somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিম আনোয়ার
পেশায় ভূতত্ত্ববিদ ।ভালো লাগে কবিতা পড়তে। একসময় ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতাম। এখন সময় পেলে কবিতা লিখি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হল ভালো লাগে খুব। ভালোলাগে রবীন্দ্র সংগীত আর কবিতা । সবচেয়ে ভালো লাগে স্বদেশ আর স্বাধীন ভাবে ভাবতে। মাছ ধরতে

“হয়তো নয়তো” হুমায়ূন ফরীদি অভিনীত নাটক জন্মদিনে (২৯ মে) তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও অন্যান্য

২৮ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হয়তো নয়তো। ফরীদি অভিনিত একটি নাটক। নাটকে ফরীদি একজন ব্যাচেলর কবি। তার কবিতার বিষয় নারী।
বাড়িওয়ালার মেয়েকে নিয়ে ইতিমধ্যে ১০১টি কবিতা লিখেছেন। কবিতার বইটি প্রকাশনার অপেক্ষায়। কিন্তু মেয়েকে তার ভালোবাসার প্রস্তাবনা করা হয়ে ওঠে না। প্রেমের কথা বলতে গেলে গলা শুকিয়ে যায়। এক গ্লাস পানি পান করে তবেই রক্ষা। এ নিয়ে মেয়েটির কষ্টের সীমা নেই সেও ভালোবাসে ফরীদিকে। ফরীদি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে আর কবিতা লিখে। এক পর্যায়ে মেয়েটি ফরীদিকে বিয়ের আলটিমেটাম দেয়। কনের হাতে শেরোয়ানি সেটা তার উপস্থিতিতে পরে কাজী সাহেবের কাছে গিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারতে হবে। কাজীকে বাসায় ডেকে আনা হয়েছে। ফরীদি সময় চায়। কেন সময় লাগবে জানতে চাইলে ফরীদি বলেন যে তিনি ২২টি মেয়েকে প্রেমপ্রস্তাব করেছেন সেগুলো ফিরিয়ে নিতে তার ২২দিন সময় লাগবে। মেয়ে অবাক হয়। যে তাকে একবারও প্রেমের প্রস্তাব দিতে পারেনি সে কিভাবে ২২ জনকে প্রস্তাব দিলো। অবশ্য ফরীদি ব্যপারটি খোলাসা করেন যে তিনি ২২ জন কে নিয়ে কবিতা লিখেছেন। হা হা । আমার মতো এক রাতে ২২টি কবিতা লিখা সব কবির পক্ষে সম্ভব নয়!! কবিরা কি এমনই হয়? সে যাই হোক মেয়ের মামা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আলী জাকের যিনি এখনো বিবাহ করেনি। বিবাহ করা মানুষ আর মৃত মানুষ তার কাছে সমান। তার বিবেচনায় পৃথিবীটা নারীদের দখলে। সবখানে তাদের কর্তৃত্ব আর পুরুষরা এই পৃথিবীতে ভীন্ন গ্রহের এলিয়েনের মতো। অবিবাহিত মামা চরিত্রে আলী জাকেরর মতো সফল বাংলানাটকে আর কেউ নয়। বিবাহ নাটকের কথা মনে পড়ছে। নায়িকার ছোট ভাই ফেসবুক আসক্ত। তার দিনের শুরু হয় দুপুর ২:০০ টায়! আমিরুল ইসলাম চৌধুরি মেয়ের বাবার চরিত্রে। নাটকটি কমেডি ধাচের। নাটকে ফরীদি অনবদ্য অভিনয় করেছেন। তাকে কবিই মনে হবে। তার কন্ঠে আবৃত্তি সবাইকে মুগ্ধ করবে আর অভিনয়ে তিনি অনন্য অসাধারণ অতুলনীয়। কবির নায়িকা চরিত্রে চন্দা মাহাজাবীন দূর্দান্ত অভিনয় করেছেন। তবু আমার ইউটিউবে নাটক দেখার সময় মনে হলো এখানে সুবর্ণা অভিনয় করলে দারুন হতো। সুবর্ণা ফরীদির রসায়ন অসাধারণ অতুলনীয়। সুবর্ণা ফরীদির সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করে অভিনয়জগতের অপূরনীয় ক্ষতি করেছেন ক্ষমার অযোগ্য পাপের মতো। তাদের দুজনের উপস্থিতি দারুন ভাবে সমৃদ্ধ করতো নাটক কিংবা রুপোলী জগৎ। তারা দুজনে মিলে অসাধারণ কিছু উপহার দিতে পারতেন। নিজেদের আরো অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারতেন।সুবর্ণা তাতে খড়গ চলিয়েছেন নির্দয়ের মত। নাটকে সুবর্ণার অনুস্থিতিতে আমার অমনটা মনে হয়েছে। অন্যদের ক্ষেত্রে নাও হতে পারে। ২৯ মে ফরীদির জন্মদিন। এই লেখাটির অবতারনা তার জন্মদিন নিয়েই। জন্মদিনে প্রিয় ফরীদির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। রুপালী পর্দার সবচেয়ে গর্জিয়াস তারকা এই ফরীদি। ভিন্ন ধরণের চরিত্রে সাবলিল অভিনয় করে বহুমাত্রিক প্রতিভার প্রমান তিনি রেখেছেন। তার ইউনিক ভয়েস, তার অট্টহাসি, ট্রাজেডি কমেডি সবকিছুই অনন্য। খল চরিত্রেও তিনি অনবদ্য। তিনিই পেরেছেন খল চরিত্রকে নায়ক চরিত্রের মতো জনপ্রিয় করে তুলতে। আর তাইতো তিনি নক্ষত্র; অভিনয় জগতের ধ্রুবতারা। তার অভিনয় দেখে অনেকে অভিনয় শিখবে এটাই স্বাভাবিক। শত বছরে একজন ফরীদির জন্ম হয়। এই পবিত্র রমজানে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। না ফেরার দেশে ভালো থাকুক আমাদের ফরীদি । ফরীদি মরেও অমর হয়েছেন অভিনয়ের মাধ্যমে।





