা???
১) শিশু আইন, ১৯৭৪ এর ৩২ ধারা অনুযায়ী দুঃস্থ, অবহেলিত, অভিভাবকহীন ও নির্যাতিত শিশু/কিশোরদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আদালতের আদেশ অনুযায়ী।
২) শিশু আইন, ১৯৭৪ এর ৩৩ ধারা অনুযায়ী অনিয়ন্ত্রিত বা নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত শিশু/কিশোরকে পিতা-মাতা বা বৈধ অভিভাবক কর্তৃক কিশোর আদালতে মামলা করা ও আদালতের আদেশের মাধ্যমে।
৩) শিশু আইন, ১৯৭৪ এর ৫৫ ও ৫৬ ধারা অনুযায়ী বিভিন্ন আইনে পুলিশ কর্তৃক আটক হয়ে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে বা মেয়াদপ্রাপ্ত সাজা হলে।

কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের কার্যক্রমঃ-
১. কিশোর আদালত
২. কিশোর হাজত বা রিমান্ড হোম
৩. সংশোধনী কার্যক্রম।
অভিভাবক কর্তৃক অনিয়ন্ত্রিত বা নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত শিশু/কিশোরকে কিশোর আদালতে মামলার মাধ্যমে এই কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন বছর রাখা যায়। ১টি কার্টিজ পেপার, ৫ টাকার কোর্ট ফি, অবাধ্য সন্তানের ৪ কপি ও অভিভাবকের ১ কপি সত্যায়িত ছবি এবং সন্তানের চরিত্র সম্পর্কে চেয়ারম্যান/কমিশনারের প্রত্যায়নপত্র জমা দিতে হয়।

আবাসন ব্যবস্থাঃ-
শিশু,কিশোরদের বয়স, আচার আচরন, মামলার ধরন বিবেচনা করে সোস্যাল কেইস ওয়ার্কারদের পরামর্শ মতে আলাদা আলাদা আসন বরাদ্দ হয়। বিছানাসহ বেডরুম, পর্যাপ্ত ইলেকট্রিক ফ্যান, নামাজের ঘর, বিনোদন কক্ষ, ইনডোর ও আউটডোর গেম, গোসলখানা এসব সুবিধা রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে তত্বাবধায়ক, সহকারী তত্বাবধায়ক, সোস্যাল কেইস ওয়ার্কার, সাইকিয়াট্রিক সোস্যাল ওয়ার্কার, হাউজ প্যারেন্টসহ রয়েছে আনুসঙ্গিক কর্মচারীবৃন্দ।

সংশোধনী কার্যক্রমগুলিঃ-
প্রত্যেক শিশু,কিশোরের ব্যক্তিগত ফাইল রাখা হয়। সোস্যাল কেইস ওয়ার্কার, সাইকিয়াট্রিক সোস্যাল ওয়ার্কার, প্রবেশন অফিসার এরাই এসব কাজ করে থাকেন। ব্যক্তি বা দলীয় সমাজকর্ম পদ্ধতীতে কিশোরদের সম্পর্ক উন্নয়ন করার পাশাপাশি তাদের শারীরিক ও মানষিক বিষয়গুলি বিবেচনা করা হয়, অভিভাবকদের সাথে কাউন্সিলিং করে সমস্যা চিহ্নিত করা হয়। চিহ্নিত সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তাদের স্বভাব এবং চরিত্রের পরিবর্তন করা হয়। প্রয়োজনীয় ট্রিটমেন্ট প্লান ও রিহেবিলেটেশন প্লান করে সেই অনুযায়ী শিশু, কিশোরদের চলার পরামর্শ দেওয়া হয় ও নিবিড় ফলোআপ করা হয়।

সাধারন শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, শরীর চর্চা, খেলাধুলা, চিত্তবিনোদন, ধর্মীয় কার্যক্রম, বাগান পরিচর্যা, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, ক্রীড়া প্রতিযোগীতা, জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়। অভিভাবকদের সাথে প্রতি মাসের ৭ ও ২২ তারিখে দেখা করবার ব্যাবস্থা আছে। কারিগরি শিক্ষার মধ্যে আছে অটোমোবাইল,কাঠ শিল্প, বিদ্যুৎ ও হাউজ ওয়ারিং ও সেলাই শিক্ষা। ইদানিং এখানে কম্পিউটার প্রশিক্ষনের ব্যাবস্থাও করা হয়েছে।। সাধারন শিক্ষার আওতায় ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষা প্রদান করা হয়।

