পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম ও সবচেয়ে মহান পেশা হলো কৃষি। পৃথিবী কে বাঁচিয়ে রেখেছে মূলত কৃষকরা।
বাংলাদেশের প্রধান পেশা হল কৃষি। কৃষকগণ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করেন। সেই ফসল কম দামে বাজারে বিক্রি করতে বাধ্য হযন। কিন্তু যারা ভোক্তা তারা কিন্তু কম দামে পায় না। ব্যাপারটা এমনও হয়েছে যে, উৎপাদন খরচও ওঠে না । অথচ ভোক্তারা কিনে অনেক বেশি দাম দিয়ে।
এবছর দেশে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। অথচ কৃষক বাজারে ধানের দাম পাচ্ছেন না। আবার চালের বাজার যে সস্তা তাও কিন্তু নয়। কষ্ট করে ধান ফলিয়ে তা বিক্রি করে লোকসান দিয়ে কৃষকরা হতাশ।
এই অবস্থা থেকে বাঁচার একটাই উপায় আছে বলে আমার মনে হয়। সেটা হলো, কৃষক কোনভাবেই ধান সরাসরি বাজারে বিক্রি করবেন না। ধান থেকে চাল তৈরি করে তারপর বিক্রি করবেন।
সরকারের কৃষি ও খাদ্য বিভাগের উচিত হবে কৃষকরা যাতে সহজে ধান কেটে তা থেকে চাল তৈরি করতে পারেন সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ধান উৎপাদনের এলাকায় যথেষ্ট সংখ্যক চাল তৈরীর মেশিন বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষকরা কেন চাল মিল মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকবেন?
আরেকটি বিষয় করা যেতে পারে । সেটা হল, এলাকার কয়েকজন কৃষক মিলে ধান ভাঙানোর যন্ত্র ক্রয় করতে পারেন। সরকারের কৃষি বিভাগ ও খাদ্য বিভাগ এ ব্যাপারে প্রকল্প গ্রহণ করতে পারে। আমার মনে হয় না যে এলাকাভিত্তিক ছোট ছোট ধান ভাঙানোর মেশিন বসানো খুব বেশি ব্যয়বহুল হবে।
শোনা যাচ্ছে এখন এক কেজি ধান বিক্রি হয় 10 থেকে 12 টাকায়। 1 কেজি ধান থেকে যে পরিমাণ চাল হবে সে পরিমাণ চাল কিন্তু 10 টাকা দিয়ে কেনা সম্ভব নয়। 1 কেজি ধান ভাঙ্গাতে যদি দুই টাকা খরচ হয় তাহলে আমার মনে হয় কৃষক অনেক বেশি লাভবান হবে।
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী জানা গেছে, 40 কেজি ধান ভাংলে 30 কেজির মতো চাল পাওয়া যায়। প্রতি কেজি 50 টাকা করে ধরলেও 30 কেজি চালের দাম হবে পনেরশো টাকা। 40 কেজি ধান ভাঙানোর জন্য 100 টাকা খরচ ধরলেও কৃষক পাবে চৌদ্দশ টাকা।
তাহলে কৃষক কেন পানির দামে ধান বিক্রি করবে? কেন কৃষক ধান কে চাল বানিয়ে বিক্রি করবে না? কেন চালকল মালিকরা কৃষকদের মাথায় বাড়ি দিয়ে লাভ করবে?
বাংলার কৃষকদের প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা সরাসরি ধান বিক্রি করবেন না । ধান সংগ্রহ করে প্রথমে চাল তৈরি করুন। এইসব আপনাদের বাড়িতে সংরক্ষণ করুন। এখন প্রয়োজন মতো নিকটস্থ বাজার বা হাটে গিয়ে বিক্রি করুন।
আধুনিক যুগে পরে পরে মার খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ।