কাব্য, ছোটবেলা থেকেই ছেলেটা পড়াশুনায় খুব মেধাবী । মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও
পড়াশোনার প্রতি অদম্য ইচ্ছা এবং স্কুল মাস্টার বাবার উত্সাহে বুয়েটের মতো নামী ভার্সিটি থেকে উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে সে দেশের নামকরা সফটওয়ার কোম্পানিতে জব করছে । তবে ছেলেটা খুব সাদাসিধে এবং ধীরস্হির শান্ত স্বভাবের । সারাদিন নিজেকে বইয়ের মধ্যে আটকে রাখতেই পছন্দ করে । সুন্দরী মেয়েদের প্রতি তার বিশেষ ধরণের এলার্জি আছে কেননা মেয়েদের সাথে কথা বলতে সে চরম নার্ভাস ফিল করে । এমনকি ছাত্রজীবনে ম্যাডামদের সাথে কথা বলতেও তার খুব অস্বস্তি হত ।
অন্যদিকে গল্পের মায়াবী মেয়েটার নাম হৈম ।বাবা মার একমাত্র আদরের মেয়ে, দেশের নামকরা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শেষ বর্ষের ছাত্রী । মেয়েটা দেখতে অসম্ভব সুন্দরী তবে একটু রাগীও বটে । সারাদিন ফেসবুক, টুইটারে বন্ধুদের সাথে আড্ডা এবং পার্লার শপিং এসবই তার জীবনের নিত্যসঙ্গী । তবে মেয়েটার মনটা খুব ভালো ।
কাব্য এবং হৈম দুজন দুজনকে ভালোভাবে চিনতই না সপ্তাহখানেক আগে । কিন্তু আজ তারা দুজনের পরবর্তী জীবনের লাইফ পার্টনার । পারিবারিক সম্মতিতেই সব কিছু হয়েছে । কাব্য এবং হৈম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে ।
রাত ১১টা বাজতে ৩ মিনিট বাকি । বাইরের চাঁদের মিষ্টি আলোটা ঘরে এসে পড়ছে । ঘরের মধ্যে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বসে কাব্যের জন্য অপেক্ষা করছে হৈম । কতক্ষণ আর মাথায় ঘোমটা দিয়ে বসে থাকা যায় । তাই বিছানা ছেড়ে উঠে যেই জানালার
পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে হৈম, তখনই দরজা খুলে কাব্য প্রবেশ করল । রুমের ভিতর কেমন যে একটা নীরবতা । কাব্য বার বার রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম মুছে নিচ্ছে । কাব্য কিছু বলছে না দেখে হৈম নিজেই নীরবতা ভেঙ্গে বলল,
-ফ্যান কি একটু বাড়িয়ে দেব ??
-না, না.... ঠিক আছে ।
- প্রচুর ঘাম হচ্ছে..
- অহ কই !! আচ্ছা.. হুম ।
কিছুক্ষণ নীরবতা ! কাব্য কিছুটা
কাঁপা গলায় বলল,
- আচ্ছা একটা কথা বলব, আপনি রাগ করবেন না তো ?
- জি বলুন । রাগ কেন করব ?
হৈমের বুকটা কেঁপে উঠল । কী বলবে ? বাবা মার পছন্দে বিয়ে করেছে । ওকে পছন্দ না ।
-মানে আসলে এত তাড়াতাড়ি বিয়ে হল, এত কাজ আর টেনশনে ছিলাম, ঘুম হয়নি ঠিকভাবে...
হৈম মনে মনে প্রমাদ গুনছে । এর
পরের বাক্যটা নিশ্চয়ই খুব খারাপ
কিছু ।
একটু ঢোক গিলে কাব্য কাঁপা কাঁপা স্বরে বলল,
- প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে । আমি ঘুমালে
আপনি কী রাগ করবেন ?
বলে কী ছেলেটা ? হৈম হেসে ফেলল । এত সুন্দর করে একটা মানুষ ঘুমাবে কী না সেটা জিজ্ঞেস করে ।
খাটের এক কোণে ছোট বাচ্চাদের মতো গুটিসুটি হয়ে কাব্য ঘুমাচ্ছে । হৈম ভাবছে ওর চুলে হাত বুলালে কী রাগ করবে ? নাকি ওর গালে আলতো করে একটা চুমু এঁকে দিবে । রুমের ভিতর চাঁদের আলো এসে পড়েছে । ওদের রুমটা খুব পছন্দ হয়েছে হৈমের । আচ্ছা কি অদ্ভূত । এই রুমটা কীভাবে কাব্যের থেকে ওদের দুজনের হয়ে গেল ।