somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই গণঅভ্যুত্থান কিভাবে হয়েছে? কারা ছিল এটার পিছনে? সত্যটা জেনে নেওয়া জরুরী। ইতিহাস যেন বিকৃন না হয়।

৩১ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ করে একজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন বিপ্লবের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে। তাকে বানালেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মানে মূলত তিনিই দেশ চালাবেন। দেশ ভালো চললেই হলো, কে চালাক তাতে আমার মাথাব্যাথা নাই। এর মধ্যে আবার মাস্টারমাইন্ড কোথা থেকে এলো।

এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড যদি কাউকে বানাতেই হয় তাহলে তিনি হবেন শহীদ আবু সাইদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা যিনি ভিডিও করে ফেইসবুকে ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। মূলত আবু সাইদ ক্যামেরার সামনে শহীদ হয়েছেন বলেই আন্দোলনটা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল।

এরপর মাস্টারমাইন্ড যদি কাউকে বলতে হয় তাহলে দুইজনের নাম আসবে। শুনে অনেকে অবাক হলেও এই দুইজনের একজন তারেক জিয়া আরেকজন ডাক্তার শফিকুর রহমান। আপনি বিশ্বাস করেন বা নাইবা করেন প্রত্যেকটা বিএনপি এবং জামায়াত কর্মীদের উপর নির্দেশ ছিল কোনভাবেই ছাত্ররা যাতে একা না হয়। মানে পুলিশ যেহেতু অল্প ছাত্র দেখে গুলি করছে তাই কোথাও ছাত্ররা নামলে তাদের সাথে যেন মিশে যায়, দলীয় কোন শ্লোগান ভুলেও দেয়া যাবে না। ছাত্ররা মিছিল করে এগিয়ে যাবে, মাঝে থাকবে দলীয় কর্মী, পুলিশের সাথে এরা মোকাবেলা করবে।

আরেকজন মাস্টারমাইন্ড হলেন হেফাজতে ইসলামের মামুন সাহেব।
এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে ঢাবির ছাত্ররা এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু ঢাবিতে কি এত ছাত্র পড়ালেখা করে যত মানুষ তারা মিছিল মিটিং এ পেয়েছিল? নেতাদের নির্দেশ ছিল ঢাবির ছাত্ররা যাতে কোনভাবেই মনোবল না হারায়। তারা সমাবেশের ডাক দিলে যাতে কম হলেও ৫০ হাজার মানুষ জড়ো হয়।

লক্ষ্য করবেন, এই বিপ্লবে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল যাত্রাবাড়ী এলাকার লোকজনের। ১৮ তারিখে আর্মি নামানোর পরেও তাদেরকে সরাতে ৩ দিন লেগেছিল। পরে তারা যখন দেখে অন্য এলাকায় সবাই আন্দোলন বন্ধ করে দিয়েছে তখন তারা রাস্তা ছেড়েছে। কারা ছিল এই যাত্রাবাড়ীর আন্দোলনকারী জানেন? তাদের বড় অংশ ছিল মাদ্রাসা ছাত্র, বিএনপি ও জামায়াত কর্মী। মাদ্রাসা ছাত্রদেরকে বারবার বলা হয়েছে তারা যেন টুপি আর পাঞ্জাবি না পড়ে। তারা গেঞ্জি ও ট্রাউজার পরে যাবে। তারা তাই করেছে। টংগীতে তামিরুল মিল্লাতের ছাত্ররা টি শার্ট প্যান্ট পরে উত্তরায় আন্দোলন করেছে। টংগীর বিএনপির কর্মীরা উত্তরা থানায় আগুণ লাগিয়ে দিয়ে আন্দোলনকে একটা পর্যায়ে নিয়ে এসেছিল। বাড্ডা থানা ঘেরাও করেছিল বিএনপি জামাতের কর্মীরা।

