somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিভিন্ন জেলার মানুষের গুণাবলী সমাচার

১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ ছোট একটা দেশ হলেও একেক অঞ্চলে একেক রকম ভাষা। আবার বিভিন্ন জেলার মানুষের মধ্যে আচার, আচরণ, মন মানসিকতার পার্থক্য দেখা যায়। বিশেষ ভাবে কিছু কিছু দোষ এবং গুণের প্রভাব থাকে প্রত্যেক জেলার মানুষের মধ্যে যেটা সকলের চোখে পড়ে। যদিও ঢালাওভাবে বলা ঠিক না যে কোন নির্দিষ্ট জেলার লোক বেশী কৌশলী বা বুদ্ধিমান। অবশ্যই ব্যতিক্রম আছে। তারপরেও সাধারণভাবে কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কিছু কিছু জেলার ক্ষেত্রে সহজেই আমাদের নজরে আসে। আমি আমার ধারণা এবং অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কিছু জেলার মানুষের এই ধরনের কিছু গুণাবলী তুলে ধরছি। ব্যতিক্রম ছাড়া সাধারণভাবে মনে করা হয় যে এই গুণ কোন নির্দিষ্ট জেলাতে প্রবল। যদিও আমার ধারণার সাথে হয়তো অনেকের ধারনারই মিল হবে না।

ঢাকাইয়া কুট্টি – এদের মধ্যে উদারতা বেশী। বড় মন থাকে এদের। বন্ধুদের আপ্যায়নে এরা এগিয়ে।
বৃহত্তর ঢাকা জেলা (মুন্সিগঞ্জ, দোহার, কেরানিগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ) – এই জেলার নারীরা বিভিন্ন ধরণের দেশী রান্নায় খুবই পারদর্শী। এতো এতো রকমের দেশী সুস্বাদু রান্না এরা রাঁধতে পারে চিন্তাও করা যায় না। একবার এই জেলার একজন পুরুষ এবং নারীর আলাপ শুনছিলাম। এতো রান্নার নাম বলল যে আমার কাছে মনে হল আমাদের জেলার লোক তাহলে রাধতেই জানে না।

কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা – এদের মধ্যে সগোত্রের প্রতি টান বেশী। আত্মীয় স্বজনের প্রতি এদের টান এবং ভালোবাসা বেশী। এছাড়া শিল্প সংস্কৃতি এবং শিক্ষায় এরা এগিয়ে। বাংলাদেশের অনেক বিখ্যাত শিল্পী এই জেলার।

চাঁদপুর জেলা – এরা খুব অতিথি পরায়ণ এবং এদের মধ্যে আদব কায়দা খুব বেশী।

বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা (নোয়াখালী, ফেনি, লক্ষ্মীপুর) – এই জেলার মানুষ খুব পরিশ্রমী এবং অধ্যবসায়ী। এই জেলার মানুষের ধৈর্য বেশী। জীবনের সফলতার জন্য ঝুকি নিতে পারে এই জেলার মানুষ। এই জেলার মানুষ খুব সূক্ষ্ম বুদ্ধি সম্পন্ন। আমাকে নোয়াখালীর একজন শিল্পপতি গর্ব করে বলেছিলেন যে নোয়াখালীর ছেলে মেয়ে নাকি ম্যাট্রিক পাস করে মায়ের পেট থেকে ভূমিষ্ঠ হয়।

বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা (মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা) – এই জেলার মানুষের ভাষা আমাদের চলিত ভাষার খুব কাছাকাছি এবং মিষ্টি। আগে কুষ্টিয়া নদিয়া জেলার অংশ ছিল। নদিয়া জেলার ভাষাকে ষ্ট্যাণ্ডার্ড ধরে আমাদের প্রমিত ভাষার রূপ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এই জেলার মানুষ সদালাপী। ওনাদের গালি শুনতেও খুব ভালো লাগে।

বৃহত্তর যশোর জেলা (যশোর, ঝিনাইদা, মাগুরা, নরাইল) – এই জেলার মানুষের ভাষাও বেশ মিষ্টি। এছাড়া এই জেলার মানুষের আক্কেল এবং বুদ্ধি ভালো। বেয়াক্কেল লোক এই জেলাতে কম আছে। অল্পতেই আসল ব্যাপারটা ধরে ফেলে। টিউবলাইট টাইপ না।

