একটা ধর্ষণের খবর পত্রিকায় এলে পরপর আরো কয়েকটা ঘটনা ঘটে। কিছুদিন আগে রাজন হত্যার মতো ওরকম ঘটনা আগে তেমন আলোচনায় আসেনি। এরকম ঘটনা আলোচনায় আসলে মানুষ সচেতন হবে, এরকম অসহায়দের উপর মায়া জন্মাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই সমাজে খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটছে।
আমি চোখ বন্ধ করেই খুব স্পষ্ট ভাবে দেখতে পাচ্ছি এবং বুঝতে পারছি রাজন হত্যার কথা শুনে এবং পুরো ঘটনা জেনে দেশ এবং বিদেশের সব মানুষের মতো
রাকিব নামের গ্যারেজে কাজ করা ছেলেটার হত্যার সাথে জড়িত লোকগুলোও বলেছে ' শালা শুওরের বাচ্চারা আসলে মানুষ না'
হ্যাঁ তাইতো, শুওরের বাচ্চা আবার কিভাবে মানুষ হয়?
আমি কিংবা আমরা শুধু এরকম ঘটনারা কথা শুনি এবং অপরাধিকে গালি দেই কখনও বা বিচার চাই।আমাদের মাঝেই যে ওরকম শুওরের বাচ্চা আছে তা আমরা স্বীকার করেও করি না।
ছোটখাটো ঘটনাকে আমরা তেমন গুরুত্ব দেই না।
আজকে রাকিব যদি মারা না যেত তাহলে কিন্তু তাকে নিয়ে এতো আলোচনা হতো না।
সমাজ এমন একটা যায়গা যেখানে কেউ না মরলে সেটাকে গুরুত্ব দেয়া হয় না।
একজন রাস্তায় পাগলের মতো গাড়ী চালানোর সময় কেউ যদি তাকে সতর্ক করে দূর্ঘটনার ব্যাপারে তাহলে সে খুব তাচ্ছিল্যের সাথে সেটাকে উড়িয়ে দেয়।
যতক্ষণ পর্যন্ত না দূর্ঘটনা ঘটে ততক্ষণ তাদেরকে বুঝানো যায় না।
এখন কথা হলো জীবন তো আর দুইটা না যে একটা দিয়ে পরীক্ষা করে দেখবো যে মৃত্য কেমন।
কোন মেয়ে যদি বাসে কিংবা রাস্তায় হয়রানির শিকার হয় এবং সেটা পত্রিকায় আসে তাহলে আমরা মনে মনে বখাটে ছেলেদের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করি গালি দিয়ে। আর কিছুক্ষণ পরেই রাস্তায় বের হয়ে বন্ধুদের সাথে নিয়ে রাস্তায় চলা মেয়েদের দেখে গান ধরি 'চুঁমকি চলেছে একা পথে, সঙ্গী হলে দোষকি তাতে?'
আমরা কি সত্যি সত্যি তাদের সঙ্গী হই নাকি তাদের শত্রু সেই বখে যাওয়া ছেলে গুলো হয়ে যাই?
আমি এখানে হাজার লিখেও কিছুই পরিবর্তন আনতে পারবো না, তারপরেও লিখি। আমার তো সময়ের অভাব নাই।
তারপরেও কিন্তু আমাদের পরিবর্তন আসবে না, আমরা পত্রিকায় রাকিব আর রাজনদের মতো মানুষের হত্যার খবর পড়বো অথবা টিভিতে শুনবো আর তাদের হত্যাকারীকে গালি দেবো।
এবং টিভি কিংবা পত্রিকা থেকে চোখ সরিয়েই বাড়ির কাজের মেয়ে, কাজের ছেলে অথবা অন্য কোন দূর্বল লোকের উপর নির্যাতন করবো।
আর এভাবেই চলতে থাকবে আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:০৭