এখানে শিশু কিশোরদেরকে সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করতে অভ্যস্থ করা হয়। যেমন- প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে পিটি-প্যারেড তারপর নাস্তা, নাস্তার পর এ্যাসেম্বলী শেষে স্কুল/ট্রেড শিক্ষা। দুপুরে ঘন্টা দুয়েক বিশ্রামের পর আউটডোর খেলাধুলা, সন্ধায় হাউজে প্রবেশ, এশার নামাজের পর খাওয়া শেষে লেখাপড়া, অতঃপর টিভি প্রোগ্রাম দেখার পাশাপাশি ইনডোর গেম, রাত ১১.৩০ এ বাধ্যতামূলক ঘুম।

সমস্যাগুলো-
১।নির্ধারিত সরকারী ডাক্তার নেই,
২। মাথাপিছু মাত্র ৫১ টাকার দৈনিক খাবারের মান ভালো না
৪। মোবাইল সার্ভিসিং, ফ্রিজ ও টিভি মেরামত, পোল্ট্রি খামারের মত সময়োপযোগী ট্রেডগুলো চালু করা হয়নি,
৫। পুলিশ কেসে আটক এবং অভিভাবকদের আবেদনের মাধ্যমে আসা কিশোরদের আলাদা আবাসন ব্যবস্থা নেই, ( অপরাধের ধরণ পুরোটাই ভিন্ন হওয়া সত্বেও)
৬। হাউজে দৈনিক পত্রিকার সরবরাহ নেই
৭। ৫ম শ্রেনীর পর সাধারন শিক্ষার ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত হয়নি,
৮। পর্যাপ্ত কিশোর আদালত না থাকায় দ্রুত মামলা নিস্পত্তি হয় না।

একটি কেসস্টাডি
বয়স বড় জোর ১২। গত বছরের ১২ জুন স্বামীবাগ থেকে ছয়টি ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গেন্ডারিয়া থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। এখন সে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে। মাসুদ( ছদ্দনাম) টাকা পয়সার অভাবে পড়াশোনা করতে পারেনি। পড়তো স্থানীয় করাতিটোলা স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীতে। দরিদ্র বাবা পড়ালেখার খরচ যোগাতে পারেনি। বাবা পড়াশোনা বন্ধ করিয়ে কাজ জুটিয়ে দিলেন লোহার রডের দোকানে। মাসুদ কাজ শুরু করে ধোলাইখালের নওয়া মিয়ার দোকানে। বেতন সপ্তাহে দুশ’ টাকা। সে ভাল কাজ করতে পারতো না, ভারী লোহার রড তোলা তার পক্ষে সম্ভব ছিলোনা। বকাঝকা, মারধোর প্রায় কপালে জুটতো তার। একদিন এলাকার বড় ভাই রুবেল তাকে ডেকে নেয়। কিনে দেয় জামা-জুতো। ভালো হোটেলে খাবার খাওয়ায়। একদিন ওরা ওকে একটি মোবাইল ফোন দেয়। এরপর তাকে দিয়ে ওরা কাজ করাতে শুরু করে। যেমন কারো কাছে চিঠি পৌঁছে দেয়া। কারো কাছে ছোট কোনও প্যাকেট দেয়া। এইভাবেই একদিন সে গ্রেফতার হয়। ইয়াবাসহ হাতে নাতে ধরা পড়ে।

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, কিশোররা কেউ নিজের ইচ্ছামতো বা সজ্ঞানে অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হয় না। এরা কারও না কারও দ্বারা ব্যবহৃত্ হয়ে থাকে। তাই তাদের সঠিক পথে ফিরে আসার পথ সুগম করতে হবে।


ড. মোহিত কামাল (মনোরোগ বিশেষজ্ঞ) এর মতে,
আমাদের কিশোরেরা অসহনশীলতা, অসহিষ্ণুতা সমাজ থেকে শিখছে। তারা সমাজে দেখছে যে বেশি আক্রমণাত্মক সে বেশি ক্ষমতাশালী। ইন্টারনেটের কারণে নারীর প্রতি রেসপেক্ট হারাচ্ছে। ব্রোকেন ফ্যামিলতে শিশু যখন পরিবারে অশান্তি দেখে তবে তার মধ্যে ফ্রাস্ট্রেশন কাজ করে। যার কারণে শিশু আগ্রাসী হয়ে ওঠে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের সামাজিক শিক্ষার দিকে আরো বেশি নজর দিতে হবে। সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এক্ষেত্রে মিডিয়ারও ভূমিকা রয়েছে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে শিশুদের দূরে রাখতে ভালো পরিবেশ ও ভালো গাইড দিতে হবে। অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।টেলিভিশন, গেমসে ধ্বংসাত্মক জিনিস দেখে তারা সে দিকে আগ্রহী হয়। তারা অস্ত্র ধরতে

