somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা ছাড়ার জন্য মরিয়া পুলিশ কর্মকর্তারা !!!

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা ছাড়ার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা নানা রকম সুবিধা ভোগ করেছেন, এই তালিকায় তারাও রয়েছেন। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র
জানায়, ইন্সপেক্টর থেকে পুলিশ সুপার পদমর্যাদার প্রায় আড়াইশ' কর্মকর্তা সম্প্রতি এসবি এবং জেলা পর্যায়ে বদলির জন্য লিখিত আবেদন করেন। এর মধ্যে কয়েকজনকে সম্প্রতি এসবি ও সিআইডিতে বদলিও করা হয়েছে। লিখিত আবেদন ছাড়াও অনেক কর্মকর্তা মৌখিক তদবির করছেন
ঊর্ধ্বতনদের কাছে। সরকারের শেষ সময়ে নিজেদের ইমেজ রক্ষা করে আগামীতে নতুন সরকারের সময় পুনরায় ভালো কোনো পোস্টিং নেয়ার জন্যই এ কৌশল বলে জানা গেছে। তবে এসব আবেদন গ্রহণ করা হলেও বর্তমানে কাউকে ঢাকার বাইরে পোস্টিং দেয়া হচ্ছে না বলে জানান পুলিশধ সদর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, কিছুদিন ধরে রাজধানীতে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের মারামারির পর ঢাকা ছাড়ার আবেদনের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এরপর সদর দপ্তরের জরুরি বৈঠকে ঢাকা থেকে বাইরের সব পোস্টিং বন্ধ করে দেয়া হয়। বর্তমানে ঢাকায় পুলিশের লোকবল দরকার প্রায় এক লাখ। সেখান আছে ২৮ হাজার। এরমধ্যে গত এক বছরে প্রায় ৪ হাজার পুলিশ সদস্য ঢাকার বাইরে পোস্টিং নিয়ে চলে যান। বর্তমান ডিএমপির জনবল সব মিলিয়ে ২৩ থেকে ২৪ হাজার। জনবল সঙ্কট ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ঢাকার বাইরে আপাতত সব ধরনের পোস্টিং দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত চার বছরে অনেক পুলিশ কর্মকর্তা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করেছেন। তাদের কেউ কেউ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে দেশব্যাপী সমালোচিত হয়েছেন। বিরোধীদলীয় চিপ হুইপ থেকে শুরু করে সাংবাদিক ও আইনজীবী পেটানো, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিনের নাতিকে রাতভর থানায় আটকে নির্যাতনসহ নানা ঘটনা ঘটিয়েও তারা বহাল তবিয়তে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ থানা ও জোনের দায়িত্বে রয়েছেন। সম্প্রতি এরা ঢাকা মহানগর ছেড়ে এসবি (পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ) ও জেলা পর্যায়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা তদবির শুরু করেন। এজন্য তারা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পুলিশ সদর দপ্তরে লিখিত আবেদনও করেন। পাশাপাশি মৌখিক তদবিরও করেন অনেকে। এছাড়া মিশনে যাওয়ার জন্যও অনেকে তদবির করছেন। মিশন শেষে দেশে ফিরে নতুন করে পোস্টিং নেয়াকেও অনেকে ভালো বলে মনে করছেন। তাদের ধারণা, মিশন শেষে দেশে ফিরে আসতে আসতে এই সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এরপর কিছুদিন পুলিশ সদর দপ্তরে চুপচাপ কাটিয়ে ভালো জায়গায় পোস্টিং নেয়ার চেষ্টা করা যাবে। আবার অনেকে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছেন। তাদের আগাম তথ্য দিয়ে সাহায্য করছেন কেউ কেউ। ঢাকা ছাড়ার জন্য লিখিত আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন, শিল্পাঞ্চল থানার ওসি ফারুক আহম্মেদ। তিনি এসবিতে যাওয়ার জন্য পুলিশ সদর দপ্তরে আবেদন করেছেন। এর আগে তিনি গে-ারিয়া ও তার অনেক আগে গুলশান থানার দায়িত্ব পালন করেন। তবে তিনি দাবি করেছেন সামনে তার প্রমোশন। এ সময় যে কোনো ঝামেলা এড়ানোর জন্য তিনি এসবিতে যাওয়ার আবেদন করেছেন।
Click This Link
