somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়- সর্বোকালের সেরা ১০ জন যুদ্ধবিমান পাইলট (কত অজানা রে পার্ট-৪২)

১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


C. J. van Dühren for Willi Sanke, Berlin 1917
পাইলট !!! আমার জীবনের প্রথম স্বপ্ন ছিলো একজন জেট ফাইটার পাইলট হওয়া। আকাশে ডানা মেলে উড়ার মধ্যে যে উন্মাদনা, যে এড্রিনালিন রাশ আছে তা আর কোন পেশায় নাই। সাথে যদি একশন থাকে তাহলে তো কোন কথাই নাই। আমি একজন ডাইহার্ড ফেন অফ পাইলটস। পাইলটদের নিয়ে যদি কোন মুভি বা ফিচার পড়ি, তা দেশি হোক বা বিদেশি, আমার মাথা খারাপ হয়ে যায়, গায়ের লোম দাড়ায় যায়। ধুর, আর কথা বড়াইতে ইচ্ছা করতাছে না। আজ বলবো পৃথিবীর ইতিহাসের বিখ্যাত ১০ জন Flying Aces কথা।

১০) Joseph Christopher McConnell, Jr – US ace pilot


কোরিয়ান যুদ্ধে তিনি ছিলেন ইউএস ace pilot। ১৬ টি শত্রু Mig-15 aircraft তিনি ভুপতিত করেন। তিনি তার বীরত্বের জন্য "Distinguished Service Cross" ও "the Silver Star" অর্জন করেন। তিনি এখনো আমেরিকার টপ স্কোরার এবং সবচেয়ে সফল জেট ফাইটার পাইলট।

৯) Air Vice Marshal James Edgar ‘Johnnie’ Johnson – British ace pilot


তিনি ছিলেন "top scoring WWII Allied Ace"। “Johnnie” ছিলো তার সহপাইলটদের দেওয়া নিক নেম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ নাগাত তার কমব্যাট মিশন ছিলো ১০০০ এর বেশি !!! এবং সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো তাকে এর ভিতর কখনোই ক্রাশল্যান্ড করতে হয় নি, কেও তাকে ভুপতিত করতে পারেনি, শধুমাএ একবার তাকে নেমে আসতে হয় কারন তার স্পিটফায়ার শত্রুদের আক্রমনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলো বলে। ৩৮ টি কনফার্ম কিলিং যা ছিলো কোন RAF pilotদের ভিতর অফিশিয়ালি সর্বোচ্চ। তিনি বীরত্বের জন্য "the DSO and two bars", "the DFC and bar", "the Legion d’Honneur" and "the Croix de Guerre" অর্জন করেন এবং তাকে বলা হয় "the most decorated British pilots of all time"। যুদ্ধের পরও তিনি রয়াল এয়ার ফোর্সে থেকে যান এবং কোরিয়ান যুদ্ধে তিনি ইউএস এয়ার ফোর্সের হয়ে যুদ্ধে করেন এবং বীরত্বের জন্য "American DFC" অর্জন করেন।

৮) Kurt Welter – WWII German ace pilot


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান বাহিনী পৃথিবীকে the Messerschmitt 262 এর মত কিছু কঠিন জেট ফাইটারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো। সেই সময়ে এই ফাইটারের সমকক্ষ আর কোন ফাইটার কারও কাছে ছিলো না। সেই সময়ের সবচেয়ে দ্রুতগামী ফাইটার ছিলো এটি। আর তেমন একটি কঠিন ফাইটারের পাইলট ছিলেন Kurt Welter। ৯৩ কমব্যাট মিশন থেকে ৬৩ কনফার্ম কিলিং ছিলো তার স্কোর যার ভিতর ৫৬ টি ছিলো রাতে যার ভিতর ৩৩ টি ছিলো মসকুইটো এয়ারক্রাফ্ট। এমন কি এখনো এটি একটি রেকর্ড যে তিনি জেট ফাইটার দিয়ে শত্রু যুদ্ধবিমান ভুপতিত করেন।

