somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছেটা কি!!! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত ৫-৬ মাস থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা।আর এই অস্থিরতার পেছনে রয়েছে শিবির ও চবি ছাত্রলীগের দুইটি বিবদমান গ্রুপ,এই দুইটি গ্রুপ হচ্ছে সিএফসি(চুজ ফ্রেন্ডস ওয়িদ কেয়ার) এবং ভিএক্স(ভার্সিটি এক্সপ্রেস)

গত মে মাসে চবির সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে ক্যাম্পাসে লাঞ্চিত করাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে পুরনো বিবাদ নতুন করে শুরু হয়।উক্ত ঘটনার জন্য সিএফসি গ্রুপ ভিএক্সকে দায়ী করে এবং জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কারের দাবীতে আন্দোলনের ডাক দেয় সুমন মামুন ও অমিত কুমার বসুর নেতৃত্বাধীন সিএফসি গ্রুপ।

শাটল ট্রেনের চালককে অপহরণ করে আটকে রাখে।এভাবে বেশ কিছুদিন চলার পর প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয়া হয়।কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই 1টি সপ্তাহ ভুগতে হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

পরবর্তীতে চবি ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক জালাল আহমেদকে তার গ্রামের বাড়ি সিলেটে কোপায় শিবিরকর্মীরা যার জের ধরে চবির আমানত হলে শিবির-লীগের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।এতে দুইজন নিহত হয় এবং আহত হয় অনেকেই।

আমানত হল-সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে।অনেকেই ক্যাম্পাসে যাওয়া বন্ধ করে দেন।মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম।আমানত-হল সংঘর্ষের রেশ কাটতে না কাটলেই শিবির-লীগের মধ্যে ফের সংঘর্ষ শুরু হয় শিবির-নিয়ন্ত্রিত সোহরাওয়ার্দী হল দখলকে কেন্দ্র করে।ওই সংঘর্ষে পালিয়ে যায় শবির।হলে মসজিদ থেকে উদ্ধার করা হয় বোমা।

আমানত-সোহারাওয়ার্দী হল খুলে দেওয়ার দাবীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে অবরোধের ডাক দেয় চবি ছাত্রশিবির।যদিও ওই অবরোধে কোন সাধারণ শিক্ষার্থীর সংস্লিষ্টতা ছিলোনা।

এই অবরোধের ফলে কার্যত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে পড়ে।শিবিরকর্মীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে এমনকি সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়,শিক্ষার্থীদের মোবাইলে টেক্সট মেসেজ পাঠিয়ে ক্যাম্পাসে না আসতে হুমকি দেয়।শাটল ট্রেনের ভেতরে ককটেল ছুড়ে মারে।এতো গেলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা।চবি শিবির যে অপরাধ করলো সেটা জাতিকে স্তব্ধ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়গামি শিক্ষকবাসে হামলা করে।এতে কয়েকজন শিক্ষিকাসহ অনেক শিক্ষক আহতি হন।কয়েকজনের অবস্থা বেশ গুরুতর ছিলো।জাতীয় সংসদে শিক্ষকদের উপর হামলার নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়,এই হামলায় দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।চবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনলাইনে-অনলাইনে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।চবির শিক্ষকমন্ডলীও মানববন্ধন করে প্রতিবাদ এবং দোষীদের শাস্তি দাবী করে।


রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থা সামলাতে ব্যর্থ হয়ে চবি প্রশাসন দেড় মাস(৪৪ দিন) বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করে।স্থগিত হয়ে যায় বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে চলমান পরীক্ষা।এদিকে এই বন্ধের সময়টাতেও শিবির তাদের তথাকথিত অবরোধ চালু রাখে।

অন্যদিকে ভর্তি পরীক্ষার মৌসুমও দ্রুত চলে আসে।শিবির এবং ছাত্রলীগ ভর্তি পরীক্ষাকে টার্গেট করে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে থাকে।উল্লেখ্য,ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম চবি প্রশাসনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতার নাম।কারণ এই ভর্তি পরীক্ষার সময়টাতে ক্যাম্পাসে গা ঝাড়া দিয়ে উঠে রাজনৈতিক দলগুলো।কথিত আছে যে,ভর্তি পরীক্ষা ঘনিয়ে আসে ক্যাম্পাসে প্রায় সময় রাতের গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যায় এবং এর সাথে ছাত্রলীগ ও শিবির জড়িত।এইরূপ নিয়মিত গোলাগুলি করার কারণ হচ্ছে প্রশাসনের কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ আদায়।তারা গুলাগুলির মাধ্যমে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার ইঙ্গিত দেয়।ভর্তি পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন এদের টাকা দিতে বাধ্য হয়।আরো উল্লেখ্য,এই গুলাগুলির রীতি অনেক আগে থেকেই চলে আসছে।
ভর্তি পরীক্ষার আগে শিবিরের সাথে চবির সিন্ডিকেট আলোচনায় বসে।এই বৈঠক ফলপ্রসু হয়নি।এতে ভর্তি পরীক্ষার সময়ে শিবিরের নাশকতা ঠেকাতে প্রশাসন পুলিশ ও র‍্যাবের সাহায্য নেয়।এই দুই বাহিনী চবির আশেপাশের এবং শহরের কিছু স্থানে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু শিবিরকর্মীকে আটক করে।পরবর্তিতে অবশ্য আমানত ও সোহরাওয়ার্দী হল খুলে দেয়ার শর্তে শিবির তাদের অবরোধ তুলে নেয়

গত ৮ নভেম্বর চবির ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়।এর পরের দিন অর্থাৎ ৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়(ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয় বন্ধের মধ্যে)।

যেখানে সবার প্রতাশ্যা ছিলো শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে,হলো তার উল্টো। সিএফসি গ্রুপের এক কর্মীকে মারধর করে ভিএক্স এর কর্মীরা।এর প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে অবরোধ ডাকে সুমন মামুনের অনুসারীরা।তারা শাটল চলাচলে বাধা প্রদান করে এবং ক্যাম্পাসে চলাচল করা মিনিবাস(তরী) আটকে দেয়।

বর্তমানে ক্যাম্পাসে আবারো অচলবস্থা বিরাজ করছে।ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের বিবাদের মাশুল দিতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে।দীর্ঘ বন্ধের ফাদে পড়ে যেসব পরীক্ষা নেয়া সম্পন্ন হয়নি সেগুলো নেয়া যাচ্ছেনা।

এমনিতে সেশন-জটে নাকাল চবির অধিকাংশ ডিপার্টমেন্ট,তার উপর আবারো অস্থির ক্যাম্পাস,আমরা কোন পথে যাচ্ছি?
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×