আমি মোটামুটি সব লেখাই মন দিয়ে পড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু নিজে আসলে তেমন কিছু পোস্ট করা হয়ে উঠেনি। সদ্য সমাপ্ত CT-2017 নিয়ে আমার কিছু ভাবনাঃ
১। ওপেনিং জুটি নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবা দরকার। তামিমের একজন ভাল পারটনার দরকার যে লুজ বলে মারতেও পারবে আবার নিয়মিতভাবে বড় স্কোর বা পার্টনারশিপে কন্ট্রিবিউট করবে। সৌম্য ভাল তবে ওর অনেক দুর্বলতা আছে যেগুলোর ব্যাপারে ওর কোন সিরিয়াসনেস আছে বলে আমার মনে হয়না। আমি বলব নতুন কাউকে ভাবার চেয়ে যারা আছে (সৌম্য, ইম্রুল, আনামুল) এদেরকে ব্যাপক ভাবে সাইজ আপ করাটা বেশি যুক্তিযুক্ত। কারন অভিজ্ঞতা অমুল্য। সেক্ষেত্রে ওদের অনেক অনেক বেশি ওয়ার্ক আউট করতে হবে।
২। ৩ নম্বর পজিশানটা খুব ভাইটাল। এর জন্য কন্সিস্টেন্সি, বড় ইনিংস খেলার ক্ষমতা, টেকনিকালি সাউন্ড হওয়া এবং সর্বোপরি ব্যাপক ম্যাচিউরিটি থাকা দরকার। আমাদের টিমে কার মধ্যে এগুলা আছে। সাব্বিরকে বেশ কিছুদিন ধরে ট্রাই করা হচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় ও অনেক অস্থির। সেক্ষেত্রে আমার চয়েস মোসাদ্দেক। প্রশ্ন হচ্ছে ওর মধ্যে কি সব গুণগুলো আছে। হ্যা আছে। একটু ভালভাবে দেখলেই ব্যাপারটা বোঝা যাবে। সাব্বির ন্যাচারাল স্ট্রোক মেকার। ওকে আরো কিছুদিন ওর মত খেলতে দেয়া উচিত। এতে সবদিক দিয়েই লাভ। সাব্বির সাত নম্বরে খেললে শেষ ওভার গুলোতে কুইক কিছু রান এনে দিতে পারবে। আর আগে ভাগে ব্যাটিং ফল করলে দেখে শুনে ইনিংস খেলবে।
৩। আমাদের বলিং এর অবস্থা খুব বেশি খারাপ। স্ট্রাইক বোলার লাগবে। ফাস্ট স্ট্রাইক বোলার। আবারও আমি বলব নতুন কাউকে ভাবার চেয়ে যারা আছে (তাসকিন, রূবেল, শফিউল) এদেরকে ব্যাপক ভাবে সাইজ আপ করাটা বেশি যুক্তিযুক্ত। কারন ওই একই, অভিজ্ঞতা। স্পিন বোলার সংখ্যায় অনেক কিন্তু খুব একটা কাজের না। কারন কেউই এখন সেরকম ভাবে টারনিং উইকেট বানায় না। মিরাজের দিকে সিরিয়াসলি নজর দিতে হবে। হি ইজ গুড। বয়স কম, শেখার প্রবল আগ্রহ আছে। এক্ষেত্রে একজন ভাল বোলিং কোচ খুব দরকার। ওয়ালশ কে নিয়ে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে হতাশ। আমি ভুলও হতে পারি।
৪। এখন বলি একটা হতাশা নিয়ে। বাংলাদেশ টিমের লাইন আপ দেখলে মনে হয় সবাই অলরাউন্ডার, কিন্তু সেরকম কোন পারফরম্নেন্স আমরা কি পাচ্ছি। বেন স্টোকস কিংবা হার্দিক পান্ডিয়া কে দেখেন। হার্ড পাঞ্চ স্ট্রোক মেকার অলরাউন্ডার লাগবে, যে কিনা নেমেই ধুমধাম ছক্কা মারতে পারবে। আমি সেরকম কাউকেই দেখিনা। একারনেই বললাম এটা হতাশার জায়গা।
৫। একটা সময় ছিল যখন আমাদের টেইল ছিল সেইরকম। প্রত্যেক ম্যাচ এ দলীয় স্কোর এ বড় একটা অবদান থাকত শেষ ৩/৪ জনের। আর এখন তো ওয়ানডে মানেই ব্যাটিং। ৩৩০ ও লোকজন হেসে খেলে পার করে দেয়। শুধু দুর্বল টেইল এর কারনে আমাদের প্রতি ম্যাচেই ৩০/৪০ রান কম হচ্ছে। এটা ঠিক করতেই হবে। তাস্কিন কে ট্রেইন করতে হবে। বাকিদের নিয়েও সিরিয়াসলি একটা রাস্তা বের করতে হবে। ক্যাম্নে করবে জানিনা। বাট এইটা করতেই হবে নয়ত আমরা ‘ইশ আর কয়টা রান থাকলেই হইত’ থেকে জীবনেও বের হতে পারব না।
সবশেষে নিজেদের নিয়ে একটা কথা বলি। আমাদের ক্রিকেট এখন ওয়ার্ল্ডক্লাশ। আমরা সমর্থকরা কিন্তু এখনও পাড়ার সমর্থক, ওয়ার্ল্ডক্লাশ না। চলেন নিজেদের ক্রিকেট নিয়ে বেশিবেশি কথা বলি। অন্যদের কে ট্রল করে লাভ নাই। কুকুর ঘেউ ঘেউ করছে করুক না, আপনি ওইদিকে তাকাইয়েন না। সোজা রাস্তায় চলেন। কারন সে কুকুর, আপনি তো কুকুর না। একটা বিখ্যাত ইংরেজি উক্তি দিয়ে লিখা শেষ করছি (উক্তিটা কার জানিনা)
“Don’t fight with pig, he will play and you will get dirty”
অনেক অনেক শুভকামনা প্রানপ্রিয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য......