৭) Captain Albert Ball – British ace pilot


প্রথম বিশ্বযুদ্ধে Captain Albert Ball ছিলেন "Britain’s highest scoring ace fighter pilot"। ১৯১৬ সালে তিনি ব্রিটিশ রয়েল এয়ার ফোর্সে যোগদান করেন। খুবই দ্রুত তিনি নিজেকে ডেয়ারিং পাইলট হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেন। কয়েক মাসের ভিতর তিনি ৪৩ টি সাপ্লাই প্লেন, ফাইটার প্লেন ও বেলুন ধ্বংষ করেন। ১৯১৭-এ এক সন্ধ্যায় তিনি আর তার উইংম্যান Lothar von Richthofen মিলে একঝাক জার্মান যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে, তারা দুজনই ক্রাসল্যান্ড করে, Ball মারা যান, Lothar সারভাইব করেন। বীরত্বের জন্য এই ২০ বছর বয়সী পাইলট "the Victoria Cross" অর্জন করেন।

৬) Ernst Udet – German WWI ace


১৯১৫ সালে তিনি জার্মান এয়ার ফোর্স "the Luftwaffe"-এ যোগদান করেন। ১৯১৬ সালে তিনি প্রথম শত্রুবিমান ধ্বংস করেন। তিনি রেকর্ড ২২ টি ফ্রেঞ্চ যুদ্ধবিমানের সাথে একা ডগফাইট করেন। ৬২ টি কনফার্ম কিলিং তাকে তালিকায় ২য় স্থানে নিয়ে যায়। তিনি জার্মান বাহিনীর পাইলটদের ভিতরে সর্বোচ্চ স্কোরার যিনি সারভাইব করেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তিনি পাবলিক এয়ারশো তে পারফর্ম করতো। তিনি ১৯৩৫ সালে আবার "the Luftwaffe" যোগদান করেন কিন্তু ১৯৪১ সালে আত্মহত্যা করেন। :(

৫) William Avery “Billy” Bishop – Canadian ace


১৯১৫ সালে তিনি ব্রিটিশ রয়েল এয়ার ফোর্সে যোগদান করেন এবং ১৯১৭ সালে অফিশিয়ালি পাইলট হন। ৭২ টি কনফার্ম কিলিং তাকে "the top Canadian and British Empire Ace of WWI" সম্মান এনে দেয়। মাএ ১২ দিনে ২৫ টি শত্রুবিমান ধ্বংস করে তিনি "Distinguished Flying Cross" অর্জন করেন। তিনি একা একটি জার্মান aerodrome ধ্বংসের জন্য "the Victoria Cross" খ্যাতাবে ভুষিত হন। তিনিই প্রথম কানাডিয়ান পাইলট যিনি এই সম্মান পান।

৪) René Fonck – French ace pilot


René ছিলেন WWI-এর মিত্রবাহিনীর সর্বোচ্চ-স্কোরিং পাইলট। তার ১৪২ টি আনকনফার্ম কিলিং ও ৭৫টি অফিশিয়াল কিলিং (মোট ১০০ কাছাকাছি হতে পারে) তাকে পৃথিবীর বেষ্ট ডগফাইটারে পরিচিত করে। ১৯১৫ সালে তিনি একজন প্রতিভাবান ডগফাইটার হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন এবং ১৯১৭ সালের ভিতর সে ৫০০ ঘন্টা ফ্লাইং টাইম কাভার করেন। দুই-দুইবার তিনি একদিনে ছয়টি করে যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেন। তিনি একাধারে একজন বিখ্যাত ডগফাইটার ও অসাধারন মার্কসম্যান ছিলেন।

৩) Edward Mannock – British WWI ace pilot


এডওয়ার্ড একটি অদ্ভুত চরিত্র ছিলেন। সমাজতন্ত্রের প্রতি ঝোঁক, রাজনৈতিক পরিচয় তার ভিতর জার্মান শত্রুদের প্রতি একটি গভীর এবং স্থায়ী ঘৃণা তৈরি করে। তিনি একবার এক জার্মান পাইলট এবং কো পাইলটকে ঠান্ডা মাথায় ম্যাশিনগান দিয়ে ব্রাশফায়ার করেন এই বলে যে " The swines are better dead – no prisoners.”। ৭৩ টি কনফার্ম কিলিং তাকে আকাশচুরা খ্যাতি এনে দেয়। অবিশ্বাস্য ব্যপার হলো তিনি তার বাম চোখে প্রায়ই দেখতে পেতেন না। তার সমকক্ষ প্রতিপক্ষের হাতে ১৯১৮ সালে গুলিবিদ্ধ হয়।

