somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাকে কেন দুটি ছিদ্র?

০৫ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটবেলায় একটা বইতে পড়েছিলাম, বাম নাক যদি বন্ধ থাকে তাহলে যাত্রা করা শুভ। আর ডান নাক বন্ধ থাকলে অশুভ। তখন থেকে খেয়াল করেছিলাম দিনের কিছু সময় আমার ডান নাক বন্ধ থাকে আর বাকি সময়টা বাম নাক(সর্দি না লাগলেও)। পরে জানতে পারলাম এটা নাকি সবার ক্ষেত্রেই একই রকম। বিশ্বাস না হলে টেস্ট করে দেখতে পারেন। তবে এটা নিয়ে পরবর্তীতে কোন রকম চিন্তা করিনি।
ক্লাস টেন এ বই থেকে জানতে পারলাম, মানুষের দুইটি চোখ থাকার কারনে চোখের সামনে বস্তুগুলোর 3D অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। আমাদের দুটি চোখের দেখা একরকম নয় একটু আলাদা। দুটি চোখ দিয়ে দেখার সময় দুটি আলাদা চিত্র এক করে দেখানো হয়। এর ফলে আমারা বস্তুগুলোর দুরত্ব, আকার-আকৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করি। এটি চাইলে আপনি নিজেই ব্যাপার টা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। এজন্য, আপনার দুই চোখ খোলা রেখে নাক বরাবর, চোখ থেকে ফিট খানেক দূরে আঙ্গুল সোজা করে রাখুন। এবার পালাক্রমে একবার শুধু ডান চোখ নিয়ে দেখুন এবং বাম চোখ দিয়ে দেখুন। মনে হবে আপনার আঙ্গুলটা সরে যাচ্ছে। এবং এটাও বোযহা যাবে দুই চোখে ভিশন এক রকম নয়।


অর্থাৎ দুটি চোখ এমনি এমনি দেয়া হয় নি। এর কারন আছে। সেদিন এক পিচ্চি আমাকে প্রশ্ন করলো যে নাকের দুটি ফুটা কেন। তার প্রশ্ন শুনে আসলে আমি নিজেই চিন্তায় পড়ে গেলাম। দুটি চোখ থাকার যেহেতু কোন কারন রয়েছে, নাকের দুটি ছিদ্র থাকাটারও একটা যুক্তিসঙ্গত কারন থাকতে পারে। খোজ করলাম, পেয়েও গেলাম। নাকের দুইটি আলাদা ছিদ্র কোন দৈব ব্যাপার নয়। এর পিছনে রয়েছে বিশাল চক্রান্ত। কারণ টা বোঝার জন্য আমাদের প্রথমে জানতে হবে আমরা কীভাবে ঘ্রাণ নিই, বা আমরা আলাদা আলাদা ঘ্রাণ কীভাবে বুঝি।
আসলে আমরা যখন শ্বাস গ্রহণ করি তখন বাতাসের সাথে সাথে অনেক কণা নাকের মধ্যে ঢুকে যায়। এইসব কণার মধ্যে কিছু কিছু কণা নাকে অবস্থিত olfactory receptor নামক এক প্রকার cell এর সাথে সংযোগ ঘটে এবং সেখানে কিছু বিক্রিয়া ঘটে। অবশ্যই এক এক রকম বস্তু কণার ক্ষেত্রে এক এক রকম বিক্রিয়া ঘটবে। এই সব বিক্রিয়ার তথ্য নিউরনের মাধ্যমে চলে যায় আমাদের brain এর olfactory lobe


সেখান থেকেই আমাদের মস্তিষ্কে ঘ্রাণ অনুভুতির সৃষ্টি হয়। ঘ্রাণ অনুভুতির দিক দিয়ে মানুষ কিন্তু কিছুটা দুর্বল। খুব তীব্র নাহলে আমরা ঘ্রাণ নিতে পারি না। অর্থাৎ যার ঘ্রাণ গ্রহণ করব, সেটা থেকে কিছু particle বাতাসের মাধ্যমে আমাদের নাক পর্যন্ত আসতে হবে। এবং বাতাসে সেই particle এর ঘনত্ব এবং সেটি olfactory receptorএর সাথে কিভাবে ক্রিয়া করে তার ওপর নির্ভর করবে আমরা ঘ্রাণ নিতে পারবো কি পারবো না। কুকুরের ঘ্রাণ শক্তি অনেক শক্তিশালী। খুব কম পরিমাণ particle থাকলেওও এরা ধরে ফেলতে পারে। তবে আমাদের যতোটুকু আছে তাতে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে পারি। বাসায় ভালো কিছু রান্না হলে সহজেই ধরতে পারি। কোন ফল অথবা খাবার পঁচা কিনা বুঝতে পারি। কিছু কিছু গ্যাসের অস্তিত্ব নির্ণয় করতে পারি। তবে মনে রাখতে হবে, নাকে কাজ কিন্তু শুধু smell গ্রহণ করা না। সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ কাজ হলো ফুসফুস এ প্রতিনিয়ত প্রচুর বাতাস supply দেয়া। এজন্য অনেক প্রচণ্ড গতিতে নাকের মধ্য দিয়ে বাতাস প্রবাহিত করি আমরা। কিন্তু সমস্যা হলো এতো দ্রুত বাতাস গেলে কিছু কিছু কণার smell আমরা কখনোই পেতাম না। এই সব কণা receptor এর সাথে খুব ধীরে বিক্রিয়া করে। কম সময় দিলে বিক্রিয়া করবে কীভাবে?
এরকম যেনো না হয়, সেজন্যই আমাদের একটা নাসারন্ধ্র কিছুটা ধীরে বাতাস নেয়। আমাদের মনে হয় সেটি বন্ধ আছে। আর আরেকটা খোলা। এটার সাথে সর্দি লাগার কিন্তু কোন ব্যাপার নেই। নাকে সর্দি না হলেও একটা নাসারন্ধ্র বন্ধ থাকে অথবা স্পষ্ট করে বলতে গেলে কম বাতাস গ্রহণ করে। ধীরে বাতাস নিলে particle গুলো সহজেই বিক্রিয়া করে তার অনুভূতি আমাদের মস্তিষ্কে পৌছে দিতে পারবে।
আর মজার ব্যাপার হলো যে নাসারন্ধ্র (nostril) বাতাস নেয় সেটি সবসময় এরকম থাকে না। ব্যাপারটা পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ দিনের কিছু সময় বাম nostril এই দায়িত্ব পালন করে আর বাকি সময় ডান পাশের টা করে। আর এই জিনিসটা দিয়ে কোন কিছু করা শুভ নাকি অশুভ সেটা কোন ভাবেই বের করা যায় না।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৪২
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×