আমাদের দেশের শিশু অপরাধের প্রধান কারণগুলোঃ-
আমাদের দেশে শিশুদের অপরাধের অন্যতম কারণ দারিদ্র্য। দরিদ্র শিশুরা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বড় হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিযুক্ত হয়। ফলে তাদের সহজেই অপরাধী চক্রগুলো ব্যবহার করতে পারে। পাশাপাশি এরা নিজেরাও ছোটখাটো অপরাধ করে থাকে জীবন ধারণের জন্য। অনেক সময় এদের পরিবারের সদস্যরাও এদের অপরাধের সদস্যরাও এদের অপরাধের সঙ্গে জড়িত করে।
এছাড়া শহুরে পরিবারের সদস্যদের ব্যস্ততার কারণে বাবা মা ও পরিবারের অন্যন্য সদস্যদের সংস্পর্শ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা। বাবা-মায়ের মধ্যে অপ্রীতিকর সম্পর্ক, ঝগড়াঝাটি, ডিভোর্স ইত্যাদিতে শিশুরা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। তাদের মাঝে অপরাধপ্রবণতা বেশি দেখা যায়।

পরিবার থেকে অতিরিক্ত আদর বা অতিরিক্ত শাসন, অবহেলা, লিঙ্গ বৈষম্য ইত্যাদি কারণেও শিশু অপরাধপ্রবণ হতে পারে। পরিবারের সদস্যদের উচিত শিশুদের যথেষ্ট সময় দেয়া, তাদের বন্ধু হয়ে ওঠা এবং সঠিক মানসিক বিকাশে সহায়তা করা। ধর্মীয় বা সামাজিক মূল্যবোধের শিক্ষাও অপরাধ প্রবণ হওয়া থেকে বিরত থাকে।

বন্ধু-বান্ধব ও সমবয়সী সঙ্গী শিশুদের আচরণের ওপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। শিশুরা যাদের সঙ্গে মিশে বা চলাফেরা করে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা থাকলে তারাও তা শেখে। পরিবারের সদস্যদের উচিত শিশুদের কর্মকান্ডের খোঁজখবর রাখা।

কোন শিশু বা কিশোর একবার অপরাধ করে ধরা পড়লে শাস্তি হোক বা না হোক, তাকে অপরাধী হিসেবে 'চিহ্নিত' করা হয়। বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এমনকি পরিবার থেকেও তাকে অবহেলা করা হয় বা বিভিন্নভাবে তার অপরাধের কথা মনে করানো হয়। আমাদের সমাজে ভুল স্বীকার করা বা সংশোধিত শিশু-কিশোরদের সহজভাবে গ্রহণ করা হয় না। ফলে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে তারা ফের অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ে। আইনের সঙ্গে সংঘর্ষে আসা শিশুদের প্রতি সমাজের সবার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হওয়া উচিত।

পৃথিবীর প্রতিটি শিশুই ঠিক এমন নিস্পাপ ও পবিত্র হয়েই জন্ম নেয়। এই রুঢ়, কঠিন পৃথিবী তাকে একদিন করে তোলে অপরাধী। বাবা মা ও সমাজের একটু অসাবধানতায় বা একটু অযত্ন অবহেলায় সুন্দরভাবে গড়ে উঠতে পারতো যে জীবনটা তা পন্কিলতার পাঁকে নিমজ্জিত হয়। আর একটি শিশুও যেন অপরাধমূলক কার্য্যক্রমে না জড়িয়ে পড়তে পারে সে ব্যাপারে
অভিভাবক ও সমাজের প্রতিটি মানুষের সচেতনতা অবশ্য কাম্য।

পৃথিবীর সকল বাবা, মা ও সকল শিশুর মঙ্গল কামনায় এ লেখাটি উৎসর্গ করা হলো।



http://www.shaptahik.com/v2/?DetailsId=3527
Click This Link
http://shishuprokash.com/groupreport/group202
http://www.amarblog.com/anulekha/posts/142195
Click This Link
Click This Link
Click This Link
বিশেষ কৃতজ্ঞতা- কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র, টঙ্গী, গাজীপুর।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১২ সকাল ১০:৩৯
১৫৮টি মন্তব্য ১৬২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না পারার কষ্টটা সমালোচনার কোন বিষয়বস্তু নয়

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

গতকালের একটি ভাইরাল খবর হচ্ছে কয়েক মিনিটের জন্য বিসিএস পরীক্ষা দেয়া হলো না ২০ প্রার্থীর !! অনেক প্রার্থীর কান্নাকাটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান এর নিয়ামানুবর্তিতার জ্ঞান বিতরনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×