কুটনৈতিক তৎপরতায় ভারতের শোচনীয় পরাজয়ঃ
উরি সীমান্তে জঙ্গি হামলার পরই উত্তাল হয়ে উঠে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। এতদিনের কোল্ড ওয়ার এখন রুপ নিচ্ছে কাউন্টার এট্যাক, সাইবার এট্যাক বা ওরাল এট্যাকে। সীমান্তে দুইদলই নিজেদের শক্তির মহড়া দেখায়য় কিন্তু সময়ের ব্যবধানে ভারত লেজ গুটিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়। বেশ কয়েকদিন হৈ হুঙ্কার চালালেও পরের জোরে আর কতদিন, তাই আর টিকিয়ে থাকতে পারেনি বিশ্বের সর্ববৃহৎ গনতান্ত্রিক দেশটি।
লোহা লক্করের প্রতিযোগিতায় এক প্রকার পিছিয়ে ছিল পারমানবিক শক্তিধর এই দেশটি। অতঃপর তারা শুরু করে কুটনৈতিক তৎপরতা, উদ্দ্যেশ্য পাকিস্তানকে সকলের কাছে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে প্রমান করে একঘরে করা। প্রথম প্রথম তা সফলতার মুখ দেখলেও হঠাৎ পা ফসলে গভীর খাদে পড়তে বসেছে হাতি(বৃহৎ) দেশটি। জাতিসংঘের সাধারন অধিবেসনে কাশ্মীর হামলা নিয়ে কথা তুলে ভারত, পাকিস্তান যেখানে পাশ কাটানোর চেষ্টাই মাত্র করেছে।
আসুন দেখি তাদের নানান কুটনৈতিক তৎপরতা
সার্ক সম্মেলনঃ জাতিসংঘের পরপরই আসে ইসলামাবাদের সার্ক শীর্ষ সম্মেলন, ভারতের একক তৎপরতায় দক্ষিন এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোকে এক করে বাতিল করে সার্ক সম্মেলন-২০১৬। এর পক্ষে সার্কভু্ক্ত প্রতিটি দেশ থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়াও আদায় করতে সক্ষম হয় উপমহাদেশের সিংহরাষ্ট্র ভারত।
ব্রিকস্ সম্মেলনঃ পরের থাবা আরো একটু বড় এবং রিস্কি। উদ্দ্যেশ্য গোয়ায় অনুষ্ঠিতব্য ব্রিকস্ সম্মেলন-২০১৬। সংগঠনের মুল উদ্দ্যেশ্য "পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন "। কিন্তু আয়োজক দেশ ভারত তা ভিন্নখাতে পরিচালনার হিন উদ্দ্যেশ্যে বারবার বারবার তাতে পাকিস্তানের সাথে তাদের চলমান বিরোধের কথা টেনে আনে। অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সামনে পাকিস্তানের ইমেজকে খাট করাই ছিল এর মুল লক্ষ্য। কিন্তু এর মোড় ঘুরে বসে অন্য চার সদস্য। তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একচেটিয়া পেনপেনানিতে বিরক্তই হয়েছেন বলা যায়,খবর স্ব স্ব দেশের মিডিয়ার। তিননি যেসব দেশের কাছে পাকিস্তানের বিপক্ষে কথা বলতে বসেছেন তার দুইটাই পাকিস্তানের বর্তমান সময়কার মিত্র এবং অন্য দুটি (ব্রাজিল ও দ.আফ্রিকা) এসবের ধারে কাছেও নাই। এ ব্যাপারটা আমার কাছে একটু অদ্ভুত বলে আমি এমন উদ্বৃতি করি, "মায়ের কাছে নানির বদনাম "। যদিও ভারতের শীর্ষস্হানীয় পত্রিকা "আনন্দবাজার " এই প্রচেষ্টাকে ভুল পিছে বল ফেলা হিসেবেই আক্যা দিয়েছে।
সুচি, মায়ানমারঃ এবারের লক্ষ্য পার্শবর্তী, আজ্ঞাবহ দেশ মায়ানমার। সুদুর ইয়াংগুন থেকে উরে এসে পাশে বসলেন মিয়ানমারের জনমানুষের নেত্রী ও ১৯৯১ এর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সুচি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে সাড়া দিতেই তার এই সফর সাথে ছিল গুটিকয়েক নামমাত্র চুক্তি। আনন্দবাজারের খবরানুযায়ী এবারও সুপার ফ্লপ সাবেক চা বিক্রেতা প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদী। ব্রিকস্ মেম্বারদের মন না পেয়ে সে এবার যদিও ছোট দেশ মিয়ানমারের দিকে নজর দিল কিন্তু শান্তি জয়ী সুচি তাকে প্রত্যাখান করে স্রেফ জানিয়ে দিয়েছে সে সকল সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কিন্তু কোন দেশ বা সংগঠনের বিরুদ্ধে সে কথা বলবে না। এবারও ফ্লপ মিস্টার মোদী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রঃ পাকিস্তানের বিখ্যাত কলামিস্ট হামীদ মীর তার গতকালের কলামে এমন একটি উক্তি লিখেছিলেন, "হাতির যখন মরন আসে তখন সে শহরে যায়, আর বিশ্বের যে দেশের বিপদ ঘনিয়ে সেই দেশই আমেরিকার দারস্ত হয় "। একসময় পাকিস্তান আমেরিকার দারস্ত হয়েছিল তখন রাশিয়া ভারতকে সমর্থন জোগায় । তখনকার উদ্বৃতি দিয়ে মি মীর বলেন পাকিস্তান যে ভুল আগে করেছিল ভারত তা কয়েকদিন পরে করতেছে। ব্যাবধান শুধু সময়ের। এবার আসি মুল টপিকে, এই উত্তেজনার শুরুতেই দেখেছি আমেরিকা ভারতের পক্ষে অবস্হান নিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অন্যদিকে রাশিয়া ও চীন পাকিস্তানকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু বিপত্তি ঘটেছে এখন যখন ব্রিকস্ সম্মেলনের মাধ্যমে ভারত চীন ও রাশিয়াকে নিজেদের বুকে টানার চেষ্টা করেছে। এহেন কর্মকান্ডে এমন মনকষ্ট পায় বিশ্বের কর্তা দেশটি অতঃপর একটু হাফছাড়া ভাবেই ভারতকে দুরে রাখতে চাচ্ছে তারা।নয়াদিল্লি নিজেদের কর্মকান্ড নিয়ে হোয়াইট হাউস মুখপাত্রকে বিবৃতি দিতে বললে তিনি একপ্রকার পাশ কাটিয়েই যান বলে আনন্দবাজার ও বাংলাদেশের দৈনিক নয়া দিগন্তের খবরে জানা যায়।
কথায় বলে, "অতি চালাকের গলায় দড়ি ", ভারত আজ তারই শিকার। কোমড়ে আটি বেধে যখন যুদ্ধের ময়দানে ঝাপ দেয় তখনই সে হারায় তার লাইফ জ্যাকেটকে।
তথ্যসুত্রঃ দৈনিক নয়া দিগন্ত, দৈনিক আনন্দবাজার, দৈনিক কালেরকন্ঠ, দৈনিক প্রথম-আলো।