২) Baron Von Richthofen – German WWI ace


জার্মান এয়ারশো পাইলট ব্যারন ভন Richthofen সম্ভবত ২০ শতকের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং সবচেয়ে কুখ্যাত পাইলট ছিলেন। ১৮৯২ সালে তিনি Breslau জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হান্টিং এবং পর্বতারোহনে একজন ডিয়ারডেভিল ছিলেন। ১৯১৫ সালে তিনি একজন bombardier হিসাবে Luftwaffe-এ যোগদান করেন কিন্তু তিনি দ্রুত বুঝতে পেরেছি যে, তার ট্যালেন্ট অন্যখানে এবং শীঘ্রই যুদ্ধবিমানের পাইলট হিসাবে প্রশিক্ষণ নেন। ১৯১৬ সালের এর শেষের দিকে, তিনি মেজর Lanoe Hawker সহ ২০টি শত্রুবিমান ধ্বংস করেন। অফিশিয়ালি ১৯১৮ সালের এপ্রিল নাগাদ তিনি ৮০টি শত্রুবিমান ধ্বংস করেন। ২১শে এপ্রিল একজন ব্রিটিশ সৈন্যের ছোড়া .303 বুলেটে মৃত্যুবরন করেন।

১) Erich Alfred Hartmann – German WWII ace


এই ছবিটি সব সময় সর্বশ্রেষ্ঠ পাইলটের। WWII-এ তিনি "Luftwaffe" যোগদান করেন এবং কয়েকদিনের মধ্যেই কিংবদন্তি হয়ে উঠেন। “The Black Devil” ছিলো তার নিক নেম। ৩৫২টি আনঅফিশিয়াল কিলিং রেকর্ড ছিলো তার। তিনি ১৪বার ক্র্যাশল্যান্ডিং-এ বাধ্য হন, কিন্তু তিনি কখনো আহত হন নাই বা তার বিমান ভুপতিত হয় নি। জেটফাইটার পাইলটদের ভিতর তিনি ছিলেন গড-ড্যাম-লাকি ও চৌখোষ।

ধন্যবাদ সবাইকে ...

আগের কয়েকটি পোস্ট- সাথে একটি মেগাপোস্ট---
"কত অজানারে" সিরিজ সংকলন (১ থেকে ৩৮) একত্রে এক পোষ্টে
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়- মিথোলজীর ১০ জন বিখ্যাত ডাইনি (কত অজানা রে পার্ট-৪১)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়- ১০ জন বর্তমান সময়ের বেবি জিনিয়াস (কত অজানা রে পার্ট-৪০
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়- বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ১০ জন (কত অজানা রে পার্ট-৩৯)

PROJECT 'A BEAUTIFUL SMILE' মাস্ট রিড।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৪
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অণু থ্রিলারঃ পরিচয়

লিখেছেন আমি তুমি আমরা, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


ছবিঃ Bing AI এর সাহায্যে প্রস্তুতকৃত

১৯৪৬ কিংবা ১৯৪৭ সাল।
দাবানলের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
যে যেভাবে পারছে, নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। একটাই লক্ষ্য সবার-যদি কোনভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো - ছবি ব্লগ

লিখেছেন শোভন শামস, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯

"পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো", কিংবা "পোস্টকার্ড রো" বা "সেভেন সিস্টারস" নামে পরিচিত, বাড়িগুলো। এটা সান ফ্রান্সিসকোর আলামো স্কোয়ার, স্টেইনার স্ট্রিটে অবস্থিত রঙিন ভিক্টোরিয়ান বাড়ির একটি সারি। বহু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×