বৃহত্তর বরিশাল (বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, ভোলা) – এই জেলার মানুষ অতিথি পরায়ণ। মানুষকে খাওয়াতে ভালোবাসে। এরা সাহসী। পিছনে কথা না বলে সামনে বলে। ফলে অনেক সময় বিপদে পড়ে কর্মক্ষেত্রে। এই জেলার মানুষের ভাষা খুব মিষ্টি।

গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ জেলা – এই জেলাগুলির মানুষের মধ্যে প্যাচঘোচ কম। মুখে যা বলে সেটা এদের অন্তরের কথা।

বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা (ফরিদপুর, মাদারিপুর, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ি) – এই জেলার মানুষেরা বন্ধুবৎসল হয় সাধারণত। এই জেলার মানুষ প্রতিবাদীও হয়।

জামালপুর, ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা জেলা - এই জেলাগুলির মানুষ সহজ সরল হয়। প্যাচ কম থাকে পেটে।

বৃহত্তর দিনাজপুর এবং রংপুর জেলা (গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও) – এই জেলাগুলির মানুষ সহজ সরল হয়। অফিসে পলিটিক্স করে না।

বৃহত্তর পাবনা জেলা (সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর) – এই জেলার মানুষ অনুগত হয়। কর্মক্ষেত্রে এরা দলাদলি করে না এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ, নিষেধ মেনে চলার চেষ্টা করে।

বৃহত্তর রাজশাহী জেলা (রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ) – এই জেলার মানুষ শিল্প, সংস্কৃতি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে এগিয়ে।

বৃহত্তর সিলেট জেলা ( সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার) – এই জেলার মানুষ আত্মীয় স্বজনকে খুব টানে। বাংলাদেশের মধ্যে সবার আগে এরা বিদেশে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছে। উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকার কারণে এই জেলার মানুষ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে।

কিশোরগঞ্জ, নরসিংদি জেলা – এই জেলার মানুষের মধ্যে আদব কায়দা আছে।

বগুড়া এবং জয়পুরহাট জেলা – এই জেলার মানুষের মধ্যে প্রেম ভালোবাসা বেশী। অনেক আগে একটা কথা প্রচলিত ছিল যে (আমার বাবার কাছে শুনেছি) কোন অবিবাহিত সরকারী কর্মকর্তা বগুড়ায় বদলি হলে ফেরার সময় সে কোন না কোন বগুড়ার মেয়েকে বিয়ে করে তবেই অন্য কোথাও বদলি হত। বগুড়ার ছেলেরা বেশ প্রেমিক টাইপের। বিয়ের প্রতি বেশ ঝোঁক আছে ছেলেদের।

বৃহত্তর খুলনা জেলা (খুলনা, সাতক্ষিরা, বাগেরহাট জেলা) – এই জেলার মানুষ বেশ উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং আড্ডাবাজ। এই জেলার মানুষ বন্ধুবৎসলও হয়।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলা (চট্টগ্রাম, কক্সবাজার) – এই জেলার মানুষের মধ্যে পারিবারিক বন্ধন খুব শক্ত এবং এরা আত্মীয় স্বজন সহ মিলে মিশে থাকে। একে অন্যের বিপদে এগিয়ে আসে। এরা খুব সাহসী। এই জেলার মানুষ অতিথিপরায়ণ এবং পরোপকারী।

পার্বত্য জেলাগুলি ( বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি) – এই জেলার মানুষ নিজস্ব সংস্কৃতি এবং কৃষ্টির ব্যাপারে খুব সচেতন। নিজেদের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এরা ধরে রাখার চেষ্টা করে।

উপরে যা লিখেছি এটা সবই আমার উর্বর মস্তিষ্ক প্রসূত। সবার চিন্তা ধারার সাথে হয়তো মিলবে না। আরও কোন গুণাবলী ব্লগারদের কাছে থেকে জানা গেলে সেগুলিও যোগ করে দেয়া হবে। যদি অন্যরা আপত্তি না করে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:৪৯
৬১টি মন্তব্য ৬১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×