- কালকে দেখা করতে আসবা না?
- প্রতিদিন তোমার সাথে দেখা করতে হবে নাকি? প্রব্লেমটা কী বল তো তোমার?
- না কোনো প্রব্লেম নাই ।
- তাহলে ?
- সরি। আসতে হবে না।
- আচ্ছা ঠিক আছে, আসবো। খুশি??
-হুম খুশি। আরেক কাপ কফি খাবা এখন?
- তুমি কি আমাকে মেরে ফেলবা নাকি ?
- মানে ?
- বেশী কফি খেলে মানুষ মারা যায় । এটাও কী বলে দিতে হবে নাকি ?
- ও ভুলেই গেছিলাম ।
- ফালতু প্যাঁচাল... উঠলাম আমি!
-আরে, উঠছো কেন?
- কফিশপ কি আমার বাসা নাকি, যে সারা জীবন বসে থাকবো। উঠা লাগবে এখন।
তৃপ্তি উঠে হনহন করে বের হয়ে গেল কফিশপ থেকে। অনিক ছুটল তার পিছুপিছু । তৃপ্তি মেয়েটা অনেক জোরে হাঁটে। তার হাঁটার গতি দেখে মনে হয় উসাইন বোল্টও ভয় পেয়ে যেতে পারে , কোনো ঠিক নাই। অনিক রীতিমত দৌঁড়াচ্ছে তৃপ্তির পেছন পেছন।
- ঐ হেঁটে হেঁটে কই যাও ? রিকশা নিবা না?
- না, আজকে হেঁটেই বাসায় যাবো। তুমি আমার পেছন পেছন আসছো কেনো? তোমার বাসায় তুমি যাও।
(হাঁটার
গতি না কমিয়েই কথা বলছে তৃপ্তি)
-আমি আজকে তোমার বাসাতে যাবো!
তৃপ্তি হাঁটা বন্ধ করে চট করে থেমে গেলো। চোখ দুইটা গরম করলো কিছুটা। সেগুলো টকটকে লাল হয়ে যাবার পর জামার হাতা গুটিয়ে কোমরে হাত রেখে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে অনিকেরদিকে তাকালো
- আই ছেলে, তুমি পাইছো টা কি? আমার বাসায় যাবা মানে?? মাথা খারাপ ??
-আচ্ছা, তুমি রাগ করলে যাবো না!
-ফাইজলামি করো তুমি আমার সাথে?
-ঠিক আছে, তোমার কথাই শুনছি। এখন সিনেপ্লেক্সে যাবো। বন্ধুদের আড্ডাটা ক্যানসেল!
- সত্যি?
তৃপ্তি সুন্দর একটা হাসি দিলো। আজব! মেয়েটার মন ভালো হয়ে গেলো? মেয়েরা অদ্ভুত ভাবে এক
অবস্থা থেকে আরেক অবস্থায় দ্রুততার সাথে স্থানান্তরিত হতে পারে। ছেলেরা এটা পারে না।
কিছুক্ষণ পর রিকশায় বসে আছে অনিক আর তৃপ্তি। ঝগড়া লাগছে দুইজনের মধ্যে। অনিক নাকি কোন একটা মেয়ের দিকে তাকিয়েছিলো, সেটা নিয়েই শুরু..
- তুমি মেয়েটার দিকে তাকাইলা কেন?
- আরে, চোখের সামনে পড়ে গেলে তাকাবো না। ইচ্ছে করে তো আর দেখি নাই।
- তুমি পুরা ১০ সেকেন্ড
তাকাইয়া ছিলা, আমি দেখছি!
- আজব তো ? তুমি তো ফোনে কথা বলতেছিলা। এর মাঝে টাইম দেখলা কিভাবে?
- ও আচ্ছা, আমি না দেখলে তুমি রেগুলার টাংকি মারো মেয়েদের সাথে?
- কারো দিকে চোখ পড়লেই টাংকি মারা হয়ে যায়?
- সত্যি করে বলতো, ঐ মেয়েটা কি আমার থেকে সুন্দর?
-অনেক ফর্সা মেয়েটা!!
- কি??? তারমানে আমাকে কালো বললা তুমি?
-না.. তুমিও ফর্সা.. সুন্দর...
- তুমি নামো রিকশা থেকে!
- সিনেপ্লেক্সে যাবা না?
- একলা যাবো আমি। তুমি নামো! এক্ষুনি নামো বলছি....!!!
অনিককে ধাক্কা মেরে নামিয়ে দিলো তৃপ্তি । রিকশা সিনেপ্লেক্সের দিকেই যাচ্ছে। অনিক নিরুপায় হয়ে হেঁটে হেঁটে ওদিকেই চললো।
স্টার সিনেপ্লেক্স! হল নাম্বার 3 । অনিক আর তৃপ্তি পাশাপাশি বসে আছে। একটা ইংলিশ রোমান্টিক
মুভি চলছে এখন। তৃপ্তি খুব মনোযোগ দিয়েই মুভি দেখছে। অনিকের মুভিটুভিতে খুব একটা আকর্ষণ নেই।নিজের চশমাটা খুলে নিজের হাতে নিয়ে রেখেছে আনিক । অবাক দৃষ্টিতে তৃপ্তিকে দেখছে। হলজুড়ে হালকা একটা মৃদু আলো বিরাজ করছে। তার মাঝে তৃপ্তিকে দেখতে বড্ড সুন্দর লাগছে। অপার্থিব কোন নারী যেন সবটুকু ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হয়ে তার পাশে বসে আছে। সে ও মানুষটাকে অসম্ভব ভালোবাসে।
- আই, মুভি দেখতে বলছি না! আমার দিকে তাকায় আছো কেন?
- কই মুভিই তো দেখছি।
- হুম.. মুভি দেখো। আমি কিন্তু পড়ে জিজ্ঞাসা করে শিওর হবো পুরাটা দেখছো কিনা!
তৃপ্তি অনিকের ডানহাতটা মুঠো করে ধরে রাখলো। অনিক মনে মনে হাসলো।
"আচ্ছা!! এটাকেই কি ভালবাসা বলে?"
কি জানি! বলে হয়তো বা...