somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তথ্য অধিকার
তথ্য চাই তথ্য চাই !! আমি ভালোবাসি তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এবং এর বাস্তবায়নে যাতে সরকারী-বেসরকারী প্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সততা-ন্যাপরায়নতা ফিরে আসে, সেটাই আমার কামনা এবং আন্দোলন।

এই যদি হয় আদালতঃ ন্যায়বিচার এর বদলে প্রতিশোধমূলক হাস্যকর রায়

২৮ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১১ সালে হোসনে মোবারকের পতনের পর থেকে মিশর দিন দিন অধ:পতনের দিকেই যাচ্ছে। মাত্র একজন পুলিশ হত্যার দায়ে গত সোমবার ৫২৯ জন ইসলামপন্থিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার মাধ্যমে এটা দেখিয়ে দেয়া হয়েছে যে মিশরের বিচারব্যবস্থা কোন স্তরে নেমে এসেছে।''
একজন পাগলেও একে সুস্থ কাণ্ড ভাবতে পারবেনা !! আমরাও এ থেকে শিক্ষা নিতে পারি যে, আমাদের বিচারকরাও তো মানুষ এবং তাদের অনেকেরই রাজনৈতিক নিয়োগ হয়ে থাকে।
)

আপিলের মাধ্যমে এ রায়টা হয়তো পাল্টানো যেতে পারে। তবে এটা এই ভয়ানক অবস্থাকেই তুলে ধরছে-যেখানে সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত প্রশাসন মুসলিম ব্রাদারহুড ও মুরসির রাজনৈতিক মিত্র অন্যান্য ইসলামপন্থিদের ওপর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এ রকম পদক্ষেপ নেয়ার ফলে ঐ গোষ্ঠির সদস্যরা আরও চরমপন্থা গ্রহন করতে বাধ্য হবে। এর ফলে আরব বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।

এটা যে একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায় এটা বোঝা খুব কঠিন নয়। সামরিক বাহিনীর কর্তৃত্বকে যারাই প্রশ্ন করার চেষ্টা করবে বা মুরসি ও ব্রাদারহুডের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করবে তাদেরকে ভয় দেখানোর জন্যই এটা করা হয়েছে।

গত গ্রীষ্মে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া মুরসি ছিলেন মিশরের নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে আধুনিক মিশরের ইতিহাসে এটাই হচ্ছে এক সাথে সবচেয়ে বেশি মানুষকে দণ্ড দেয়ার উদাহরণ। এ রায় দেয়া হয়েছে এমন একটি বিচার প্রকিয়া অনুসরণ করে যেখানে মাত্র দুদিন সময় নেয়া হয়েছে। যেখানে একজন মানুষকে দণ্ড দেয়ার জন্যই দুদিন অনেক অল্প সময় সেখানে ৫২৯ জনকে একসাথে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া এক ভয়াবহ বিচারহীনতারই নজির।

মুরসির অপসারণের পর সংগঠিত দাঙ্গায় মাত্র একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যার অভিযোগে এতজনকে একসাথে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এতজনকে একসাথে দণ্ড দেয়া একেবারেই অস্বাভাবিক একটা ব্যাপার। তার উপরে মাত্র ১২৩ জন আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা হয় জামিনে অথবা পলাতক আছেন।

মুরসিকে অপসারণের পর দেশে মুরসি বিরোধী যে সেন্টিমেন্ট তৈরি করেছে সেনা কর্মকর্তারা, এরই একটা পদক্ষেপ হচ্ছে এ ভীতিকর রায়। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে তাড়াহুড়ো করে রায় দেয়ার মধ্যে এটাই প্রমাণিত হচ্ছে যে মুরসি সমর্থকদের ক্ষেত্রে মানবাধিকার চুড়ান্তভাবে লঙ্ঘন হচ্ছে।

এ রকম মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ১ হাজারেরও বেশি মিশরীয়কে গুলি করে হত্যা করা। তারা এ সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে নেমেছিল। আরও হাজার হাজার মিসরীয় জেলে আটক পড়ে আছেন।

সরকারের অবশ্যই অধিকার আছে অপরাধীদের শাস্তি দেয়া, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দেয়া। কিন্তু এ বিচারটা একটা প্রতিশোধমূলক বিচার। এখানে ন্যায়বিচার দূরের কথা সুষ্ঠু বিচারিক প্রক্রিয়াও মানা হয়নি।

এ রায়টা আটক অন্যান্য মিশরীয়দেরকে নিয়েও প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে যে তারা কি ন্যায়বিচার পাবেন সামরিক বাহিনী প্রভাবিত এ বিচারালয়ে? আল জাজিরার সাংবাদিকসহ এরকম আরও ৬৮৩ জনের বিচার শুরু হয়েছে মঙ্গলবার। তাদেরও মৃত্যুদণ্ড দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটা একটা পাশবিক বিচার প্রক্রিয়া যা মানুষের বিবেককে হিম করে দিতে পারে।

পরিহাসের ব্যাপার হচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন দুটি পৃথক বিবৃতি দিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ করছে। তারা এমন মৃত্যুদণ্ডে ‘গভীরভাবে চিন্তিত’ এতটুকু জানিয়ে দিয়েছে। তাদের এই বার্তা যে মিশরের অভিজাত, সামরিক শাসকগোষ্ঠির ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না এটা পরিস্কার।

(নিউইয়র্ক টাইমসে Egypt’s Miscarriage of Justice শিরোনামে প্রকাশিত সম্পাদকীয়র ভাষান্তর)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:১৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×