somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসি বলব বলে,,,

০৩ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


"এই তোমার কি কালকে ক্লাস আছে?" অর্পিতা তার কথার মাঝে হঠাৎ প্রশ্ন করল অর্জুনকে।কিছুক্ষন ভেবে চিন্তে অর্জুন উত্তর করল,"হে! আছেতো, কালকে সকাল ৯টা থেকে আমার ক্লাস।সকাল ৮:৩৫ এর বাসে করে আমি যাব।কেন বলতো কেন হঠাৎ!!!
না এমনিতেই জানতে চাইলাম।কখন থেকে শুরু তোমার ক্লাস উত্তর করল অর্পিতা।
অহ আচ্ছা! একটু সান্তনার ঢেকুর ফেলে বলল অর্জুন।ইদানিং অর্জুনকে একটু অন্য মনস্ক দেখাচ্ছে,কোন কাজে মন নেই,পড়ালেখাা নেই,কবিতা-বই প্রেমী অর্জুন ইদানিং কাল যাবৎ আর বই পড়েনা।কি নিয়ে ভাবে সবসময়।তাই হয়ত অর্পিতার হঠাৎ আচমকা এমন প্রশ্নেও তার কোন নড়চড় নেই মনে হচ্ছে।আবার অর্পিতা মেয়েটাও ইদানিং নিজ কর্ম থেকে এক কদম সড়ে এসে অন্যদিকে ঝুকে বসেছে।সে এখন অন্যের মাঝে নিজেকে খুজে পায়।অর্জুন হল অর্পিতার সেই নিজেকে হারানো ধু ধু হাহাকার করানো মাঠ।অর্পিতা তাকে ইদানিং অনেক ফিল করে,তাকে সে খুজে পায় ঐ গহিন বনের অদুরে অর্জনের মাঝে।আজ রাত ১০:৪৫ মিনিট হঠাৎ সে কেনই বা জিজ্ঞেস করল কখন সে ক্লাসে যাবে?

অর্জুন ছেলেটা খুব পড়ুয়া গোছের ছেলে।মন খারাপ থাকলেই সে বই নিয়ে বসে তাই আজও তার ব্যতিক্রম কিছু পাওয়া গেল না তার ভিতর।বই নিয়ে বসছে পড়বে বলে।অর্পিতা তাকে ফোন দিয়েছিল সে দিকে তার কোন কর্ণপাত নেই তার, মন আবার বইয়ে।হাতে A.P.J.Abdul kalam এর Turning point নিয়ে পড়তেছিল।আর এমন সময়ই অর্পিতার ফোন।পাঠক হয়ত ভাববেন এটা তার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।তাহলে দেখা যাক শেষ অবধি কি হয় তার পরিণতি।

অর্পিতা মেয়েটার নিজের তত বেশি বইয়ের দিকে ঝোক নেই।আজকাল তারও একটু আধটু বই প্রেম শুরু হল বৈ।রাত তখন ১২.১২ মিনিট অর্পিতা তখনও একটা বই আর একটা ডায়েরী নিয়ে তাতে কি আকি-বুকি করতেছিল।
ভাবতেছিল উপড় পানে চেয়ে,আবার ডায়েরীতে চোখ।হঠাৎ দেখা গেল ব্যাগ থেকে একটা গোলাপ পাপড়ী নিয়ে রাখল ডাইরিটার মধ্যে।লাল টুকটুকে গোলাপ পাপড়ীটা সাদা ধবধবে ডায়েরীর পাতায় রাখায় যেন আঠারোর যৌবন আগুনে জ্বলে উঠল ডায়েরীটা। ডায়েরীটা হাতে নিয়ে পাশে থাকা রেমার্কের(ইংরেজ কবি) "সপ্ন মৃত্যু ভালবাসা (বইটি খুররম হোসাইনের অনুবাদ করা)" বইটার পাশে রাখল।রাত তখন ০১:২৮। আজ এখনও অর্পিতার চোখে ঘুম নেই।কি এক পাওয়া যেন তাকে টানছে।
টার্নিং পয়েন্ট বইটার প্রায় অর্ধেকটা শেষ করে ফেলল অর্জুন।রাত তখন ০১:৩৬ ফ্রেশ হয়ে পানি খেয়ে শুয়ে পরল।আবার উঠতে হবে সকালে এই চিন্তা মাথায় রেখে দ্রুতই ঘুমিয়ে পরল নিশাচর অর্জুন।

একটা ব্যাগে,লাল রংয়ের একটা ব্যাগে বইটা আর ডায়েরীটা নিয়ে টেবিলের উপড় রাখল অর্পিতা।এবার একটু ঘুম পাচ্ছে চোখে।ঘুমুতে যাবে হঠাৎ মনে পরল আহ্! আমাকে যে আবার সকালে উঠতে হবে।এলার্ম ঘড়িটা হাতে নিয়ে ৭:০০ টায় এলার্ম দিয়েই সে লুটিয়ে পড়ল অসার ঘুমে।

