১। সুতোর টান
ভিতরে যে সুতোর টান তার কি নাম দিবো
আমি উত্তরে গেলে সে টানে দক্ষিণে
আষাঢ়ে গেলে সে টানে অগ্রহায়ণে।
আমি কাজের মানুষ
কোল জুড়ে সমকালের খাতা
পাতায় পাতায় বাক্য টেনেছি
পাতায় পাতায় অক্ষর টেনেছি
এখন আঁকছি বিন্দু থেকে বৃত্ত।
আমি কখনো গান পাগলা হয়ে
হেরে গলায় কন্ঠ সাধি
আমার খাতা শূন্য হয়ে যায়
সব বৃত্ত হয়ে যায় বিন্দু।
আমি গগণ দেখার ছলে
মন পবনের নায়ে ভাসি
ঐ সুদূরে কে বাজায়
হাসি কান্না বেদনার বাঁশী।
স্মৃতি কাতরতা বুঝি এমনই রসিক
খেলছে অদৃশ্য সুতো হয়ে।
২। একটি গল্পের অপমৃত্যু
যাবার আগে কিছু কথা বলে নেয়া ভাল। আগেই বলা হয়েছে কিছু। কিছু বা অস্ফুটে। ইশারায়। কেদারায় বসে বসে আঙুল ফুটিয়ে জীবন যাচ্ছিল। এক দিন ঘর ছেড়ে দোরে পা রাখলাম। দোর থেকে নদী। নদী থেকে অজানা গায়ে। আমার কাজের ভাঁজে ভাঁজে গাঁ দেখার স্বভাব। এরকমই এক ভ্রমণে এক অনাত্মীয়ের বাড়িতে উপযাচে চা মুড়ির দাওয়াতে উপস্থিত। দাওয়াত খেয়ে ঢেকুর তুলতে তুলতে চেয়ারের পায়ের দিকে তাকিয়ে। চেয়ারের একটি পায়ে ঘুনে ধরেছে। নড়বড়ে হয়ে গেছে। কাষ্ঠ বিষয়ক গবেষণার মাঝে জীবন উপলব্দির সার্থক সমন্বয় ঘটানোর প্রাক্কালে পানের বাটার ঝনঝন শব্দে স্তব্দতা ভাঙ্গে। চেয়ে দেখি দুটি রাঙা পা। এরকম রাঙা পা'র মুখটি ক্যামনতর হতে পারে কল্পনায় আঁকা হয়ে গেছে। পান হাতে নিয়ে উঠোন ছাড়িয়ে দূরে তাকিয়ে থাকি। ব্যক্তিগত ভঙ্গিতে দেখি সেই পায়ের রেখার সাথে সেই মেয়েটির মিল। আমি আচানক দাঁড়িয়ে পড়ি। আমার প্রথম ভাললাগা স্বপ্নসজ্জা মেয়েটি। আমাদের গাঁয়ের এক প্রান্তে বাস করতো। নাজির উদ্দিন সাহেবের নাতনি। সেই আলালের ঘরের দুলালী জান্নাত আরা ঝর্ণা।
৩। ছেলেটা আর মেয়েটা
ছেলেটা খুব বেশী খেয়ালী
মেয়েটা বড্ড মেয়েলী
তারা রাত জাগে কামনা মাগে।
ছেলেটা চায় আরো কাছে
মেয়েটা আসে না লাজে
তারা শুধু কথার খই ভাজে।
ছেলেটা করে ফিসফাস
মেয়েটার উন্মাদ আকাশ
তারা ফেলে দীর্ঘশ্বাস।
ছেলেটার ব্যালান্স শেষ
মেয়েটার কথা বলার খায়েশ
ছেলেটার রাত হয় গত
মেয়েটার মনটা আনত।
ছেলেটার দিন শুরু হয়
মেয়েটার সকাল শুরু হয়
ছেলেটা বড্ড বেহিসেবী
মেয়েটা চলে কেতাবী।
তারা যায় রেস্তরায়
ছেলেটার পকেট ফুটো হয়
মেয়েটার সবে সকাল নয়
ছেলেটার বিকেল ফুরিয়ে ছয়।
এখন বয়স তাদের শেষ
তারা ঘর বাঁধে বেশ।
আজ ভাবে জুটিদ্বয়
আজকালকার জুটিরা
কি করে হায় হায়
শুধু শুধু টাইম পাস
যেমন গরু খায় ঘাস।
কবি কহেন,
এসবই তো দাদা
দুনিয়ার ধাঁধা
বট গাছটি যত
নষ্টের হাতিয়ার
যত দীর্ঘতর হবে
কাকে বাঁধিবে
সুখ সংসার।
এসবই তো
সময়ের ফের
শুরু করিলে পোয়ায়
শেষে হয় সোয়া সের।
পাদটীকাঃ এই তিনটি লেখার (কোবতে) মধ্যে প্রথমটাই ক'দিন আগে লেখা। তার মানে ইদানীং আমি তেমন কিছু লিখি না বা লিখতে পারি না। দ্বিতীয় এবং তৃতীয়টার জন্ম জানুয়ারীর দিকে। তৃতীয়তা মৃতপ্রায় কোবতে। মাঝে মাঝে কিসব আজগুবী লেখা লিখি তারই একটা নমুনা স্বরূপ এটা এখানে তুলে দেয়া হলো (যদিও আমার ম্যাক্সিমাম লেখা আজগুবী)।
ছবিঃ নিজস্ব এ্যালবাম। (স্থানঃ কারমাইকেল কলেজ, রংপুর)