অনেক বছর আগেই ছিল ভালো। বেতন পেতাম কম । ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে অল্প কয়েকটা টাকা হাতে পেতাম। সেই টাকার কোন বান্ডিল করতে হতো না। চুপি চুপি পকেটে পুরে চলে আসলেই হতো। এখন আর সেই দিন নেই।
২০২৩ সালে এসে অবস্থা গেল বদলে। দিন বদলের পালা। সবই যখন বদলায় বেতনও বদলে গেছে। এখন মাস শেষে এক গাদা টাকা বেতন। এতো টাকা বেতন কেউ কি চেয়েছে? দরকার তো বাজার দর কম রাখা । এক বস্তা টাকা না। আর সম্ভব হলে নবাব শায়েস্তা খাঁর আমলের বাজার দরে ফেরত যাওয়া। সেটা তো আর সম্ভব না। কেননা, ডিজিটাল বাংলাদেশে ছেড়ে কেইবা ৪/৫ শত বছর আগের এনালগ যুগে ফেরত যেতে চায়!
আর তাই অনেক কষ্ট হলেও মাস শেষে বেতন হিসাবে একগাদা টাকা মেনে নিয়েছি। কিন্তু ব্যাংকওয়ালারা এটা কি করছেন? উনারা কি ডাক্তারদের সাথে আতাঁত করেছেন নাকি! নইলে আমাদের কে রক্তারক্তি কান্ডের মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন তারা?
পিন মেরে নোটের ১২ টা বাজিয়ে দিয়েছে!
কেননা, উনারা এখন টাকার বান্ডিলের নোটগুলো গণনা করে সেই বান্ডিল চেপে রাখার মহান অভিপ্রায়ে সেই নোটের বান্ডিলে এমন ইস্পাতের আখেরী পিন দিয়ে গেঁথে দেন যেন কোন নও জোয়ানও এই নোটের বান্ডিল কাল কেয়ামতের আগ পর্যন্ত অবমুক্ত করতে না পারে। অতি সাহসী কেউ যদি বৃথা চেষ্টা করেন তাহলে তাঁর হাতের আঙ্গুল কেটে রক্তপাত হবে। সেই রক্তপাত বন্ধ করতে চাইলে যেতে হতে পারে ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার দিবেন এই টেস্ট, সেই টেস্ট………!
সম্মানিত ব্যাংকার মহোদয়গণ, আমরা সুস্থভাবে ব্যাংকিং করতে চাই। ব্যাংকে গিয়ে আহত হয়ে ফিরে আসতে চাই না। দয়া করে টাকার বান্ডিলে এই রকম আখেরী ইস্পাতের পিন লাগাবেন না। এতে ব্যক্তি ও দেশের নানান ধরনের ক্ষতি হয়ঃ
১। এই অতি ভয়াবহ পিন খোলা কোন সাধারণ মানুষের কম্ম নয়। এই মাল খোলার মতো টুলস আমাদের বেশীর ভাগ মানুষের ঘরে নেই। প্রচলিত দা, বটি , ছুরি, কাঁচি দিয়ে এই পিন খোলা যায় না। আমি একবার শাবল দিয়ে চেষ্টা করে অর্ধ সফল হয়েছিলাম। কিন্তু নোটের ১২ টা বেজে গিয়েছিল।
২। বাকি থাকে মহান আল্লাহ সোবাহানা তায়ালার অনেক অনেক দয়ায় দেয়া হাতের আঙ্গুল। সেই আঙ্গুলও কেটে রক্তাক্ত হয়ে যায় এই সব নোটের বান্ডিলের ইস্পাত কঠিন পিন অবমুক্ত করতে।
৩। টানা হেঁচরা, ছেড়া ছেঁচরা করে শেষ পর্যন্ত নোটের বান্ডিল শেষ পর্যন্ত খোলা যায় ঠিকই । ততক্ষণে জাতির অর্থনীতির বিরাট ক্ষতি হয়ে যায়। ১০০ খানা নোটের বেশীর ভাগই টানা অবরোধের ঠেলায় আহত হয়। কোন কোন নোট হয়ে যায় ক্ষত বিক্ষত। এই দৃশ্য দেখলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাননীয় গভর্নর মহোদয় খুবই কষ্ট পেতেন। কেননা, তিনি জানেন, এই সব নোট বানাতে কত টাকা খরচ হয়। আমার নিজের ধারণা, টাকার এই সব নোট বানাতে বছরে কয়েক শত কোটি টাকা রাষ্ট্রের কোষাগার থেকে খরচ হয়ে যায়।
অথচ সেই নোটের বান্ডিলে ইস্পাতের সুকঠিন পিন লাগিয়ে দেশের অর্থনীতির বিরাট ক্ষতি করছেন আমাদের ব্যাংকারগণ।
আমার নিজের ধারণা, বিশ্বের কোন দেশের ব্যাংকওয়ালারাই তাদের টাকার বান্ডিলে এই রকম ইস্পাত কঠিন পিন লাগায় না। পিনের কি কোন বিকল্প বের করা যায় না?
জাতির মেধাবী নাগরিকরা একটু চিন্তাভাবনা করলেই সেই বিকল্প বের করতে পারবেন ইনশা আল্লাহ!
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:১১