সকাল ৬:৩০ অর্জুন ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হতে হতে ৭:৪৫ বেজে গেল।ক্যাম্পাসের প্রয়োজনীয় বই নিয়েই দৌড় মারল ডইনিংয়ে।

এলার্ম করতে করতে ঘড়িটা যেন কান্নায় মুহ্যমান প্রায়।কিন্তু অর্পিতার ঘুমের কোন হেরপের নাই।অতঃপর ৭:৩০ তার একটু হুস হলল ,সে একটু চিন্তিত হয়ে গেল।দ্রুত ব্যাগ গুছিয়ে নাসতা না করেই রিক্সা ধরে দৌড় মারল অর্জুনের বাসের উদ্দেশ্যে, বাস স্ট্যান্ডে।

৮:৩০ অর্জুন সকালে নাস্তা করছে।হঠাৎ পকেট কেপে উঠল মোবাইলের কাফনিতে।উঠিয়েই দেখে যে এতো অর্পিতা,ফোন রিসিভ করল অর্জুন।
অর্পিতাঃহে! কই তুমি?
অর্জুন একটু অবাক হয়ে বলল;আমি হলে,খাচ্ছি এখনও।
উত্তর দিতে গিয়ে অর্পিতা বলে ভার্সিটি যাবা না আজকে?
আমি আসতেছি -অর্জুন বলল।

৮:৩৫ এর বাস, আজ একটু দ্রুতই বের হল অর্জুন।৮:১৫ বাসস্ট্যান্ডে হাজির।
একটু দুরেই একটা মেয়ে দাড়িয়ে।ঝাপসা দেখা যাচ্ছে,কুয়াশার কারনে স্পষ্ট নয় কিছুই।একটু কাছে যেতেই মনে হল এটা অর্পিতা, না? অর্জুন আর একটু এগোতেই নিশ্চিত হল, এটা অর্পিতা।আরো একটু এগিয়ে গেল অর্জুন।যেতে যেতে একেবারে কাছেই চলে গেল অর্জুন।অর্পিতা তাকে দেখে যেন থমথম খেয়ে গেল।হাতে থাকা বইটা আর ডায়েরীটা মাটিতে পরে গেল আর ফুলটা মাটিতে পরে রইল।বইটা মাটি থেকে তুলল অর্জুন,তুলে অর্পিতার হাতে যেই দিল অমনি অর্পিতাও ফুলটা তার হাতে দিল।অর্জুন কিছু না বুঝি করেই ফুলটা নিয়ে নিল।তার বন্ধ মুখ দেখে অর্পিতাও বন্ধ হয়ে গেল।৮:৩০ বাজে,বাস ছাড়তে আর মাত্র পাঁচ মিনিট।হঠাৎ অর্পিতার চোখের কোণে পানি চলে আসছে,তাকে হারাতে হবে অর্জুনকে।অর্জুন ছেলেটা যে একটু বোকা সোকা,সে আজও বোকাই রয়ে গেল।বলল- এই সময় হয়ে গেল আমি যাচ্ছি।"এই দাড়াও"! অর্পিতার মুখে হঠাৎ খই ফুটল।হাতে থাকা বই "সপ্ন মৃত্যু ভালবাসা " আর ডায়েরীটা তার হাতে দিয়ে বলল, "এটা তোমার জন্য"।অর্জুন একটুও না ভেবে লুপে নিল,ভাবল হয়ত কিছু লিখা যাবে।হঠাৎ বাসের আওয়াজ বাস ছাড়ল বলে,অর্জুন দৌড় দিল বলে,এমন সময় তার বাম হাতটা বাধা পড়ল অর্পিতার হাতে।
অর্পিতা তার চোখে চোখ রেখে বলল, "আমি তোমাকে ভালবাসি"।
উত্তরে অর্জুন যা বলল, "আমি যাচ্ছি"।
অর্পিতা ভারাক্রান্ত কন্ঠে বলল, "আচ্ছা যাও, ভাল থেকো।"

একটুও বিচলিত মনে হয়নি অর্পিতাকে,সে কি ভেবে নিরবে আবার পথ ধরল।হয়তো এই ভেবেই সে পথ ধরল যে,ভালবাসার নাটাই একবার ঘেথেছি যখন,হয়ত আর ছিড়বেনা কবু।পথ চলা শুরু হল ভালবাসার।চলতে চলতে যতদুর যতদুর যতদুর... যায়।

"যেখানেই যায় যে পথেই
যাই ঠমকে দাড়াই
তুমিহীনা এ পথ আমি
কেমনে বাড়াই।"

তুমি হীনা, সায়েম।

>> রচনাকাল-,
১৩/০২/২০১৬,
হল-৩ সিটি ক্যাম্পাস,
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,
চট্টগ্রাম।

টাইপিং-- খাদিজা,,,
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৩৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×