somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইনকা দের শিশু বলী! হাড়িয়ে যাওয়া প্রাচীন, পবিত্র ও নিঃশ্বংস একটি প্রথার নাম.........।।

১৩ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Beautiful beyond exaggerasion ঠিক এভাবেই স্পেনিশ ঐতিহাসিক ব্যাক্ত করেছিল Tanta Karhuya র সৌন্দর্যকে. Tanta Karhuya ছিল এমনই এক শিশু যাকে বলী করা হয়েছিল। Tanta Karhuya ছিল ১০ বছরের এক ইঙ্কা সুন্দর শিশু যাকে তার বাবা পাঠিয়ে দিয়েছিল রাজার কাছে capacoch বলীর জন্য। তারপর যাজকরা তাকে নিয়ে যায় ইঙ্কা রাজার কাছে। সেখানে তাকে তার পরিবারকে ও তার গোত্রকে দেওয়া হয় সর্বচ্ছ সন্মান। তার সন্মানে cuzcuতে আয়োজন করাহয় রাস্ট্রীয় ভোজনশালার। cuzcu হল ইঙ্কাদের রাজার প্রাসাদস্থল বা রাজধানী। সব শেষে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সেই চুড়ায় যেখানে হবে তার শেষ আবাসস্থল বা সমাধি সৌধ। শেষ যাত্রার সেই মিছিল টি যায় Tanta Karhuyaর নিজ গ্রামের মাঝ দিয়ে। সেখানে গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্য সে বলেছিল, “You can finish with me now. Because I could not be more honoured then by the feasts which they celebrated for me in cuzcu."

পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতা গুলো ছিল রহস্যের মায়াজালে ঘেরা। মদ্ধযুগ থেকে এখন পর্যন্ত সেই সভ্যতা গুলো মানুষকে চিরস্থায়ী রহস্যের মায়াজালে আটকে রেখেছে। কিভাবে সৃষ্টি হয়েছিল এই সভ্যতা গুলো । কেমনই বা ছিল সেইসময়কার মানুষগুল আর তাদের জীবন ধারা আর কেনইবা তারা হাড়িইয়ে গিয়েছিল কালের গহবরে তার সঠীক উত্তর কেউ দিতে পারেনি। সেই রহস্যময় সভ্যতা গুলোর একটি হল মায়া সভ্যতা । মায়াদের অবস্থান সম্পর্কে নেটে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে,তার পরেও এটা সম্পর্কে সামান্য জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করতে পারেন।
******মাচ্চু পিচ্চু, পালাঙ্কি*******


ইনকারা যেমন রহস্যময় ছিল ঠিক তেমনি রহস্যময় ছিল তাদের প্রচলিত প্রথা গুলো। আর তাদের এই রহস্যময় প্রথা গুলোর মাঝে একটি ছিল শিশু বলী বা Capacoch।

প্রাচীন Mesoamerica সভ্যতা গুলোর মাঝে বলী প্রথা ছিল খুবি জনপ্রিয়। দেবতাদের তুষ্ট করার সবচেয়ে উত্তম মাদ্ধম হিসাবে বলী প্রথা সব সংষ্কৃতির মাঝে প্রচলিত ছিল। গাছ পালা প্রানী মানুষ নাড়ী শিশু সকল কিছুই ছিল এই বলীর অন্তভুর্ক্ত। তবে এইসকল বলীর মাঝে শিশু বলী সকল সম্প্রদায়ের মাঝেই ছিল জনপ্রিয়।



শিশু বলী যে কতটুকু নিঃস্বংশ ও পবিত্র ছিল তার বর্ননা পাওয়াযায় স্পানিশ ঐটিহাসিক দের কাছ থেকে। এই প্রথা নিয়ে খুব যে তথ্য পাওয়া যায় তা নয়।। ইঙ্কা দের ভাষায় এই বলীকে বলা হত capacoch. স্পানিশ ঐতিহাসীকদের কাছ থেকে যেই শিশুটির তথ্য বেশি পাওয়া যায় তার নাম ছিল Tanta Karhuya, যার নর্ননা আপ্নারা ইতিমদ্ধে পেয়েছেন । প্রাচীন মায়াদের কাছে এই capacoch ছিলো সর্বোচ্চ সন্মানের বিষয়। আর সেই সন্মান অর্জনের লোভে পিতামাতারা তাদের প্রানপ্রিয় সন্তানদের বলীর জন্য পাঠাত।

কিন্তু কেন এই বলী। আর কেনই বা বলী হিসেবে শিশুদের বাদ দেওয়া হত না। তার ধারনা পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রাচীন গ্রন্থ্য থেকে। আজ যেমন শিশুদের পবিত্র বলে ভাবা হয় ঠিক তেমনি সেই সময়েও শিশুদের জগতের সবচেয়ে পবিত্র বস্তু বলে বিবেচনা করা হত। তাই দেবতাদের পবিত্র অর্ঘ হিসেবে শিশুদের বিবেচনা করা হত। যখনি কোন প্রাকৃতিক দুর্্যোতগ আঘাত হানত কিংবা কোনো রাজা মারা যেত ঠিক তখনি দেবতাদের তুষ্ট করার জন্য শিশু বলী করা হত।