আমার এলাকা মোহাম্মদপুর আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র ছিল। মোহাম্মদপুর থানা থেকে বসিলা ব্রীজ ৩ কিলো। মাঝে রয়েছে র‍্যাব অফিস। এত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখলে রাখা ছাত্রদের পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব ছিল না। বসিলা ব্রীজের ওপার থেকে কেরানীগঞ্জ থেকে বিএনপি জামাতের কর্মীরা এসে মূলত বসিলা ব্রীজ দখল করে রেখেছিল কারফিউ নামার পরেও ৩ দিন। বসিলা ঢাকা উদ্যানের ১০ হাজার ছাত্রের সাথে যোগ দিয়েছিল ৫০ হাজার বিএনপি জামাতের কর্মী। এসব হয়েছে ১৮ তারিখের আগে। তখনও আম জনতা মাঠে নামেনি। বিএনপি নেতারা কাড়ি কাড়ি টাকা ঢেলে পানি বিস্কুটের ব্যবস্থা করেছেন। তারা কেউই বিএনপির ব্যানারে যান নি। জামায়াতের লোকজন রাস্তায় 'অভিভাবক' পরিচিতি নিয়ে পানির বোতল হাতে দাড়িয়ে ছিল।

বিএনপির আদাবরের এক নেতা যেখানেই আন্দোলন হতো সেখানেই পিকাপে ভরে লাঠি নিয়ে যেতেন, ছাত্রদের মাঝে বিলি করতেন। কারণ হাতে লাঠি থাকলে কনফিডেন্স বাড়ে। মিরপুর ১০ এ কী হয়েছে তা তো জানেনই। শুধু ঢাকা সিটিতেই কম হলেও ২ লাখ মাদ্রাসা ছাত্র টি শার্ট প্যান্ট পরে লড়াই করেছিল। এদের মধ্যে সব তরিকার/মতের ছাত্র ছিল। কে জামায়াত কে চরমোনাই কেউ ভাবে নাই।
এক বিএনপি নেতা পাইকারি বাজারে গিয়ে কয়েক হাজার টুথপেষ্ট কিনেছিলেন শুধুমাত্র মিছিলে ফ্রী দেয়ার জন্য। টুথপেষ্ট চোখের আশেপাশে লাগালে টিয়ার গ্যাসের জ্বালা কম হয়।

অনেক আবাসিক মাদ্রাসা রান্না করা খাবার আর পানি বিতরণ করেছিল যাতে দুপুরে খাওয়ার জন্যেও আন্দোলনকারীরা যাতে রাস্তা না ছাড়ে। এই আন্দোলনে পুলিশেরও অনেক সহযোগিতা ছিল। সেটা সুযোগ পেলে আরেকদিন জানাব।
এছাড়া আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে যা পাবলিক প্লেসে বলতে পারছি না।

এসব ছাড়া আপনি যদি এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড কাউকে বানাতে চান তাহলে আমি Pinaki Bhattacharya - পিনাকী ভট্টাচার্য ভাইয়ের নাম বলব। উনি যেভাবে বছরের পর বছর ধরে আমাদেরকে গাইড করেছেন ও আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উৎসাহ দিয়েছেন তা না পেলে কোন মাস্টার মাইন্ডের কথায় মানুষ রাস্তায় নামত না।

আমার ধারনা এই বিপ্লবের পেছনে বিএনপি জামায়াত ১০০ কোটি টাকা খরচ করেছে। শুধু ৫ লাখ টাকা আমার হাত দিয়েই খরচ হয়েছিল শুধু আহতদের চিকিৎসার ব্যায়ে! টাকাটা যদিও আমার না।আন্দোলনে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ভূমিকা অসাধারণ ছিল। হাসিনা ৫ আগস্টের পরে এমনিতেই টিকে থাকতে পারত না কারণ রেমিট্যান্স বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।
যাহোক, হুট করে কাউকে মাস্টারমাইন্ড বানানোর পক্ষে আমি নই।
উপরের অংশটুকু শুধুমাত্র ১৮ জুলাইয়ের আগের ঘটনা উল্লেখ করেছি। এরপরে অনেক ঘটনা আছে।



Syful Islam।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:০৯
১২টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×