সিটিসেলের কপাল পুড়ল
১৯৯১ সালে প্যাসিফিক টেলিকম বাংলাদেশ নামে শুধু রাজধানী ঢাকাতেই নিজেদের যাত্রা শুরু করে বহুজাতিক এই টেলিকম প্রতিষ্ঠানটি।পরে তা "সিটিসেল" নামে রুপান্তর করা হয়। ১৯৯৭ সালে তা বিস্তৃত করে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম পর্যন্ত করলে তাদের গ্রাহক সংখ্যা সর্বোচ্চ চুড়া ৫০ লক্ষ ছুয়ে যায়। কিন্তু বিপত্তি ঘটে ঐ বছরই, দেশে এসে হাজির হয় আরো তিন তিনটি বিদেশী কোম্পানি যার ফলে লোকসান গুনতে হয় দেশের প্রথম অনুমোদন প্রাপ্ত এই টেলিকম কোম্পানিকে। এর পর থেকেই দিনদিন বাতি নিভতে থাকে তাদের।
যাত্রার শুরু থেকেই তাদের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ এই বলে যে তারা সরকারের কর ফাকি দিচ্ছে এবং ব্যাংকগুলোর ঋনও ঠিকমত পরিশোধ করছে না। ২০০১ সাল নাগাদ তাদের গ্রাহক সংখ্যা যখন ৫০ লাখ হিসেব করা হচ্ছে তখন থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের কারনে জৈলস হারাতে থাকে এই প্রতিষ্ঠানটি।২০১৬ সালের করফাকি ও বকেয়া হিসেব টান দিলে তাদের খেতা ছেড়ে পালানোর মত অবস্হা। সর্বশেষ ২০১৫ সালের এক জরিপে দেশে তাদের মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ কিন্তু ২০১৬ সালের বায়োমেট্রিক রেজিষ্ট্রেশনের ফলে তাদের গ্রাহক পাওয়া যায় মাত্র ২.৫ লাখ যা বাংলাদেশের অন্যান্য নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর তুলনায় একেবারেই নগন্য।
সর্বশেষ সরকারি করফাকির বিরুদ্ধে বিটিসিএলের করা মামলায় ৪৭৭কোটি ৬০ লাখ টাকা কর বকেয়ার কথা উল্ল্যেখ করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশনানুযায়ী তাদেরকে ১৯ অক্টোবর ২০১৬ এর মধ্যে ৩১৯ কোটি টাকা জমা দেয়ার কথা থাকলেও তারা ২০ অক্টোবর মাত্র ১৭০ কোটি টাকা জমা দেন। এতে হাইকোর্টের নির্দেশনা অবমাননার আরেকটি দায় এনে এবার তাদের বেতার তরঙ্গ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন বিটিসিএল। আজ ২০ অক্টোবর সন্ধ্যা ছয়টায় তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট তারনা হালিম।
অতঃপর কবর রচিত হল সিটিসেলের। সবাই অকেজো সিম হাতে সশ্রদ্ধ সম্মান প্রদর্শনের আহবান জানানো যাচ্ছে
#সাকা
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:৩৬