আমি রাজনীতি বুঝি না কিন্তু কেন জানি রাজনীতিবিদদের দেয়া বস্তা পচা আশা গুলার প্রতি আশায় বুক বেধে বসে থাকি। বসে থাকি কখনো যদি অলৌকিক ভাবে তারা দেশের জন্যে, দেশের জনগনের জন্যে কিছু একটা করে ফেলে যেমনটা করতে চেয়েছিলো ফখরুদ্দিন আহমেদ। ঠিক তেমনি গত পরশু যখন টিভিতে দেখতেছিলাম যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া বিদেশ সফর শেষে দেশে এসে জনগনের উদ্দেশ্যে ভাষন দিবেন, জনগনের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন আমি কেন জানি আশায় বুক বেধে বসে ছিলাম। বসে ছিলাম একটা কথাই শুনতে যে আমরা জামায়াত-শিবিরের গনহত্যার রাজনীতির সাথে আর নয়, আমাদের বিএনপি তার নিজের রাজনীতিতে বিশ্বাসি আমরা শাহবাগের গনজাগরন মঞ্ছের যেই তরুন প্রজন্মের ডাক, মুক্তিযুদ্ধের যেই চেতনা নিয়ে যেই শ্লোগান ধরেছে এই তরুন প্রজন্ম রাজাকারদের ফাসির দাবি নিয়ে আমাদের পুর্ন সমর্থন রইলো এই গনজাগরনের আন্দোলনের প্রতি। আর এইটা ও আশা করতেছিলাম আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া অবাক করে ঘোষনা দিবেন আমরা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী একটি দল, জামায়াত-শিবিরের সাথে আর নয়, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে থাকা এমন কোন দলের সাথে আর জোট নয়। কিন্তু অতি দুখের বিষয় তিনি ঐই জামায়াত-শিবিরের সাথে একাত্নতা রেখে পুর্ন সমর্থন রেখেই তার বক্তব্য দিয়ে গেলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া একটি বার ও চিন্তা করলেন না একটি বার ও ভাবলেন না যে এই জামায়াত-শিবিরের পক্ষ নিয়ে বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি দেশের বহু মানুষের আস্থা হারালো। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হয়তো ভুলেই গিয়েছে যে তারা দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের একটি, তারা ভুলে গিয়েছে যে তারা তিন নম্বর দল নয়, তারা জামায়াত ছাড়াও টিকতে পারে।
সারা দেশ , সারা পৃথিবী যখন একাত্ম রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে, তখন বি এন পি-র মতো এত বড়ো একটা দল রাজাকারদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো , এটা সত্যি হতাশাজনক। আমার ধারণা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হয়তো একটা হিসাব কষে দিয়েছে যে শাহবাগে যে কয়জন আছে, তাদের ভোট এমনিতেও আপনি পাবেন না। তার চেয়ে অন্য পক্ষ নিন। আর মুসলিম দেশে মুসলমানের ধর্মের প্রতি একটা দুর্বলতা আছে তাদেরকে জামায়াত ইসলামের মাধ্যে ডাক দিলেই চলে আসবে। কিন্তু মাননীয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী আপনি হয়তো জানেন না শাহবাগের সীমানা তো শুধু একটা মোড়ে আবদ্ধ নয়- শাহবাগ এখন সারা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে, শাহবাগের আন্দোলন এখন বিশ্বের আনাচে কানাচে। আপনি অনেক বড় একটা ভুল করে ফেললেন। আপনি হয়তো জানেন না রাজাকারদের ফাঁসি চাইলেই লীগকে সমর্থন করা হয় না! আওয়ামী লীগকে সাপোর্ট করে না, এমন বহু মানুষই মন থেকে রাজাকারদের ফাঁসি চায়, যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষন, গনহত্যা চালিয়েছে তাদের ফাসি চায়। আপনি গত নির্বাচনের ফলাফল টা আবার বিশ্লেষন করুন সেই ফলাফল থেকেই বের হয়ে আসবে এই তরুন প্রজন্মই বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে সিংহভাগ ভুমিকাটা রেখেছে। আর আপনি আপনার গতকালের বক্তব্যের মাধ্যমে কিভাবে এত সহজেই তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ফেললেন।
জামায়াত-শিবির মসজিদে আগুন দিয়ে , মন্দির ভেঙ্গে ফেলে, হিন্দু বাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে এবং ভাংচুর করে , পুলিশ পিটিয়ে মেরে ফেলে, সাধারণ মানুষের গায়ে বোমা মেরে দেশে ইসলাম কায়েম করতে চায়। এগুলো যে ইসলাম নয়, মানুষ কিন্তু বুঝে ফেলেছে কিন্তু মাননীয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী একমাত্র আপনিই বুঝলেন না। আপনি বুঝলেন না জনগন মন থেকে জামাত-শিবিরদের আচরণে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ছিল। আর আপনিই কিনা তাদেরকে আপনার বুকে টেনে নিলেন। আপনি টেন পাবেন কোন একদিন এই জামায়াত শিবির ই কিভাবে পরজীবী হয়ে তার আশ্রয়দাকাতে হত্যা করে নিজে বংশবৃদ্ধি করবে। তখন আর আশ্রয়দাতার আর কোন সুযোগ থাকে না সেইটা দমন করার।