দুনিয়ার অনেক মানুষের বিশেষ করে স্বদেশের অনেক মানুষের কাজই হচ্ছে অপর মানুষকে ঠকানো।
তবে আমি মনে করি, মানুষকে ঠকানোর মধ্যে বিশেষ কোন কৃতিত্ব নেই। কেউ যদি অন্য কোন মানুষকে ঠকায় তাহলে যে ঠকায় সেই মূলতঃ ঠকে। সে যদি খুব ধার্মিক হয় তাহলে তার ধর্ম অনুযায়ী সে পাপ করে। তার হিসাবের খাতায় পাপের পাল্লা ভারী হতে থাকে।
বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মানুষ মুসলিম। আমি ধরেই নিতে পারি, আমাদের মধ্যে কোন খারাপ মানুষ থাকতে পারে না। কেননা, যিনি আল্লাহ, তার রাসুল, হাদীস ও কোরানে বিশ্বাস করে তিনি মনে হয় না মানুষ ঠকানোর মতো কোন খারাপ কাজ করতে পারেন। যদি তিনি করেন তাহলে ধরে নিতে পারি তিনি এক জন ঠগ।
ঢাকা শহরেই দেখতে পাবেন- অনেক ব্যবসায়ী দাড়ি রেখেছেন। টুপি পরেছেন। ব্যবসা করছেন। অথচ তিনি মানুষকে ঠকিয়ে যাচ্ছেন। ব্যবসা অবশ্যই হালাল। কিন্তু জিনিসপত্রে ভেজাল দেয়া কি হালাল? অধিক মুনাফা করা কি হালাল? পণ্যের দোষ গোপণ রাখা কি হালাল? পণ্যে ভেজাল মেশানো কি হালাল? ক্রেতাকে ওজনে কম দেয়া কি হালাল? সঠিক গুণগত মানের পণ্য না দেয়া কি হালাল?
আপনি যদি কোন জিনিস ১০০ টাকা দিয়ে কিনে আনেন তাহলে সেটা আপনি ১২৫ টাকায় বিক্রি করুন । কিন্তু যদি আপনি সেটা ৩০০ টাকায় বিক্রি করেন তাহলে আমি মনে করি না সে আয় আপনার হালাল হবে। এটা হবে দিনে দুপুরে ডাকাতি করা। ডাকাতি কি হালাল হতে পারে?
দোকানে আম কিনতে যাবেন দেখবেন দোকানী ওজন দেবার সময় কুকৌশলে আপনার কেনা আমের সাথে পচা আম তুলে দেবে। ১০০ টা লিচু কিনবেন সে গুণে দিয়ে বলবে- আপনাকে ১০০টার পরে ৫ টা বেশী দিলাম। বাসায় এসে দেখবেন যে ৮০টিও হয় না।
ব্যবসায় করার নামে লোক ঠকানোর কাজ যারা করে তারা কতটা ভালো ভেবে দেখার দরকার আছে।
যে যার যার অবস্থান থেকে মানুষকে ঠকিয়ে যায়। ঠিকাদার সঠিক জিনিস দিয়ে স্থাপনা তৈরী করে না। রডের বদলে বাঁশ দিয়ে বানিয়ে ফেলে। ১ নম্বর ইটের বদলে দেয় ২ নম্বর ইট।
যে চাকরি করে সে বেতনটাকে টাকা মনে করে না। ঘুষ না নিয়ে কোন কাজ করে না। এটা লোক ঠকানো।
সমাজে যে যার অবস্থান থেকে এক জন আরেক জনকে ঠকিয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাই ঠকছি।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয়- ঠগ বাছতে গিয়ে না আবার গাঁ উজার হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৩২