somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীল আর দীপ্তির ভালোবাসার মিষ্টি গল্প

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

- তোমাকে প্রায় আধা ঘন্টা ধরে কল করছি ! রিসিভ করছিলা না কেন ? এতক্ষণ কি ঘোড়ার ঘাস
কাটতেছিলা ??

- সরি। আর কখনো এমন হবে না

- কান ধরে সেলফি তুলে আমাকে পোস্ট করবে, তারপর আমাকে ফোন দিবে।
এটা বলে ফোন কাটলো দীপ্তি ।

দীপ্তি মেয়েটির সাথে নীলের পরিচয় ফেসবুকে। খুব জেদী ,
অভিমানি আর অবুঝ একটা মেয়ে
দীপ্তি। যেটা বলবে সেটাই
করতে হবে তা না হলে রক্ষা নেই।
বন্ধুত্বের প্রথম দিকে নীল
এটা বুঝতে না পারলেও এখন ছেলেটা হারে হারে টের পাচ্ছে। তবে আজকে দীপ্তির অভিমান করার যথেষ্ট কারণ আছে। এইবার দিয়ে প্রায় উনিশ বার কল করেছে দীপ্তি । কিন্তু নীল বসে বসে পিসি তে গেম খেলছিল তাই ইচ্ছা করেই কলটা রিসিভ করে নি । তাই খুব আগ্রহ নিয়ে ই সেলফি তুলেই পোস্ট করলো দীপ্তির ফেসবুক ইনবক্সে। দীপ্তির
সব কিছু ই ভালো লাগে নীলের। সব চেয়ে বেশি ভালো লাগে ওর এই শিশুসুলভ আচরণগুলো আর
খামখেয়ালিপনা। নীল বোধই মেয়েটাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে !

সকালবেলা দীপ্তির দেয়া ফোনের
রিংটোনের শব্দে ঘুম ভাঙল নীলের।

- গুড মর্নিং।

- হুম। গুড মর্নিং।

- এখন ঘুমাচ্ছ?

- হুম।

- তাড়াতাড়ি উঠবে এক্ষুণি।

- পসিবল না।

- আমি বলেছি না।এক্ষুণি উঠবে বায়।

নীলের আরও কিছুক্ষণ ঘুমানোর
ইচ্ছা ছিল। কিন্তু দীপ্তির
আদেশে সেটা পরিত্যাগ করতে হল। ইদানীং মেয়েটা কেমন যেন
অত্যাচারি হয়ে উঠেছে! তবে নীলের খুব ভাল লাগে দীপ্তির এই ভালবাসার অত্যাচার গুলো ! নীল খুব উপভোগ করে এগুলো।
নীলের মাঝে মাঝে মনে হয়
মেয়েটা ওকে প্রচন্ড ভালবাসে।
মাঝেমাঝে সেটা প্রকাশ ও করে কিন্তু মুখে কিছু বলে না।হয়ত মেয়ে বলে । এসব ভাবতে ভাবতে হাত মুখ ধুয়ে ওয়াস রুম থেকে বের হয় নীল। সেকি সাড়ে দশটা বেজে গেছে! আজ ঠিক সকাল ১১ টায় দীপ্তির সাথে দেখা করার কথা নীলের। নিজের
উপর রাগ হচ্ছে ওর। কোনোমতে তাড়াহুড়া করে দীপ্তির
পছন্দের টি শার্ট পরে বের হয় নীল।

গন্তব্য নদীর তীর। পরিচিত ঐ কদম গাছটার তলায় থাকবে দীপ্তি। ১১ টা বাজার ৫ মিনিট আগেই পৌছে গেল নীল।

-তোমাকে কয়টায় আসতে বলছিলাম?

- ১১ টায়।

- এখন কয়টা বাজে?

- ১০ টা ৫৫.

- ৫ মিনিট আগে আসলা কেন? যাও দূরে গিয়ে বস। ঠিক ১১ টায় আমি তোমার সাথে কথা বলব।

নীলের হাসি পায়, দীপ্তির এই অদ্ভুত আচরণগুলো ওর খুব
ভাল লাগে।

- এই শোনো এইদিকে আস। বোকার মতো আর কতক্ষণ বসে থাকবে।

- জি বলেন মিসেস। আপনার বান্দা হাজির।

- আচ্ছা আমরা বিয়ের পর
হানিমুনে যমুনা নদীর বুকে গড়ে ওঠা চরে যাব । ওইখানে একটা ছোট্ট কুটির থাকবে ! আর ওইখানে থাকব কেবল আমি আর তুমি । তোমার কোনো আপত্তি নেই তো?

দীপ্তির এমন কথার জন্য একদম ই প্রস্তুত ছিলও না নীল। বোকার মত তাই প্রশ্ন করল,
এই উদ্ভট জায়গায় কেন?

দীপ্তি জবাব দিল
-আমি বলেছি তাই ।

নীল কি বলবে বুঝতে পারছে না।
তাকে অবাক করে দিয়ে আবার দীপ্তিই শুরু করল
- তুমি বিয়েতে কিন্তু
সেরওয়ানি পড়বে না।
তোমাকে পাঞ্জাবিতে ই অনেক ভাল
লাগে। আর অবশ্যই লাল পাঞ্জাবি।
আমি কিন্তু লাল কালারের
শাড়ি পরতে পারবো না। আমি নীল কালারের একটা শাড়ি পরবো। ওকে?

নীল কি বলবে কিছু বুঝতে পারছে না। বোধই সপ্ন দেখছে।
আবার বোকার মতো প্রশ্ন করে বসল,
যদি বিয়েটা না হয়?
- স্ট্রেইট গুলি করবো তোমাকে।
- অমি তো তোমাকে ভালবাসি কথাটাই বলতে পারলাম না।
- হুম জানি একমাস যাবৎ ভেড়ার
মতো ভে ভে করে যাচ্ছ। তুমি কখনই বলতে পারবেনা আমি জানি।আর শোনো
আমি তোমায় একটুও ভালবাসি না। তাই আমাকে ভাল না বাসলে ও হবে।

- তাহলে বিয়ে করবে কেন আমাকে?

- তোমাকে জ্বালাতন করতে। তোমার কোনো সমস্যা আছে?

- না নেই।

- তাহলে যাও এখন গিয়ে ঝালমুড়ি
নিয়ে আসো ।

মুচকি হেসে ঝালমুড়ি
আনতে গেল নীল ।কিছুদূর গিয়ে অনর্থক পিছন
ফিরে তাকাল সে। দেখল
দীপ্তি চেয়ে আছে তার দিকে। পিছন ফেরা মাত্রই শিশির বিন্দুর মত কি যেন একটা লুকানোর চেষ্টা করল দীপ্তি। না দেখার ভান
করে সামনে এগিয়ে গেল নীল। নীল জানে আজ সে ভালবাসার
অত্যাচারে সিক্ত। সে আজীবন এই
অত্যাচারে সিক্ত থাকতে চায় ।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×