somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে তাড়িয়ে আমরা কি পেলাম আর কি পেলাম না?

২১ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিএনপির একজন নেতাকে ক্রসফায়ারে দেয়া হবে। এই ভয় দেখিয়ে তার পর্দানশীন স্ত্রীকে রোজা থাকা অবস্থায় দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে এক পশু। সে ছিল র‍্যাবের জাঁদরেল অফিসার। নাম আলেপ। ৫ আগস্টের আগে এই আলেপদের কেশাগ্র স্পর্শ করার ক্ষমতা ছিল না কারো।

বিএনপির সেই নেতা হুজুর ছিল না। তার স্ত্রীও মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছিল না। দুইজনই ছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিত। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরও এদেশের নেড়িবাদিরা কোন বাণী প্রসব করেনি, মানববন্ধন করেনি, শাহবাগে দাঁড়ায়নি, পদযাত্রা করেনি। কারণ মেয়েটার স্বামী বিএনপি করে। মেয়েটা পর্দা করে। রোজা রাখে।

কিন্তু মেয়েটা যদি পেট দেখিয়ে চলত, বিভিন্ন লোকের বেডে সার্ভিস দিত, মেয়েটার স্বামী যদি বাম রাজনীতি করত তাইলে কি হইত? হ্যাঁ তাইলে অন্তত একটা বাণী তারা প্রসব করত। কিন্তু আলেপ যেহেতু বঙ্গবন্ধুর নামে, মুক্তিযুদ্ধের নামে, রবীন্দ্রনাথের নামে তাদের পেয়ারের শেখাসিনার সাম্রাজ্য রক্ষার কারিগর তাই বেশি কিছু বলত না।

জামায়াতের একজন ডাক্তারকে গুলি করে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করেছিল। মনে আছে? ঝিনাইদহে শিবিরের একটা ছেলে নাম সোহান। তাকে হত্যা করেছে। চোখ তুলে নিয়েছে। হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কেউ আওয়াজ তোলেনি।
ছাত্রদলের জনির বুকে সতেরটা বুলেটের ক্ষত যে করেছিল তার বিরুদ্ধে কয়জন সুশীল বক্তব্য দিয়েছিল?

গুম করে লাশের পেট কেটে ইট ঢুকিয়ে নদীতে ফেলে দিত। কারা দিত জানেন? র‍্যাব। র‍্যাব কারা? এদেশেরই কিছু পুলিশ আর্মি। এই খু*নীগুলো এখনও জীবিত। আমাদের টাকায় এখনও এদেরকে পালা হচ্ছে। মানুষ হ*ত্যার বিনিময়ে অর্জিত এদের সম্পদ এখনও অক্ষত।

৫ আগস্ট ছিল এই খু*নীদের পরাজয়ের দিন। তাদের দেবতা মুজিব, মুক্তিযুদ্ধ এবং রবীন্দ্রনাথের পরাজয়ের দিন। এদের ভয়ে আমরা যারা পালিয়ে বেড়াতাম তাদের মুক্তির দিন। কিন্তু জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে কি সত্যিকার অর্থে আমাদের মুক্তি আসছে? সকল খু-নী কি গ্রেফতার হইছে? তাদের কি বিচার হইছে?

বাংলাদেশের ফিনান্সিয়াল সেক্টরের ৫০% মৌলবাদীদের দখলে এমন একটা ভুয়া থিসিস দিয়া ডানপন্থীদের সকল প্রতিষ্ঠান কব্জা করে লুটপাট করা হইছে ৫ আগস্টের আগে। এই লুটপাটের সহযোগীরা গ্রেফতার হইছে? এস আলম সিন্ডিকেট কি ভাঙ্গা হইছে?
লুটপাট কইরা বড় হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো চালানোর সক্ষমতা কি রাষ্ট্রের নাই? সৎ যোগ্য প্রশাসক কি দেয়া যেত না এসব প্রতিষ্ঠানে? যে ব্যাংকগুলো থেকে বিনিয়োগ নেয়া হইছে পরিচালনার দায়িত্ব কি তারা নিতে পারে না?

এক এস আলমের হাতে নয়টা ব্যাংক তুলে দেয়া হইছে। সাহায্য করেছে ডিজিফাই। ব্যাংকের ডিরেক্টরদের বাসা থেকে তুলে এনেছিল এরা। ঘাড়ত্যারাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হইছিল দুদককে। এসব প্রতিষ্ঠানের জড়িত আওয়ামী লোকজন কি গ্রেফতার হইছে?
ব্যাংকের টাকা লুট করেছে রাষ্ট্র। সেই টাকা তুলে দেয়ার দায়িত্বও তাই রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র কি সেই দায়িত্ব নিচ্ছে? নাকি অপ্রয়োজনীয় খরচ কন্টিনিউ করা ছাড়া তার আর কোন দায়িত্ব নাই। সরকারের কি উচিত নয় ব্যাংক থেকে লুট হওয়া টাকার সমপরিমান সম্পদ ব্যাংকগুলোকে দিয়ে তাদেরকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া? তা তো করেই নাই উল্টা পাঁচ ব্যাংক মার্জ করে লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীকে পথে বসাই দিছে। অন্যদিকে নীতি সহায়তার নামে হাজার হাজার ঋণখেলাপীদের আরও লুটপাটের সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার।

৫ আগস্টের পর আমরা বলেছিলাম, ৫০০ ১০০০ টাকার নোট বাতিল করতে। তখন পর্যন্ত দেশের সব কালো টাকার মালিক ছিল আওয়ামীরা। কিন্তু ইন্টারিম তা করেনি। করলে আওয়ামী কালো টাকার দৌরাত্ম দেখতে হত না। হাজার হাজার আওয়ামী লুটেরা পালিয়ে যেতে পারত না।

এই অথর্ব ইন্টারিম ৫ আগস্টের গুরুত্ব বুঝলে ৫ আগস্টের আগের বাংলাদেশ আর পরের বাংলাদেশ এত পার্থক্যহীন হত না। ৫ আগস্টের পরও এত চাঁদাবাজি হইত না। ঘুস বাণিজ্য চলত না।

৫ আগস্টের পর আওয়ামী মিডিয়া, সুশীল এবং কালচারাল ফ্রন্ট আরও শক্তিশালী হইছে। এই খু*নীর সহযোগীদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলার জন্য একটা প্রজ্ঞাপন জারি কইরাই দায় সারছে এরা। প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়নে কোনও পদক্ষেপ নিছে? এখনও বিটিভি, বেতার, শিল্পকলা, বাংলা একাডেমিতে ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মায় ভরপুর।

১৪০০ শিশু কিশোরের রক্তের উপর দাঁড়ায়া যারা ৫ আগস্টের গুরুত্ব বুঝতে পারে না। যারা ক্রেডিট নিয়া নির্লজ্জ কাদা ছোঁড়াছুড়ি করে, যারা ত্রিশ হাজার আহতের সাথে দুর্ব্যবহার করে তারা কি আলেপের চেয়ে কম শয়তান, কম ফন্দিবাজ, কম সুবিধাখোর?
পনের বছর মুক্তিযুদ্ধের নামে আমাদের উপর নির্যাতন করা হইছে। সেই ঘা এখনও শুকায়নি। অথচ এখনই আবার শুরু হইছে মুক্তিযুদ্ধ দেবতা বন্দনা। যাতে আবারও মুক্তিযুদ্ধের নামে এই জাতিকে খু*ন, গু*ম, করা যায়। লু*টত*রাজ করা যায়।

দিপ্র হাসান



সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৫
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×