হুমায়ূন ফরীদি তুমি রবে নিরবে
শত ভক্তের হৃদয়ে
ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে
তুমি কাঁদিয়েছিলে—তুমি ভাবিয়েছিলে
তুমি দেখিয়েছিলে ভালোবাসার নীল আকাশ।

হে অভিমানি
তুমি প্রিয়ার অধরে সপেছিলে
বেলী ফুলের মালা জানি...

তুমি হাসিয়েছিলে— তুমি মাতিয়েছিলে
অগণিত বাংলা হৃদয়— বিস্ময়ে তাই
জেগে ওঠে মোর প্রাণ— এই হৃদয়ের মাঝখান।
হে নায়ক! হে অভিনেতা!! হে মুক্তিযুদ্ধা বীর!!
আমায় মন্ত্রমুগ্ধ করেছো যে
অশ্রুশিক্ত নয়নে তাই আজও তোমায় স্মরি ।




চপেটাঘাত

কে তবে এই ভবে বিলোবে আশার আলো
এই নিকষ অন্ধকারে—লোভে পড়ে
করছে পাপ, মরছে মানুষ
এই লোভে পড়া —কে থামাতে পারে।

অর্থেই যদি অনর্থ সব
পাপেই যদি মরণ; জগৎ জুড়িয়া বিদ্যমান
এ কিসের বিভাজন।

মত প্রকাশে নেই যে স্বাধীনতা
করতে যদি হয়—শুধু মিথ্যের উপাসনা।
এ কেমন মতাদর্শ; নির্যাতনে নিষ্পেষণে
মানবতা যেথা সতত পদপিষ্ট।

কেউ কি নেই এই ভবে?
মুক্তমনে হক ইনসাফের কথা যে বলবে ।

তা যদি না পারি, সত্য প্রকাশে যে উদ্ধত
তারে সমীহ তো করি।
সেই তো সবার সেরা; আশরাফুল মাখলুকাত,
যে অত্যাচারী মুখোশধারীর গালে— এক প্রচন্ড চপেটাঘাত।


