somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাওরপাড়ের এবারের ঈদ, সুখ-দুঃখ কতো কথা

৩১ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকাই নিম্নাঞ্চল। প্রতিবছর ওজান থেকে আসা জলে প্লাবিত হয় এদেশের ভূমি। এ নিম্নাঞ্চল পরিচিত হাওরাঞ্চল নামে। আর এ হাওরাঞ্চলের রাজধানী বলা হয় সুনামগঞ্জকে। বলা হয়- মৎস-পাথর-ধান, সুনামগঞ্জের প্রাণ। পাথর না হয় রপ্তানি হয় কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য বাঙালির প্রধান খাদ্য ভাত ও মাছ যে এলাকার অন্যতম উৎপাদন সেই মৎস পাথর ধানই যদি না থাকে তবে প্রাণ আর বাঁচে কি করে! এবারের অকাল বন্যায় সব গেছে। হাওরের ধান গেছে, মরে গেছে মাছ। বিষাক্ত হয়েছে জল। সুনামগঞ্জের মানুষ হাওরের বোরো ফসল হারিয়ে যখন পাগল প্রায় তখন আবারো অতিবৃষ্টি ডুবিয়ে দিয়েছে বাকি যা ছিলো তার সব। দেয়ালে পিঠ লেগে গেছে কিন্তু প্রকৃতির সাথে আর কতো পাড়া যায়! যখন চারিদিকে দুর্নীতিবাজদের কালো থাবা।
এ বছর সুনামগঞ্জে ২ লাখ ১৫ হাজার ৮১৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। তবে চাষাবাদ করা হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে। ধানের চাষ হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধানের চাষ হওয়ায় এবার বাম্পার ফলনের স্বপ্নে বিভোর ছিলেন কৃষক। তবে পানির তোড়ে ভেসে গেছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালি ধান।
বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাওরের ফসলহানি জাতীয় অর্থনীতিতে বড় ধরনের ক্ষত তৈরি করেছে। গতকাল রোববার পর্যন্ত এর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে জানা গেছে। বন্যায় নষ্ট হওয়া ১০ লাখ টন চাল, ২ হাজার মেট্রিক টন মাছ ও ১১ হাজার ৩০৫ টন গোখাদ্যের বাজারমূল্য ধরে এই হিসাব বের করেছে হাওর অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফর্ম। হাওর নিয়ে কাজ করা ৩৫টি আন্তর্জাতিক ও দেশীয় সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত ওই সংগঠনটি বলছে, মূলত সরকারি উৎস থেকে নেওয়া তথ্য নিয়ে তারা এই হিসাব তৈরি করেছে। তবে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে তারা যে তথ্য পেয়েছে, তাতে মোট ক্ষতির পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকা ছুঁয়ে যাবে। সূত্র-প্রথম আলো।
বৈশাখের ধান তুলে অনেক পরিবার তাদের সন্তানের বিবাহ আয়োজন করে, অনেক বিয়ে ভেঙে গেছে কিংবা অনেক কথা আর রাখা হয়নি। অনেকেই হয়তো নতুন ঘর করার কথা ছিলো, হয়নি। এ ক্ষতি আঘাত হেনেছে শিক্ষাতেও। অনেক সন্তান তার বাবা-মার সাথে গ্রাম ছেড়েছে শহরে কাজের সন্ধানে। বাসস্থান বিক্রি করে দেশও ছেড়েছে কেউ কেউ। কারণ একটাই, অভাব।
এই যখন অবস্থা, তখন এসেছে পবিত্র ঈদুল-আজহা। প্রতিবছর এই ঈদে ধনী-গরীব সকলেই সাধারণত মাংস ভক্ষণ করে থাকেন একসাথে। কিন্তু এবার চিত্র আলাদা। বন্যার প্রথম ধাক্কাতেই অনেক কৃষক তাদের প্রিয় পশু অভাবের তাড়নায় বিক্রি করে দিয়েছেলন। সাধারণত গ্রামের কৃষকেরা তাদের ঘরের পশু দিয়েই কোরবানি দেন। অনেকে তা থেকে বঞ্চিত হবেন। আর, ধান তুলতে না পারায় হাতে টাকা নাই। সুতরাং, কিনে কোরবানি দেয়া অকল্পনিয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবারের সাথে কথা হয়। প্রতি বছরই তারা কোরবানি দিতেন। কিন্তু এ বছর ধান না পেয়ে ঋণের বোঝা মাথায়। কোরবানি চিন্তাই আনতে পারতেছেন না। অথচ, সন্তানেরা কোরবানি দেখে অভ্যস্ত!
এবারের কোরবানি ঈদ নিয়ে তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব খসরুল আলমের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি তার এলাকার যেসব সামর্থ্যবান লোক আগে বাহিরে কোরবানি দিতেন তাদের এলাকায় গিয়ে কোরবানি দিতে বলেছেন যাতে সাধারণ মানুষ এই দুঃসময়েও কিছুটা ভালো খেতে পারে অন্তত ঈদের দিন।
হয়তো অনেক দুঃখের মাঝে এমন সব আরোও ঘটনা কিছুটা সুখ এনে দিবে মানুষের মনে কিন্তু স্মমিলিত প্রয়াসই আজ মানবতার মূল দাবী উত্তোরণ হতে সকল দুঃখ থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×