তবে যেনতেন শিশুকে বলীর জন্য নির্বাচন করা হত না। নির্বাচিত হবার জন্য শিশুটিকে হতে হত সবচেয়ে সুন্দরি। সাধারনত কোনো গোত্র প্রধানের বা যাযকের সন্তানকেই এই বলীর জন্য পছন্দ করা হত। কারন তারা বিশ্বাস করত যে বলীর পর শিশুটির আত্মা মৃত রাজা ও যাযকের মাঝে সম্পর্কের সৃষ্টি করবে। প্রাচীন মায়াদের মতে রাজা ছিল সুর্য দেবতার প্রতিনিধি। মৃত্যুর পর শিশুটি দেবতায় রুপান্তরিত হবে এবং দৈব বানীর মাদ্ধমে তার লোকেদের সাথে কথা বলতে পারবে ।

একটি শিশুকে বলীর জন্য নির্বাচিত করার পর একটা বিশাল মিছিলের মাদ্ধমে শিশুটিকে তার গ্রাম থেকে রাজার রাজধানী cuzcu তে নিয়ে যাওয়া হত। বলীর সেই মিছিলে উপস্থিত থাকত তার পিতামাতা , যাজকেরা ও তার গ্রামবাসীরা। রাজধানী তে তাদের উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হত বিশাল ভোজনশালার। তারপর যাজকদের একটি রাজকীয় মিছিল তাকে নিয়ে যেত সেই পর্বতের চুরায় যেই জায়গাই হবে তার শেষ ঠিকানা। পর্বতে আরোহন করাটা ছিল কষ্টসাদ্ধ ব্যাপার। তাই পর্বতের বিভিন্ন স্তরে তৈরি করা হত কিছু বেস ক্যম্প। তারপর নিয়ে যাওয়া হয় আন্দেজ পর্বতের চুরায় যেখানে বরফ শিতল পরিবেশে বাশের ও পাথরের তৈরি মন্দিরে তাকে সমাধিস্ত করা হবে।

যেই দিনটিতে তাকে বলী করা হবে সেদিন তাকে ভুট্টার তৈরি একধরনের কড়া মদ প্রচুর পরিমানে খাওয়ানো হয়। এই মদ তাকে খাওয়ানো হয় যাতে করে সে সহজে মৃত্যু কষ্ট সহ্য করতে পারে। তারপর শুরু হয় বলীর আনুষ্ঠানিকতা। তাকে ও তার মন্দির কে ভরে দেওয়াহয় বিভিন্ন খাবার দাবারে ও মুল্যবান ও পবিত্র রত্ন ও পালক দিয়ে। ধারনা করা হয় এই রত্ন গুলুই তাকে নিয়ে যাবে সর্গে। শিশুবলীই ছিল কার্যত সবচেয়ে মুল্যবান অর্ঘ যার মাদ্ধমে ইঙ্কারা পর্বত দেবতাদের তুষ্ট করতে পারত। কিন্তু আসলেই কি মদ খেয়ে,এন্ডেজের হিমশিতল বরফে ও বন্দি অবস্থায় শিশুটীর মৃত্যু হত? এর উত্তর পাওয়াযায় বর্তমানে পাওয়া কিছু মমী ও প্রত্নতত্ববিদদের কাছ থেকে। পরবর্তিতে আবিষ্কার হওয়া অনেক গুলো মমীর খুলি পরিক্ষা করে প্রত্নতত্ববিদরা মাথায় আঘাতের চিহ্ন খুজে পেয়েছেন। তাই ধারনা করা হয় মৃত্যু তরান্বিত করার জন্য মাথায় বলীর আঘাত করা হত।

যাইহোক মৃত্যু নিশ্চিত হবার কয়েকদিন পর যাজকরা সমাধীস্থল পরিদর্শন করতে যেত। সেখা্নে সমাধী স্থলকে তারা মাটি পাথর ও কোকা পাতা দিয়ে ভরিয়ে দিত। অনেক সময় তারা কবরের পাশে শিশুটির একটি মুর্তি স্থাপন করত। তার উদ্দেশ্য যাজকরা হীম হয়েযাওয়া এন্দেজের চুরা ও তার সমাধীস্তল থেকে উড়িয়ে দিত মদ ও বন্য ঘাস।
পবিত্র শিশুটি এখন তাদের দেবতা। সে তাদের জন্য বয়ে আনবে চিরস্থায়ী সুখ ও নিরাপত্তা।

শেষ। আপনাদের ভাল লাগ্লে এ নিয়ে সামনে আরো লেখার ইচ্ছা আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১৩ রাত ১:৩২
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না পারার কষ্টটা সমালোচনার কোন বিষয়বস্তু নয়

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

গতকালের একটি ভাইরাল খবর হচ্ছে কয়েক মিনিটের জন্য বিসিএস পরীক্ষা দেয়া হলো না ২০ প্রার্থীর !! অনেক প্রার্থীর কান্নাকাটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান এর নিয়ামানুবর্তিতার জ্ঞান বিতরনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×