চকবাজারের ওসি মোহাম্মদ আলী পিপিএম সিআইডিতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এজন্য তিনিও পুলিশ সদর দপ্তরে আবেদন করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চকবাজার ও লালবাগের মতো পয়সাওয়ালা থানায় দায়িত্ব নিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। সম্প্রতি জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও লালবাগ জোনের ডিসির সঙ্গে তার দ্বন্দ্বের কারণে তিনি সিআইডিতে চলে যাওয়ার আবেদন করেন বলে একটি সূত্র জানায়। তবে মোহাম্মদ আলী জানান, দীর্ঘদিন এক এলাকায় থাকার কারণে তিনি অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। লালবাগের ওসি আজিজুর রহমান জেলা পর্যায়ে যাওয়ার জন্য জোর তদবির করছেন। লালবাগ থানায় আসার পর তিনি শিশু নির্যাতনের অভিযোগে হাইকোর্টের রুলও খেয়েছিলেন। সম্প্রতি রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তিনি ঢাকা ছাড়াটাকে ভালো মনে করছেন। আরেকজন লালবাগ জোনের ডিসি হারুনর রশিদ। বিরোধী দলের হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুককে পেটানো থেকে শুরু করে অনেক কারণেই তিনি বিভিন্ন সময় আলোচলায় ছিলেন। সম্প্রতি তিনি লালবাগ জোন ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য তদবির শুরু করেন। নিউমার্কেট থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান। গত বিএনপির আমলে তিনি তৎকালীন ধানম-ি থানার সেকেন্ড অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার কিছুদিন পর তিনি নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান। সম্প্রতি এক বিচারপতিকে ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলন করার কারণে আদালতের রুল খেয়েছেন। এরআগ থেকেই তিনি ঢাকার বাইরে যাওয়ার জন্য জোর তদবির করছেন। এজন্য তিনি সরকারের প্রভাবশালী এক প্রতিমন্ত্রীর দারস্থ হয়েছেন। এছাড়াও কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি নাসির উদ্দিন সম্প্রতি এসবিতে পোস্টিং নেন। এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে, আইনপ্রতিমন্ত্রীর সুপারিশে তিনি ডিবি থেকে ওই থানায় আসেন। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়ার আশঙ্কায় তিনি লিখিত আবেদন করে এসবিতে চলে যান। আবেদনে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেন। এদিকে মিশনে যাওয়ার জন্য তদবির করছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অনেক কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে সিনিয়র এসি তারেক বিন রশিদ মিশনে যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। একই তালিকায় রয়েছেন আরো অনেক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ডিবিতে পোস্টিং নিয়ে বিভিন্ন কারণে অনেক কর্মকর্তা সমালোচনার মুখে পড়েন। তারা নিজেদের ইমেজ ফিরেয়ে আনার জন্য মিশনে গিয়ে বছর খানেক চোখের আড়াল হওয়াটাকে নিরাপদ মনে করছেন। আর এভাবে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুনরায় গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানে পোস্টিং নেয়াটা তাদের জন্য সহজ হবে বলে ধারণা করছেন। এছাড়া অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পুলিশ স্টাফ কলেজে পোস্টিং নেয়ার জন্যও তদবির করছেন ডিবি পুলিশের একজন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার। ডিবিতে পোস্টিং নেয়ার পর তার ব্যাপক পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট হয় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা। সম্প্রতি মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের গ্রেপ্তার করে নাশকতার পরিকল্পনা ভেস্তে দেন তিনি। এরপর তিনি জামায়াত শিবির কর্মীদের টার্গেটে পরিণত হন। তবে পুলিশ স্টাফ কলেজে যাওয়ার বিষয়ে ওই কর্মকর্তা জানান, পরিবারের সদস্যদের সময় দেয়ার জন্য তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
যায় যায় দিন
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×