আবারো আকূতি

অবশেষে দুপুর পেরিয়ে আসরের ওক্তে
ফাগুনের আগুন যেন ধরিয়ে দিলে
—আমার গায়ের রক্তে।

ধমনীগুলো যেন —এক একটি খরস্রোতা নদী
এই ক্ষত বিক্ষত হৃদপিন্ডে নিনাদ ওঠে
থাকতে পাশে যদি।

ধন দওলত টাকা কড়ি
হিসাব করি নাই—
তোমার প্রেমে অন্ধ আমি
কেবল তোমায় চাই।

এমনি করে কতো রাতি
কতো দিন যে —চলে গেলো
আমার কাছে আসার সময়
তোমার কি এবার হলো ?


শোক

রাত্রী যখন গভীর—ঘুমের বিছানায়
আমরা দু'জন অধীর— ঘুমের প্রতীক্ষায়
খোকন সোনা চাঁদের কণা
ঘুম আসছে না যে—
মুখে তার যেন কথার— খই ফোঁটেছে
সেকী তবে আসবে না ঘুম রাতে!
ঘুম কাতরে জননী তার
ভীষণ রগচটা — নাক ডেকে ঘুমের ঘোরে
তার নিঠোরতা সয়না— এই প্রাণে।
খোকন সোনা বকুনি খেয়েও
ওমা বলে যায় ছুটে—আবারো তার কাছে।
ঘুমকাতর মা ঘুমের ঘোরে মানুষ থাকে না!
অনেক কষ্ট বুকে
বলি আমি "খোকনসোনা ওকে আর মা ডাকিস না।"

মনে মনে প্রমোদ গুনি
খোকনসোনা আমিতো মা না।
শত চেষ্টায়ও তোকে মমতাময়ী মা
দিতে পারিলাম না
অনেক শোক লয়ে বুকে—আমার এই কাব্য রচনা।


প্রত্যাখ্যান

দেশকে ভালোবেসে—দশের কথা ভেবে
যারা যুদ্ধে গিয়েছিলো—
দেশের জন্য যারা জীবন উৎসর্গ করেছিলো—
অতঃপর যারা জীবন বাজী রেখে
পাকহানাদারের হিংস্র থাবা থেকে— ছিনিয়ে এনে
স্বাধীনতার লাল সবুজ পতাকা উড়িয়েছিলো
—এই বাংলার বুকে;
যারা সম্ভ্রম হারিয়েছিলো
ঘরবাড়ি পিতামাতা স—ব ছেড়ে
প্রিয়তমার হাতটি ছেড়ে
যারা জিঘাংসাবুকে নিয়ে হাতে অস্ত্র ধরেছিলো,
পাকহানাদারের যুদ্ধট্যাংক গুড়িয়ে দিতে
যারা প্রিয়তমা নয় বুকে জড়িয়ে মাইন
মৃত্যুর প্রহর গুনছিলো;
যে যুবক যুদ্ধ থেকে আসেনি আর ফিরে
মায়ের আঁচলতলে—
গোধূলির আলোয় পাখিরা যেমন নীড়ে ফেরে;
দেশমাতৃকা যাদের কাছে—এতখানি প্রিয়ো
তারাতো এদেশেরই সন্তান—তাদের বন্দনা করি;
তাদের জন্য আমি আজো কলম ধরি।
তাদের মতো বিশ্বজয়ী বীর আর জন্মেনি কোনখানে
নির্দ্ধিধায় বলতে পারি—
তাদের যারা অসম্মান করে বাক্যবানে প্রশ্নবিদ্ধ করে
তারা এদেশের শুভাকাঙ্খি নয়—তারা এদেশের ক্ষতি করে
অন্য দেশের স্বার্থ চারিতার্থ করে।
আমরা তাদের ঘৃণা করি— চলো ঘৃণাভরে আমরা সবাই
তাদের প্রত্যাখ্যান করি।




উৎসর্গ ঃ হুমায়ূন ফরীদি

(উল্লেখ্য হয়তো ফরীদির জন্মদিনে পোস্ট দেব বলে ব্লগে প্রবেশ করা নয়তো...)
হয়তো নয়তো নাটকের লিংক
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৩:২৮
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×