somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্ষুব্ধ স্পিকারের রুলিং রেসলিং করতে চাইলে গায়ে তেল মেখে পল্টন ময়দানে চলে যান।

০৫ ই মার্চ, ২০১০ বিকাল ৫:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ জাতীয় সংসদে অসংসদীয় ভাষা ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি অসংসদীয় ভাষা, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন এবং শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ বুধবার সংসদে অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত মারমুখো মনোভাবের ঘটনাকে জাতির জন্য দুঃখ এবং লজ্জাজনক অভিহিত করার পাশাপাশি ওই ঘটনার জন্য সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যদের কঠোর ভাষায় তিরস্কার করেছেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে স্পিকার প্রয়োজনে তার দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন। তিনি বলেছেন, সরকার ও বিরোধী দল পরস্পরের সমালোচনা করতেই পারে। তবে সেটা হতে হবে শিষ্টাচার বজায় রেখে। কড়া হুশিয়ারি উচ্চারণ করে স্পিকার বলেন,
'আল্লাহ্র ওয়াস্তে সংসদের মান-মর্যাদা রাখুন। এমনভাবে চলুন, কথা বলুন যাতে সংসদ কার্যকর হয়। দেশবাসী আশান্বিত হয়। মারামারি কিংবা রেসলিং করতে চাইলে গায়ে তেল মেখে পল্টন ময়দানে চলে যান। সংসদ ভবনের পাশেও জায়গা আছে। সংসদে অসংসদীয় আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।'
অনেকটা আবেগাপ্লুত ও বেদনার্ত কণ্ঠে আবদুল হামিদ আরও বলেন, 'বুধবার সংসদে যা ঘটেছে, তা জাতির জন্য লজ্জাকর। ভাষা প্রয়োগের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, কে কোথা থেকে উঠে এসেছেন। আপনারা আমাকে স্পিকার নির্বাচিত করেছেন। সংসদের শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য রক্ষায় অধিবেশন আমি আমার মতো চালাব। আপনারা যদি মনে করেন, আমাকে বাদ দেওয়া উচিত, আমি চলে যেতে প্রস্তুত। কেউ অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করলে সঙ্গে সঙ্গে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হবে। কাউকেই সংসদে এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে দেওয়া হবে না।'
বুধবার সংসদ অধিবেশনে সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সময় স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন না। সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা বুধবারের মতো গতকাল অনেকটা যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে এলেও আবদুল হামিদের কড়া মনোভাবের কারণে তারা নমনীয় ভূমিকা নেন।
বুধবার যারা নানা খিস্তিখেউরসহ একে অন্যের বিরুদ্ধে নোংরা ভাষা প্রয়োগ কিংবা মারামারি করতে উদ্যত হয়েছিলেন, তাদের স্পিকারের ক্ষুব্ধতার কাছে হার মেনে চুপচাপ নিজের আসনে বসতে থাকতে দেখা গেছে। এমনকি তারা রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনাকালেও ব্যক্তি আক্রমণ বা অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করেননি।
দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী প্রশ্নোত্তরপর্ব টেবিলে উত্থাপন করামাত্রই বুধবারের ঘটনা নিয়ে কথা বলতে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর দাবি করেন বিএনপির ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া এবং আওয়ামী লীগের শামসুর রহমান শরীফ ডিলু। স্পিকার কাউকে ফ্লোর না দিয়ে বলেন, 'এখন কাউকে ফ্লোর দেওয়া যাবে না। পরে ফ্লোর দেওয়া হবে। এর আগে আমারও কিছু কথা আছে।'
সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের নোটিশ উত্থাপনের সময় বিএনপির আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও আওয়ামী লীগের গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স বুধবারের ঘটনার বিষয়ে কথা বলা শুরু করলে স্পিকার অত্যন্ত কঠোরভাবেই তাদের থামিয়ে দিয়ে নির্দেশ দেন_ নোটিশের বাইরে কোনো কথা বলা যাবে না। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনার আগে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও এম কে আনোয়ার ফ্লোরের জন্য দাঁড়ালে স্পিকার আবারও বলেন, 'সব শেষে কথা বলার সুযোগ দেব, এখন নয়। স্পিকারের এমন কঠোর অবস্থানের কারণে বৃহস্পতিবার সংসদকে উত্তপ্ত করার সুযোগই পাননি কেউ।
বুধবারের অপ্রত্যাশিত ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা বিএনপির শাম্মি আখতার, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এবং আওয়ামী লীগের জয়নাল আবেদীন গতকাল অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তবে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া যথারীতি ছিলেন অনুপস্থিত। বুধবার উপস্থিত থাকলেও বৃহস্পতিবার সংসদে আসেননি প্রধানমন্ত্রী। অধিবেশনের শুরুতেই প্রথম সারির বেশিরভাগ আসন ছিল ফাঁকা। অধিবেশনের শুরুতে চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদকে সরকারি দলের কয়েকজন সদস্যের আসনের সামনে গিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে। এক পর্যায়ে তিনি বিএনপির আবুল খায়ের ভূঁইয়া এবং শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঙ্গেও কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া, জাতীয় পার্টির এমএ জব্বার, বিএনপির একেএম হাফিজুর রহমান, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আওয়ামী লীগের জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন ও সুলতানা বুলবুল।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×